ঢাকা ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক

হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেক কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে। বের হয়ে আসছে অনেক তথ্য। দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গোপনে রাজনীতি পরিচালনা করে আসা ইসলামী ছাত্র শিবিরও এবার প্রকাশ্যে রাজনীতির ঘোষণা দিয়েছে।

শনিবার হঠাৎ করে নিজের ফেসবুক আইডিতে বার্তা দিয়ে নিজের পরিচয় প্রকাশ করেন হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠক আবু সাদিক কায়েম। নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি।

সমন্বয়কের তালিকায় তার নাম না থাকলেও জুলাই মাসে চলা ছাত্র আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন সাদিক কায়েম। তালিকায় নাম থাকা সমন্বয়কদের সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতেও তাকে দেখা গেছে। উপদেষ্টা পরিষদের শপথ অনুষ্ঠানেও বঙ্গভবনেও উপস্থিত ছিলেন সাদিক।

সাদিক কায়েমের পরিচয় প্রকাশের পর এ নিয়ে ফেসবুকজুড়ে চলছে নানা আলোচনার ঝড়। রোববার এক স্ট্যাটাসে প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান লিখেছেন, ‘ছেলেটাকে আমি চিনতাম সালমান নামে, পরিচয় জুলাইয়ের ২৫ তারিখ থেকে, তারপর নিয়মিতই কথা হতো।’ হঠাৎ সালমানের শিবির পরিচয়ে অবাকও হয়েছেন জুলকারনাইন।

তিনি লেখেন, ‘সালমানের প্রকৃত নাম শাদিক কাঁইয়ূম এবং তার রাজনৈতিক পরিচয়, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি। অবশ্যই অবাক হয়েছি, বেশ অবাক হয়েছি।’

মানবাধিকারকর্মী ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য বিষয়টি বেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। ঢাবিতে শিবিরের রাজনীতি প্রকাশ্যে শুরু হলে বিরাজনীতিকরণের পরিকল্পনা ঠেকিয়ে দেয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম শনিবার এক পোস্ট দিয়ে বলেন, সাদিক কায়েম শিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি। দুয়েকদিনের মধ্যে সেক্রেটারিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধের যে আলোচনা চলছে তা নিয়ে গতকাল শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ১০টি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। সেখানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিনিধি হিসেবে সাদিক কায়েমকে দেখা যায়। তখন তিনি সেখানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ না করে এর ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানান।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সাদিক কায়েম নিজেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বলে পরিচয় দেন। পরে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্টও দেন তিনি। এই ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক যুগেরও বেশি সময় পর সরব উপস্থিতি জানান দিলো ইসলামী ছাত্রশিবির।

জানা গেছে, সাদিক কায়েম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি শহরের বাজার এলাকায়। তার বাবা জেলা শহরের একজন কাপড় ব্যবসায়ী। তার ছোট ভাইও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।

সাদিক খাগড়াছড়ি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ থেকে আলিম পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বোরহানউদ্দিনে খাল পরিস্কার – পরিচ্ছন্নতার অভিযানের উদ্বোধন

ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক

আপডেট সময় ০৪:১০:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেক কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে। বের হয়ে আসছে অনেক তথ্য। দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গোপনে রাজনীতি পরিচালনা করে আসা ইসলামী ছাত্র শিবিরও এবার প্রকাশ্যে রাজনীতির ঘোষণা দিয়েছে।

শনিবার হঠাৎ করে নিজের ফেসবুক আইডিতে বার্তা দিয়ে নিজের পরিচয় প্রকাশ করেন হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠক আবু সাদিক কায়েম। নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি।

সমন্বয়কের তালিকায় তার নাম না থাকলেও জুলাই মাসে চলা ছাত্র আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন সাদিক কায়েম। তালিকায় নাম থাকা সমন্বয়কদের সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতেও তাকে দেখা গেছে। উপদেষ্টা পরিষদের শপথ অনুষ্ঠানেও বঙ্গভবনেও উপস্থিত ছিলেন সাদিক।

সাদিক কায়েমের পরিচয় প্রকাশের পর এ নিয়ে ফেসবুকজুড়ে চলছে নানা আলোচনার ঝড়। রোববার এক স্ট্যাটাসে প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান লিখেছেন, ‘ছেলেটাকে আমি চিনতাম সালমান নামে, পরিচয় জুলাইয়ের ২৫ তারিখ থেকে, তারপর নিয়মিতই কথা হতো।’ হঠাৎ সালমানের শিবির পরিচয়ে অবাকও হয়েছেন জুলকারনাইন।

তিনি লেখেন, ‘সালমানের প্রকৃত নাম শাদিক কাঁইয়ূম এবং তার রাজনৈতিক পরিচয়, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি। অবশ্যই অবাক হয়েছি, বেশ অবাক হয়েছি।’

মানবাধিকারকর্মী ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য বিষয়টি বেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। ঢাবিতে শিবিরের রাজনীতি প্রকাশ্যে শুরু হলে বিরাজনীতিকরণের পরিকল্পনা ঠেকিয়ে দেয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম শনিবার এক পোস্ট দিয়ে বলেন, সাদিক কায়েম শিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি। দুয়েকদিনের মধ্যে সেক্রেটারিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধের যে আলোচনা চলছে তা নিয়ে গতকাল শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ১০টি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। সেখানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিনিধি হিসেবে সাদিক কায়েমকে দেখা যায়। তখন তিনি সেখানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ না করে এর ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানান।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সাদিক কায়েম নিজেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বলে পরিচয় দেন। পরে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্টও দেন তিনি। এই ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক যুগেরও বেশি সময় পর সরব উপস্থিতি জানান দিলো ইসলামী ছাত্রশিবির।

জানা গেছে, সাদিক কায়েম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি শহরের বাজার এলাকায়। তার বাবা জেলা শহরের একজন কাপড় ব্যবসায়ী। তার ছোট ভাইও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।

সাদিক খাগড়াছড়ি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ থেকে আলিম পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।