ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বটতলা হাটে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। ধামরাইয়ে ১৯৬ মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অসামাজিক কার্যকলাপে প্রতিবাদ করায় ভারাটিয়া কতৃক বাড়িওয়ালা সন্ত্রাসী হামলার শিকার। জাসদ একত্রিত করতে মাঠে আসছেন জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খানের ভাতিজি ব্যারিস্টার ফারাহ খান কুমিল্লায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবে সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করবে বিজিবি- কর্নেল রেজাউল কবির ৭৪ বোতল‌ চোলাইমদ সহ মিঠাপুকুর থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার এক চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বড় ধাক্কা খেল ইংল্যান্ড লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ-ইসরাইল সংঘর্ষ অব্যাহত পরিচালকদের সঙ্গে প্রেম করে কাজ পান স্বস্তিকা

মেয়ের জন্মের দুই দিন আগে শহীদ হন ইসহাক

চারিদিকে যুদ্ধ চলছে। এর মধ্যেই জন্ম হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মো. ইসহাক আলীর প্রথম সন্তানের। মেয়ের নাম রাখা হয় আছিয়া। পরে কেতাবি নাম পায় মোছা. ইসমত আরা বেগম। ১৯৭১ সালের ১ এপ্রিলের ঘটনা এটি। এই আনন্দঘন মুহূর্ত দেখে যেতে পারেননি মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলী। মেয়ের জন্মের ঠিক দুই দিন আগে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন এই বীরযোদ্ধা।

kalerkantho

শহীদ বাবার সম্পর্কে জানতে চাইলে সম্প্রতি ইসমত আরা এসব তথ্য জানান। বড় হয়ে মা ও স্বজনদের কাছ থেকে শুনেছেন তিনি এই ঘটনা।

বাবার সম্পর্কে বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন ইসমত আরা। নিজেকে সামলে নিয়ে মায়ের কাছ থেকে শোনা ঘটনা উল্লেখ করে আবার বলেন, যুদ্ধে যাওয়ার সময় বাবা তাঁর মাকে বলেছিলেন, ফিরে এসে তাঁকে (ইসমত) নিয়ে ছবি তুলবেন। কিন্তু তা আর হয়নি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলী ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার প্রথম শহীদ। উপজেলার বীরহলি গ্রামের এই বীরযোদ্ধার একমাত্র মেয়ে ইসমত আরা।

বাবার সহযোদ্ধাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে ইসমত আরা জানান, যুদ্ধে যাওয়ার আগে পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে লন্ড্রির দোকান চালাতেন তাঁর বাবা। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ দিনাজপুরে তৎকালীন ইপিআর (ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) ক্যাম্প আক্রমণ করতে গিয়ে বাবাসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। স্থানীয়রা তাঁর মরদেহ নিয়ে এসে পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও পাকা সড়কের পশ্চিমে পীরগঞ্জের পীরডাঙ্গী কবরস্থানে দাফন করেন। পরে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর সমাধি সংরক্ষণ করা হয়।

পরিবারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ইসমত আরা জানান, অভাবের সংসারে উচ্চ মাধ্যমিকের পর আর পড়তে পারেননি তিনি। মায়ের সঙ্গে একটি ছাপরাঘরে তিনি থাকেন। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী শহরে ছোটখাটো কাজ করেন। বাবার মুক্তিযোদ্ধা ভাতাই এখন তাঁদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বটতলা হাটে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।

মেয়ের জন্মের দুই দিন আগে শহীদ হন ইসহাক

আপডেট সময় ০৯:৪৮:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

চারিদিকে যুদ্ধ চলছে। এর মধ্যেই জন্ম হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মো. ইসহাক আলীর প্রথম সন্তানের। মেয়ের নাম রাখা হয় আছিয়া। পরে কেতাবি নাম পায় মোছা. ইসমত আরা বেগম। ১৯৭১ সালের ১ এপ্রিলের ঘটনা এটি। এই আনন্দঘন মুহূর্ত দেখে যেতে পারেননি মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলী। মেয়ের জন্মের ঠিক দুই দিন আগে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন এই বীরযোদ্ধা।

kalerkantho

শহীদ বাবার সম্পর্কে জানতে চাইলে সম্প্রতি ইসমত আরা এসব তথ্য জানান। বড় হয়ে মা ও স্বজনদের কাছ থেকে শুনেছেন তিনি এই ঘটনা।

বাবার সম্পর্কে বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন ইসমত আরা। নিজেকে সামলে নিয়ে মায়ের কাছ থেকে শোনা ঘটনা উল্লেখ করে আবার বলেন, যুদ্ধে যাওয়ার সময় বাবা তাঁর মাকে বলেছিলেন, ফিরে এসে তাঁকে (ইসমত) নিয়ে ছবি তুলবেন। কিন্তু তা আর হয়নি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলী ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার প্রথম শহীদ। উপজেলার বীরহলি গ্রামের এই বীরযোদ্ধার একমাত্র মেয়ে ইসমত আরা।

বাবার সহযোদ্ধাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে ইসমত আরা জানান, যুদ্ধে যাওয়ার আগে পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে লন্ড্রির দোকান চালাতেন তাঁর বাবা। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ দিনাজপুরে তৎকালীন ইপিআর (ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) ক্যাম্প আক্রমণ করতে গিয়ে বাবাসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। স্থানীয়রা তাঁর মরদেহ নিয়ে এসে পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও পাকা সড়কের পশ্চিমে পীরগঞ্জের পীরডাঙ্গী কবরস্থানে দাফন করেন। পরে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর সমাধি সংরক্ষণ করা হয়।

পরিবারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ইসমত আরা জানান, অভাবের সংসারে উচ্চ মাধ্যমিকের পর আর পড়তে পারেননি তিনি। মায়ের সঙ্গে একটি ছাপরাঘরে তিনি থাকেন। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী শহরে ছোটখাটো কাজ করেন। বাবার মুক্তিযোদ্ধা ভাতাই এখন তাঁদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।