রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলায় জেলা স্বেচ্ছাসক লীগের সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে শহরের ভবানীপুর রেল কলোনী এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
হাফিজুর রহমান শহরের বিনোদপুর এলাকার মৃত আতিয়ার রহমান মুন্সির ছেলে। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লা বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী কেরামত আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী, কাজী ইরাদত আলীর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী রকিবুল হাসান শান্তনু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ রাজিব, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান মিয়া সোহেল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহিন শেখ ও রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর শেখ তিতুসহ ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
সদর উপজেলার মাটিপাড়ার কাউরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে ও রাজবাড়ী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র রাজিব মোল্লা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, সারা বাংলাদেশের মতো রাজবাড়ীতেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকে নসাৎ করার জন্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
গত ১৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র, অভিভাবক ও শিক্ষকরা রাজবাড়ী শহরের বড়পুল মোড়ে অবস্থান নেন। বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে পূর্ব পরিকল্পনামাফিক উল্লেখিত এজাহার নামীয় আসামিরা তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে অতর্কিতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর নির্দেশে এজাহার নামীয় আসামিরা আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা নিক্ষেপ করে ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে। এছাড়া আন্দোলনকারীদের বেধড়ক মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়।
আসামিরা আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেননি। আসামিদের আক্রমণে সোনিয়া আক্তার স্মৃতি, নুরুন্নবী, আশিক ইসলাম অভি, রাজিব মোল্লা, মেহেরাব, আলতাফ মাহমুদ সাগর, উৎস সরকার, রিয়াজসহ অসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হয়।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘রাজিব মোল্লার দায়ের করা মামলায় তদন্তেপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে হাফিজুর রহমান হাফিজকে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।’