ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করছে পাকিস্তান। বন্যা এতোটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির এক-তৃতীয়াংশই এখন পানির নিচে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের অনেক অংশকে ‘সমুদ্রের মতো’ মনে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করার পর শেহবাজ এই মন্তব্য করেন। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে বন্যায় আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করে দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩৪৩ জন। ২২ কোটি জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তানে চলমান এই বন্যায় ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির বহু মানুষ গৃহহীন হয়েছেন এবং কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।
বুধবার পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ সিন্ধ পরিদর্শনে যান দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। পরে সেখানে মিডিয়াকে তিনি বলেন, ‘বন্যায় এখানে ধ্বংসের মাত্রা আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না। যতদূর আপনি দেখবেন চারদিকে কেবলই পানি। এটি একটি সমুদ্রের মতো।’
এছাড়া বন্যায় গৃহহীন হয়ে পড়া পরিবারগুলোর জন্য সরকার ২ লাখ তাঁবু কিনবে বলেও জানান শরিফ। তিনি বলেন, ‘বন্যার পানি কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের কোটি কোটি রুপির প্রয়োজন হবে।’
এদিকে বন্যা দুর্গতদের সাহায্যের জন্য ১৬ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যায় পাকিস্তানে আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে আট জন শিশু।
সিন্ধ প্রদেশের প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মুর্তজা ওয়াহাব বলেছেন, কর্মকর্তারা আশা করছেন- আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পানি কমবে। এখন আমাদের পরিকল্পনা হলো- পানি কমার সাথে সাথে জমিগুলোকে গম চাষের জন্য প্রস্তুত করা।
তবে আগামী মাসে পাকিস্তানে আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে দেশটির পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) একজন শীর্ষ কর্মকর্তা সতর্ক করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, পাকিস্তানের বন্যাকবলিত এলাকায় ৬৪ লাখেরও বেশি মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।