ঢাকা ০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কে আসল কে নকল বোঝা বড় দায় শুধু নামের মিলে বেরোবির শিক্ষক হয় ইমরান খানের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালানোর শঙ্কা জবির ৯ শিক্ষকসহ ২৫৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা উপ-রাষ্ট্রপতি পদ ফেরাতে চায় বিএনপি, আগে কারা ছিলেন? বঞ্চিত ক্রীড়া সংগঠকদের মাঠে ফিরিয়ে আনতে চাই : আমিনুল হক বিহারী মুরাদ দিদার এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র মঠবাড়িয়ার সাপলেজা ইউনিয়নে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত সংঘাত অস্থিরতার দায় সরকার এড়াতে পারে না: এবি পার্টি ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের’ মাহবুবুলসহ ১৮ জন কারাগারে রংপুর জেলায় বিএসটিআই’র সার্ভিল্যান্স অভিযান পরিচালনা

শহীদ মিনারের সিঁড়িতে জুতা পায়ে মান্না

ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষার্থে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়ে থাকে। তবে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতে উঠে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চের আরও দুই নেতার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে এ ঘটনা ঘটেছে। সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ হতে এবং রাজনৈতিক সভা সমাবেশে বাধা, হামলা-মামলা, দমন-পীড়ন, গুলি ও হত্যার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকালে অনুষ্ঠান শুরু হলে মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। শহীদ মিনারের মূল বেদীতে অতিথিদের আসনের ব্যবস্থা করা হয়। একে একে অতিথিদের বক্তব্য শেষে সন্ধ্যায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্য দেন। তবে বক্তব্য দেওয়ার সময় দেখা যায়, তিনি জুতা পায়ে হেঁটে আসেন। শহীদ মিনারের মূল বেদীর দুই ধাপ নিচে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে জুতা পায়ে প্রায় ১৮ মিনিটের বেশি সময় তিনি বক্তব্য দেন।

এর আগে বিকালে জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রশীদ চৌধুরী ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমানকেও জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও ‍উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক  সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপস্থিত সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, শহীদ মিনারের পবিত্রতা যারা রক্ষা করতে পারেন না, তারা দেশের পবিত্রতা কীভাবে রক্ষা করবেন। তাদের থেকে এই ধরনের অবিবেচকের মতো কাজ কখনও প্রত্যাশা করেন না।

এ বিষয়ে জানতে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

 বাঁ থেকে- ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান ও জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রশীদ চৌধুরীবাঁ থেকে- ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান ও জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রশীদ চৌধুরীতবে সমাবেশের আয়োজক সংগঠন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমার দলসহ সাতটি দল অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে ছিল। শহীদ মিনারের বেদীতে অতিথিরা বক্তব্য দিয়েছেন। জুতা পায়ে কেউ শহীদ মিনারে উঠে থাকলে এটা ঠিক হয়নি। আমরা এটার সমর্থন করি না। তবে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠার বিষয়টা আমাদের চোখে পড়েনি। এটা কেউ করে থাকলে, হয়তো মনের ভুলে করেছেন।’

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর বলেন, ‘শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠার প্রশ্নই আসে না। এমনকি জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতেও ওঠা যায় না। শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য এটা করা হয়। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এ কাজ করে থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমার মনে হয়, ওই রাজনীতিকের ভাষা শহীদদের বিষয়ে কোনও চেতনা নাই।’

জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতে ওঠার বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি বলেন, ‘শহীদ মিনারে যাওয়ার সময় খালি পায়ে যাওয়ার নিয়ম। যারা জুতা পায়ে উঠে তাদের চৈতন্য চিন্তা নাই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করে, এই কাজ কেন করে বুঝি না। যদি কেউ জুতা পায়ে উঠে থাকে তারা অবিবেচকের মতো কাজ করেছেন। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কে আসল কে নকল বোঝা বড় দায় শুধু নামের মিলে বেরোবির শিক্ষক হয়

শহীদ মিনারের সিঁড়িতে জুতা পায়ে মান্না

আপডেট সময় ০৪:৪৫:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২

ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষার্থে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়ে থাকে। তবে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতে উঠে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চের আরও দুই নেতার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে এ ঘটনা ঘটেছে। সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ হতে এবং রাজনৈতিক সভা সমাবেশে বাধা, হামলা-মামলা, দমন-পীড়ন, গুলি ও হত্যার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকালে অনুষ্ঠান শুরু হলে মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। শহীদ মিনারের মূল বেদীতে অতিথিদের আসনের ব্যবস্থা করা হয়। একে একে অতিথিদের বক্তব্য শেষে সন্ধ্যায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্য দেন। তবে বক্তব্য দেওয়ার সময় দেখা যায়, তিনি জুতা পায়ে হেঁটে আসেন। শহীদ মিনারের মূল বেদীর দুই ধাপ নিচে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে জুতা পায়ে প্রায় ১৮ মিনিটের বেশি সময় তিনি বক্তব্য দেন।

এর আগে বিকালে জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রশীদ চৌধুরী ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমানকেও জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও ‍উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক  সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপস্থিত সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, শহীদ মিনারের পবিত্রতা যারা রক্ষা করতে পারেন না, তারা দেশের পবিত্রতা কীভাবে রক্ষা করবেন। তাদের থেকে এই ধরনের অবিবেচকের মতো কাজ কখনও প্রত্যাশা করেন না।

এ বিষয়ে জানতে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

 বাঁ থেকে- ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান ও জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রশীদ চৌধুরীবাঁ থেকে- ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান ও জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রশীদ চৌধুরীতবে সমাবেশের আয়োজক সংগঠন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমার দলসহ সাতটি দল অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে ছিল। শহীদ মিনারের বেদীতে অতিথিরা বক্তব্য দিয়েছেন। জুতা পায়ে কেউ শহীদ মিনারে উঠে থাকলে এটা ঠিক হয়নি। আমরা এটার সমর্থন করি না। তবে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠার বিষয়টা আমাদের চোখে পড়েনি। এটা কেউ করে থাকলে, হয়তো মনের ভুলে করেছেন।’

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর বলেন, ‘শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠার প্রশ্নই আসে না। এমনকি জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতেও ওঠা যায় না। শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য এটা করা হয়। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এ কাজ করে থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমার মনে হয়, ওই রাজনীতিকের ভাষা শহীদদের বিষয়ে কোনও চেতনা নাই।’

জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতে ওঠার বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি বলেন, ‘শহীদ মিনারে যাওয়ার সময় খালি পায়ে যাওয়ার নিয়ম। যারা জুতা পায়ে উঠে তাদের চৈতন্য চিন্তা নাই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করে, এই কাজ কেন করে বুঝি না। যদি কেউ জুতা পায়ে উঠে থাকে তারা অবিবেচকের মতো কাজ করেছেন। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’