বাংলাদেশে যেভাবে মব জাস্টিস শুরু হয়েছে, তা আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থা , আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অর্থনীতি ও বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য এক বিরাট অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে!
প্রথমত এই মব জাস্টিস ছিলো বিগত সরকারের প্রতি মানুষের সীমাহীন ক্ষোভ এর বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু, এটি ধীরে ধীরে ৭২ ঘন্টায়ই অনেক কমে যায়। কিন্তু, তারপর এটি আবার নতুন করে শুরু হয়। কিছু কিছু বিক্ষিপ্তভাবে ছাত্রদের অংশগ্রহণ এটিকে আরো উস্কে দেয়। ফলে সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীও সুযোগ পায়। সরকার অনেক ক্ষেত্রেই এই মব জাস্টিস ঠেকাতে ব্যার্থ হচ্ছে।
অনেক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যায়য়ে অনেক শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে কিংবা শক্তি প্রয়োগ করে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে, যাদের মধ্যে যোগ্য লোকও ছিলেন। শিক্ষার্থীদেরকে অনেক স্বার্থন্বেষী মহল ব্যবহার করছে এবং এতে শিক্ষার্থীদেরই ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে অনেক। তাদের মধ্যে যে মোড়াল পুলিশিংয়ের বিষ বাষ্প ঢুকেছে তা দেশ ভবিষ্যতে অরাজক করার জন্য যথেষ্ট।
তাছাড়া, একটা কথা মনে রাখতে হবে যে,শেখ হাসিনা সরকারকে কেবল শিক্ষার্থীরা উচ্ছেদ করেনি। শিক্ষার্থীরা মূলত আন্দোলন করেছে কোটার জন্য। তারা এই সরকারকে উৎখাতের স্বপ্ন দেখেনি। যখন স্বৈরাচার অত্যধিক বল প্রয়োগ করে এবং অসংখ্য লাশ ফেলে দেয় তখন শিক্ষার্থীদের ঘোষণার আগেই দেশের মানুষ একদফা দিয়ে দিয়েছে। এবং সব শ্রেণীর অংশগ্রহণে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়।
ছাত্রদের মব জাস্টিসের বিষয়টিকে এখন দুষ্টচক্র লুটপাটের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেছে।
যেমন:-ধরা যাক গাজী টায়ার্সের কারখানায় লুটপাটের ঘটনা। এই লুটপাট ও আগুনের ঘটনায় কোম্পানীটির সব মিলিয়ে দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নিহত হয়েছেন অজ্ঞাত সংখ্যক এবং কোম্পানিটির উৎপাদিত টায়ার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে টায়ারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে এই কোম্পানী থেকে বিদেশে টায়ারের রপ্তানী। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতিটি হচ্ছে, বেকার হয়ে যাচ্ছে গাজী টায়ার্সের কারখানায় কাজ করা ৪-৫ হাজার শ্রমিক। এখন এদের চাকরি কে দিবে?
অন্যদিকে, একদল আহাম্মক বালক তিস্তা পাড়ে বেক্সিমকো সোলার পাওয়ারের পাওয়ার প্লান্টের সামনে জমায়েত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারা চায় এতে ব্যাবহিৃত ভূমি উদ্ধার করতে। সাথে এনেছে তথাকথিত ভারতীয় গুপ্তচর বৃত্তির। ৫ আগস্টের পর কোনো ভারতীয় ‘র’ এজেন্ট ইন্ডিয়া থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরে এসে অপারেট করবে তা কোনো গর্ধবও বিশ্বাস করবে না।
অন্তর্বতী সরকারের অবিলম্বে উচিৎ হবে এসব থামানো। এরকম বালখিল্য আচরণ থেকে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে আইনি কাঠামোতে সব ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবে হবে। এই তথাকথিত ছাত্র-জনতার ‘মব’ জাস্টিসে নয়।