চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় সাড়ে নয়শো মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পৌনে চার লাখ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, জাপান, ফ্রান্স, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ কোটি ৩৭ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৬ লাখ ২৮ হাজার।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯৩৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দুইশো। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৬ লাখ ২৮ হাজার ৮৪৫ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮৬৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২ লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ১২২ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২১ হাজার ৪৬০ জন এবং মারা গেছেন ১৪৪ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৪৮ হাজার ৪৮২ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় এই দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৬২৯ জন এবং মারা গেছেন ১৯৬ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১০ কোটি ২ লাখ ৭৯ হাজার ৬১২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১১ লাখ ৩ হাজার ৩৫৩ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪ হাজার ৭৭২ জন এবং মারা গেছেন ৮৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৪২ হাজার ৯৪৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৮ হাজার ৪২৭ জন মারা গেছেন। একইসময়ে ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৬৪৪ জন এবং মারা গেছেন ৫১ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪ হাজার ৪৬০ জন এবং মারা গেছেন ৫৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ৩৫১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৯১ হাজার ৫৬৮ জনের। একইসময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৮৭৩ জন এবং মারা গেছেন ৪৫ জন।
তাইওয়ানে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ১৭৯ জন এবং মারা গেছেন ৩৮ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮১ লাখ ৯৩ হাজার ৭২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ২৯ জনের। একইসময়ে অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮০৭ জন এবং মারা গেছেন ২৭ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫৯ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৭ হাজার ৯৩১ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ১৩০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২২৩ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।