ঢাকা ০৩:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দুদক উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের অবৈধ সম্পদের পাহাড়  আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ঘনিষ্ঠ দু’জনকে অতিরিক্ত এমডি পদে নিয়োগের আয়োজন ১১৭০ টাকার নামজারির খরচ, ভূমি কর্মকর্তা নেন ৮-১৫ হাজার! পটুয়াখালী জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার হাসানুজ্জামানের দুর্নীতির স্বর্গ রাজ্যে যেন আলাউদ্দিনের চেরাগ। এস আলমের নির্দেশে টাকা সরানো হতো সাদা স্লিপে তাসাউফ রিয়েল এস্টেট লিঃ এর চেয়ারম্যান ভূমি দস্যু শরীফ বিন আকবর খান সাদুল্লাপুরের এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম ‘জিনের বাদশা’ আবু বকর অবৈধ সম্পদেও বাদশা জাজিরায় বালুর নিচে পুঁতে রাখা অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের অসাংবিধানিক নির্বাচন বাতিলের দাবি মিঠাপুকুরে শিক্ষকদের মানববন্ধন ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান
বগুড়া ভিএম স্কুলের

আলোচিত সমালোচিত প্রধান শিক্ষিকাকে ঢাকায় ওএসডি করে বদলী

এবার বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনকে বদলী করা হয়েছে। তাকে ঢাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। রোববার (৯ এপ্রিল) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁর ওই বদলীর কথা জানানো হয়েছে। বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি এবং বগুড়া জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এক শিক্ষার্থীর মাকে নারী বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করানোর আলোচিত সেই ঘটনায় গত ২৩ মার্চ বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রুবইয়া ইয়াসমিনের বিচাররিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়াসহ তাকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলী করা হয়।

বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিজেরাই পালা করে তাদের শ্রেণি কক্ষ ঝাড়ু দেয়। গত ২০ মার্চ অষ্টম শ্রেণির পাঁচজন শিক্ষার্থীর ঝাড়ু দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিনের কন্যা ঝাড়ু দিতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে বিচারকের মেয়ের কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওইদিন রাতে বিচারকের মেয়ে স্কুলের একটি ফেসবুক গ্রুপে ঝাড়ু দেওয়ার বিষয় নিয়ে আপত্তিকর কিছু কথা লিখে পোস্ট দেয়। তার পর সেই পোস্টের নিচে তার সহপাঠীসহ অন্যরা জারাকে তীব্রভাবে আক্রমণ করে পাল্টা লিখতে শুরু করে।

পরবর্তীতে সেই নারী বিচারক ২১ মার্চ মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে ফেসবুক গ্রুপে তাকে এবং তার মেয়েকে উদ্দেশ্য করে অসম্মানজক কথা লেখায় শিক্ষকদের মাধ্যমে কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ডেকে নেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ফেসবুক গ্রুপে বিচারক এবং তার মেয়েকে নিয়ে অসম্মানজক কথা লেখার কারণে অভিভাবকদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। বিচারক এবং তার মেয়েকে নিয়ে ফেসবুক গ্রুপে অসম্মানজনক লেখা ঠিক হয়নি উল্লেখ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবককে বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন।

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা ওই বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিদ্যালয়ের সামনে সড়ক দুই দফা অবরোধ করেন। পরে রাতে বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম রাত ৯টার দিকে জেলা জজের সঙ্গে কথা বলে ওই বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যায়। পরে ওই ঘটনা তদন্তের জন্য বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা শিক্ষা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াছমিনকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ওই ঘটনার দুই দিনের মাথায় ২৩ মার্চ বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এরপর ২৭ মার্চ তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত শুরু করে।

তবে তদন্ত শুরু করার একদিন পরই ২৮ মার্চ রাতে বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন গণমাধ্যমে এক বিবৃতি দেন। ৩ পৃষ্ঠার সেই বিবৃতিতে কাউকে পা ধরতে বাধ্য করেননি দাবি করে উল্টো তিনি তার মেয়ের দুই সহপাঠীর বিরুদ্ধে র‌্যাগিং এবং বুলিংয়ের অভিযোগ উত্থাপন করেন। ওই বিবৃতি প্রচারের কয়েকদিন পর ২১ মার্চ বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করানো সংক্রান্ত ঘটনার বর্ণনা সম্বলিত একটি অডিও রেডর্ক ফাঁস হয়।

বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনের বদলী সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে বলে শুনেছি। তবে অফিসিয়ালি কোন চিঠি হাতে পাইনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দুদক উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের অবৈধ সম্পদের পাহাড় 

বগুড়া ভিএম স্কুলের

আলোচিত সমালোচিত প্রধান শিক্ষিকাকে ঢাকায় ওএসডি করে বদলী

আপডেট সময় ১২:০৩:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩

এবার বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনকে বদলী করা হয়েছে। তাকে ঢাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। রোববার (৯ এপ্রিল) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁর ওই বদলীর কথা জানানো হয়েছে। বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি এবং বগুড়া জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এক শিক্ষার্থীর মাকে নারী বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করানোর আলোচিত সেই ঘটনায় গত ২৩ মার্চ বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রুবইয়া ইয়াসমিনের বিচাররিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়াসহ তাকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলী করা হয়।

বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিজেরাই পালা করে তাদের শ্রেণি কক্ষ ঝাড়ু দেয়। গত ২০ মার্চ অষ্টম শ্রেণির পাঁচজন শিক্ষার্থীর ঝাড়ু দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিনের কন্যা ঝাড়ু দিতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে বিচারকের মেয়ের কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওইদিন রাতে বিচারকের মেয়ে স্কুলের একটি ফেসবুক গ্রুপে ঝাড়ু দেওয়ার বিষয় নিয়ে আপত্তিকর কিছু কথা লিখে পোস্ট দেয়। তার পর সেই পোস্টের নিচে তার সহপাঠীসহ অন্যরা জারাকে তীব্রভাবে আক্রমণ করে পাল্টা লিখতে শুরু করে।

পরবর্তীতে সেই নারী বিচারক ২১ মার্চ মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে ফেসবুক গ্রুপে তাকে এবং তার মেয়েকে উদ্দেশ্য করে অসম্মানজক কথা লেখায় শিক্ষকদের মাধ্যমে কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ডেকে নেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ফেসবুক গ্রুপে বিচারক এবং তার মেয়েকে নিয়ে অসম্মানজক কথা লেখার কারণে অভিভাবকদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। বিচারক এবং তার মেয়েকে নিয়ে ফেসবুক গ্রুপে অসম্মানজনক লেখা ঠিক হয়নি উল্লেখ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবককে বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন।

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা ওই বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিদ্যালয়ের সামনে সড়ক দুই দফা অবরোধ করেন। পরে রাতে বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম রাত ৯টার দিকে জেলা জজের সঙ্গে কথা বলে ওই বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যায়। পরে ওই ঘটনা তদন্তের জন্য বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা শিক্ষা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াছমিনকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ওই ঘটনার দুই দিনের মাথায় ২৩ মার্চ বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এরপর ২৭ মার্চ তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত শুরু করে।

তবে তদন্ত শুরু করার একদিন পরই ২৮ মার্চ রাতে বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন গণমাধ্যমে এক বিবৃতি দেন। ৩ পৃষ্ঠার সেই বিবৃতিতে কাউকে পা ধরতে বাধ্য করেননি দাবি করে উল্টো তিনি তার মেয়ের দুই সহপাঠীর বিরুদ্ধে র‌্যাগিং এবং বুলিংয়ের অভিযোগ উত্থাপন করেন। ওই বিবৃতি প্রচারের কয়েকদিন পর ২১ মার্চ বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করানো সংক্রান্ত ঘটনার বর্ণনা সম্বলিত একটি অডিও রেডর্ক ফাঁস হয়।

বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনের বদলী সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে বলে শুনেছি। তবে অফিসিয়ালি কোন চিঠি হাতে পাইনি।