ঢাকা ০৮:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

জামালপুরে ভূমি উপ-সহকারির ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি

জামালপুরের ইসলামপুরে ভূমিহীন মোকাদ্দমার অনুমোদন বাতিল করার জন্য ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবীসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ভূমি উপ-সহকারি মমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সে উপজেলার চরপুটিমারী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভূমি উপ-সহকারি হিসেবে কর্মরত আছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন একই ইউনিয়নের ডি বালিয়ামারী গ্রামের মৃত মজিবর খলিফার ছেলে নান্ডা খলিফা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চরপুটিমারী মৌজায় সিএস ১২৬১ দাগে ১৯৪৭ সালে কবুলিয়ত মূলে ও ১৯৮৯ সালে আদালতের রায় এবং ডিগ্রী মূলে ১.১১ একর ভূমি প্রাপ্ত হইয়া নান্ডা খলিফার মাতামহ যথাক্রমে ভোগদখলবান আছে। বেশ কিছুদিন আগে খাজনাদি পরিশোধ করতে ভূমি অফিসে গেলে জানতে পারেন তাদের মাতামহের জমি ৩টি মোকাদ্দমায় ভিন্ন ভিন্ন নামে ভূমিহীন বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। তাই সে জেলা প্রশাসকের বরাবর বন্দোবস্ত বাতিলের আবেদন করলে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারি কমিশনার(ভূমি) উপর দায়িত্ব অর্পণ করেন। সহকারি কমিশনার(ভূমি) অফিসে খোজ নিলে তিনারা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। আর সে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রতিবেদনের বিষয়টির খোজ নিলে উপ-সহকারি মমিনুল ইসলাম ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। দাবি পূর্ণ না হলে প্রতিবেদন তার বিপক্ষে দিবে বলে হুমকি দেন মমিনুল ইসলাম।

এছাড়াও অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা জানতে সরেজমিনে গেলে, চরপুটিমারী ইউনিয়নের টাবুরচর গ্রামের হাজী আব্দুল মোতালেব বলেন, অতিরিক্ত টাকা ছাড়া এ অফিসে কোন কাজ হয়না। সকাল ১০টা তো দূরের কথা দুপুর ১টা ছাড়া অফিসে আসেনা।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সে ১টার সময় আসছে। উৎকোচ বিহীন ভূমিহীন বন্দোবস্ত পেতে ছাড় পায়নি অসহায় মুচি পরিবার এমন বিভৎস বর্ণনা তুলে ধরে একই ইউনিয়নের খলিফা পাড়া গ্রামের ছাবুর ছেলে শেখ ফরিদ বলেন, আমার একটা বন্দোবস্ত বাতিলের জন্য ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন নায়েব সাহেব। আমার কেন ?

মুচির নিকট থেকেও সে টাকা নিছে। অসহায় একজন মুচিও তার নিকট কোন ছাড় পায়নাই। আরও তিনজনের ভূমি বন্দোবস্ত করে দিবে ৯০ হাজার টাকা নিছে সে।

সাজালেরচর নতুনবাড়ি আবুল হোসেনের ছেলে ইব্রাহীম,আকন্দপাড়া শাহালীসহ একাধিক লোকজন মমিনুল ইসলামের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ করে বলেন, এ অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। ৩শ টাকার দাখিলা কাটলে ১ হাজার টাকা দিতে হয়। আমরা অভিযোগ করেই কি করবো। উপরের লোকজন তো কোন ব্যবস্থা নেয় না।

ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি মমিনুল ইসলামের সাথে কথা হলে এ বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। স

হকারি কমিশনার (ভূমি) মো: আশরাফ আলীর সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন,আমরা উনার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ পেয়েছি, মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) শুনানীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. তানভীর হাসান রুমান জানান, উনার বিরুদ্ধে এখনও বিভাগীয় মামলার বিচার চলমান আছে। আমি এই উপ-সহকারির বদলির জন্য উর্দ্ধতনদের অবহিত করেছিলাম। কেন যে হচ্ছেনা ? এ অভিযোগটি আমি পেয়েছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহকারি কমিশনার (ভূমি)কে বলেছি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সুদখোর চেয়ারম্যান সাইফুলের ঘরে আলাদিনের চেরাগ!

জামালপুরে ভূমি উপ-সহকারির ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি

আপডেট সময় ১২:৪৪:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

জামালপুরের ইসলামপুরে ভূমিহীন মোকাদ্দমার অনুমোদন বাতিল করার জন্য ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবীসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ভূমি উপ-সহকারি মমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সে উপজেলার চরপুটিমারী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভূমি উপ-সহকারি হিসেবে কর্মরত আছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন একই ইউনিয়নের ডি বালিয়ামারী গ্রামের মৃত মজিবর খলিফার ছেলে নান্ডা খলিফা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চরপুটিমারী মৌজায় সিএস ১২৬১ দাগে ১৯৪৭ সালে কবুলিয়ত মূলে ও ১৯৮৯ সালে আদালতের রায় এবং ডিগ্রী মূলে ১.১১ একর ভূমি প্রাপ্ত হইয়া নান্ডা খলিফার মাতামহ যথাক্রমে ভোগদখলবান আছে। বেশ কিছুদিন আগে খাজনাদি পরিশোধ করতে ভূমি অফিসে গেলে জানতে পারেন তাদের মাতামহের জমি ৩টি মোকাদ্দমায় ভিন্ন ভিন্ন নামে ভূমিহীন বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। তাই সে জেলা প্রশাসকের বরাবর বন্দোবস্ত বাতিলের আবেদন করলে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারি কমিশনার(ভূমি) উপর দায়িত্ব অর্পণ করেন। সহকারি কমিশনার(ভূমি) অফিসে খোজ নিলে তিনারা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। আর সে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রতিবেদনের বিষয়টির খোজ নিলে উপ-সহকারি মমিনুল ইসলাম ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। দাবি পূর্ণ না হলে প্রতিবেদন তার বিপক্ষে দিবে বলে হুমকি দেন মমিনুল ইসলাম।

এছাড়াও অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা জানতে সরেজমিনে গেলে, চরপুটিমারী ইউনিয়নের টাবুরচর গ্রামের হাজী আব্দুল মোতালেব বলেন, অতিরিক্ত টাকা ছাড়া এ অফিসে কোন কাজ হয়না। সকাল ১০টা তো দূরের কথা দুপুর ১টা ছাড়া অফিসে আসেনা।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সে ১টার সময় আসছে। উৎকোচ বিহীন ভূমিহীন বন্দোবস্ত পেতে ছাড় পায়নি অসহায় মুচি পরিবার এমন বিভৎস বর্ণনা তুলে ধরে একই ইউনিয়নের খলিফা পাড়া গ্রামের ছাবুর ছেলে শেখ ফরিদ বলেন, আমার একটা বন্দোবস্ত বাতিলের জন্য ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন নায়েব সাহেব। আমার কেন ?

মুচির নিকট থেকেও সে টাকা নিছে। অসহায় একজন মুচিও তার নিকট কোন ছাড় পায়নাই। আরও তিনজনের ভূমি বন্দোবস্ত করে দিবে ৯০ হাজার টাকা নিছে সে।

সাজালেরচর নতুনবাড়ি আবুল হোসেনের ছেলে ইব্রাহীম,আকন্দপাড়া শাহালীসহ একাধিক লোকজন মমিনুল ইসলামের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ করে বলেন, এ অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। ৩শ টাকার দাখিলা কাটলে ১ হাজার টাকা দিতে হয়। আমরা অভিযোগ করেই কি করবো। উপরের লোকজন তো কোন ব্যবস্থা নেয় না।

ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি মমিনুল ইসলামের সাথে কথা হলে এ বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। স

হকারি কমিশনার (ভূমি) মো: আশরাফ আলীর সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন,আমরা উনার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ পেয়েছি, মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) শুনানীর মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. তানভীর হাসান রুমান জানান, উনার বিরুদ্ধে এখনও বিভাগীয় মামলার বিচার চলমান আছে। আমি এই উপ-সহকারির বদলির জন্য উর্দ্ধতনদের অবহিত করেছিলাম। কেন যে হচ্ছেনা ? এ অভিযোগটি আমি পেয়েছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহকারি কমিশনার (ভূমি)কে বলেছি।