ঢাকা ০৯:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

নতুন কার্ডধারীদের কাছে সিংড়ায় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় জনগণের হাতে ২জন আটক

নাটোরের সিংড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় নতুন কার্ডধারী ৭০০জন ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগে ৯২ হাজার নগদ টাকা’সহ দুই জনকে আটক করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। কর্মসূচিতে ব্যাংক একাউন্ট না খুললে কার্ড পাবে না বলে প্রতারকরা বাড়তি খরচের নামে ওই টাকা আদায় করছেন। আটক হওয়া দুইজন জানিয়েছেন, প্রশাসন’সহ বিভিন্ন স্থানে টাকা দিতে হচ্ছে।

আটককৃতরা উপজেলার লালোর ইউনিয়নের মটগ্রামের মোহাম্মদ কাজীর ছেলে মো: হাবিবুর রহমান (৩৮) একই গ্রামের মিজানুর রহমান মিজানের ছেলে মিঠুন (২৮)

এ কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক কার্ডপ্রতি ৪৫০ টাকা করে জমা নিয়ে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা। তবে স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় নতুন কার্ডধারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে নিয়েছেন ৬৫০ টাকা করে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার চামারি ইউনিয়নের বিলদহর গ্রামের আবদুস ছালেক ও বাহাদুরপুর গ্রামের সাবিনা আক্তার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজি করে চাল নিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ প্রতারক হাবিব ও মিঠুন ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নামে কার্ডধারী ৭০০ ব্যক্তির কাছে ২০০ টাকা করে নিয়েছে বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিবে বলে।

আব্দুল ছালেক বলেন, সরকার বলেছে ৪৫০ টাকা করে নিয়ে ৩০ কেজি চাউল দেবে। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে বাড়তি ২০০টাকা করে নিয়েছে।

অভিযুক্ত হাবিব ও মিঠুন বলেন, উপজেলার সব ডিলার বসে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা করে কার্ডপ্রতি নিয়েছি। টাকা নেওয়া হয়েছে, প্রশাসন ও খাদ্য অফিসে কার্ড তৈরির খরচসহ বিভিন্ন খরচের জন্য।

চামারি গ্রামের সাইদুল ইসলাম, রাবেয়া বেগম এর অভিযোগ, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির প্রতারকরা তাঁদের প্রত্যেকের কাছে ২০০ টাকা করে বেশি নিয়ে ৩০ কেজি করে চাল দিবে।

এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান স্বপন মোল্লা বলেন, আটককৃত দুইজন বর্তমানে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে রয়েছে ঘটনা স্থলে পুলিশ এসেছি।

ইউনিয়ন পরিষদের জমিদাতা মোঃ জুবায়ের হোসেন বলেন, আমরা ইউনিয়ন বিএনপি ও উপজেলা বিএনপি মিলে এবিষয়ে মিমাংসা করবো ভুক্তভোগীদের টাকা তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুঠোফোনে গোলাম রসুল বলেন, কার্ড তৈরির খরচ অফিস থেকে বহন করা হয়েছে। এই খরচ ব্যাংক একাউন্ট খুলে কাউকে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ৩০ কেজি চাল নিতে ৪৫০ টাকা লাগবে। কেউ যদি কোনো খরচের কথা বলে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম প্রশাসনের টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, হাবিব ও মিঠুন এসেছি আমার কাছে ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করার বিষয়ে কার্ডধারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার দায় কোনভাবেই উপজেলা প্রশাসন নিবেনা। তারা প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করলে অভিযুক্ত বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের অভিযানে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

নতুন কার্ডধারীদের কাছে সিংড়ায় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় জনগণের হাতে ২জন আটক

আপডেট সময় ০৪:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

নাটোরের সিংড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় নতুন কার্ডধারী ৭০০জন ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগে ৯২ হাজার নগদ টাকা’সহ দুই জনকে আটক করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। কর্মসূচিতে ব্যাংক একাউন্ট না খুললে কার্ড পাবে না বলে প্রতারকরা বাড়তি খরচের নামে ওই টাকা আদায় করছেন। আটক হওয়া দুইজন জানিয়েছেন, প্রশাসন’সহ বিভিন্ন স্থানে টাকা দিতে হচ্ছে।

আটককৃতরা উপজেলার লালোর ইউনিয়নের মটগ্রামের মোহাম্মদ কাজীর ছেলে মো: হাবিবুর রহমান (৩৮) একই গ্রামের মিজানুর রহমান মিজানের ছেলে মিঠুন (২৮)

এ কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক কার্ডপ্রতি ৪৫০ টাকা করে জমা নিয়ে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা। তবে স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় নতুন কার্ডধারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে নিয়েছেন ৬৫০ টাকা করে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার চামারি ইউনিয়নের বিলদহর গ্রামের আবদুস ছালেক ও বাহাদুরপুর গ্রামের সাবিনা আক্তার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩০ কেজি করে চাল নিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ প্রতারক হাবিব ও মিঠুন ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নামে কার্ডধারী ৭০০ ব্যক্তির কাছে ২০০ টাকা করে নিয়েছে বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিবে বলে।

আব্দুল ছালেক বলেন, সরকার বলেছে ৪৫০ টাকা করে নিয়ে ৩০ কেজি চাউল দেবে। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে বাড়তি ২০০টাকা করে নিয়েছে।

অভিযুক্ত হাবিব ও মিঠুন বলেন, উপজেলার সব ডিলার বসে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা করে কার্ডপ্রতি নিয়েছি। টাকা নেওয়া হয়েছে, প্রশাসন ও খাদ্য অফিসে কার্ড তৈরির খরচসহ বিভিন্ন খরচের জন্য।

চামারি গ্রামের সাইদুল ইসলাম, রাবেয়া বেগম এর অভিযোগ, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির প্রতারকরা তাঁদের প্রত্যেকের কাছে ২০০ টাকা করে বেশি নিয়ে ৩০ কেজি করে চাল দিবে।

এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান স্বপন মোল্লা বলেন, আটককৃত দুইজন বর্তমানে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে রয়েছে ঘটনা স্থলে পুলিশ এসেছি।

ইউনিয়ন পরিষদের জমিদাতা মোঃ জুবায়ের হোসেন বলেন, আমরা ইউনিয়ন বিএনপি ও উপজেলা বিএনপি মিলে এবিষয়ে মিমাংসা করবো ভুক্তভোগীদের টাকা তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুঠোফোনে গোলাম রসুল বলেন, কার্ড তৈরির খরচ অফিস থেকে বহন করা হয়েছে। এই খরচ ব্যাংক একাউন্ট খুলে কাউকে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ৩০ কেজি চাল নিতে ৪৫০ টাকা লাগবে। কেউ যদি কোনো খরচের কথা বলে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাজহারুল ইসলাম প্রশাসনের টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, হাবিব ও মিঠুন এসেছি আমার কাছে ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করার বিষয়ে কার্ডধারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার দায় কোনভাবেই উপজেলা প্রশাসন নিবেনা। তারা প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করলে অভিযুক্ত বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।