ঢাকা ০৮:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

অপহরন করে গুম: এগারো বছরেও মেলেনি সন্ধান, আইনের সহায়তা চায় ভুক্তভোগীর পরিবার

পাবনা’য় নিজ বাড়ি থেকে কৌশলে অপহরন করে নিয়ে যাওয়ার ১১ বছর পরেও সন্ধান মেলেনি নৈশ প্রহরী খবির প্রামাণিক (৪০)’র। রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘ এগারো বছরে নেওয়া হয়নি কোন মামলা। এমনকি ভুক্তভোগীর পরিবার কে বিভিন্ন ভাবে করা হয়েছে অসহনীয় নির্যাতন, দেওয়া হয়েছে হত্যার হুমকি। ঘটনাগুলো ঘটেছে আতংকের জনপদ খ্যাত পাবনার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের চর-বলরামপুর এলাকায়। দীর্ঘ এগারো বছর পরে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ায় আশার আলো দেখতে পেয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। অপহরণ হওয়া খবির প্রামাণিক কে ফিরে পেতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পরিবারের সদস্যরা।

অপহরণের শিকার খবির প্রামাণিকের পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০১৩ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি চর-বলরামপুর গ্রামস্থ নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ হন পাবনা জেলার সদর উপজেলাধীন ভাঁড়ারা ইউনিয়নের অন্তর্গত চর-বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী খবির প্রামাণিক।

অপহরণের শিকার খবির প্রামাণিকের স্ত্রী চাম্পা খাতুন (৩৫) বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে মনছের প্রামাণিকের ছেলে রিপন (৩২) ও উম্বার প্রামাণিকের ছেলে ইকবাল (৩০) আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আমার স্বামী আর ফিরে আসে নি। ওরা আমার স্বামীকে খুন করেছে নাকি গুম করেছে তা জানি না। ঐদিনের পর আমার স্বামী ফেরত না আসলে ওদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে আমাদের মারধর করে ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। বিগত সরকারের আমলে আমরা কথা বলতে পারি নি। এখন যেহেতু দেশ স্বাধীন হয়েছে, স্বাধীন দেশে আমরা আমার স্বামীকে ফেরত চাই, আর যদি আমার স্বামীকে ওরা মেরে ফেলে তাহলে আমি ওদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চাই।

অপহরণের কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যম কর্মীদের ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানান চর- বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী পদের নিয়োগ নিয়ে একই গ্রামের মৃত বাছের মালিথার ছেলে মোহাম্মদ (৫০)’র সাথে ঝামেলা ছাড়াও ইবাদুল ও মাবুদ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবি করায় আমার স্বামী কে অপহরন করা হয়।

পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য খবির প্রামাণিক কে রিপন ও ইকবাল বাড়ি থেকে নিয়ে গেলেও এই অপহরণ ও গুমের সাথে মৃত রজব আলীর ছেলে আহসান (৪০),মৃত বাছের মালিথার ছেলে মোহম্মদ (৫০),মৃত সুরুজ মন্ডলের ছেলে আজাহার মন্ডল (৬০), মৃত রিকাত প্রামাণিকের ছেলে সাইফুল ইসলাম সাকু (৪৮), নাদের প্রামাণিকের ছেলে কুদ্দুস (৪৫), নাদের প্রামাণিকের ছেলে শফিকুর (৩৬), ময়ছের প্রামাণিকের ছেলে শাহিন (৩৭),মৃত কাশেম প্রামাণিকের ছেলে নাহের প্রামাণিক (৪৫), মৃত বাছের মালিথার ছেলে মোতাহের মালিথা, আক্কাস মালিথার ছেলে শামছুর (৩৬), রজব খাঁ’র ছেলে রানু খান (৪৫),লুকাই খাঁ’র ছেলে বক্কার (৫,৫),আকবার প্রামাণিকের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪৫) ও মৃত কফিলউদ্দিন খন্দকারের ছেলে আতাউর রহমান (৫৫) সরাসরি জড়িত। অনতিবিলম্বে এই সকল অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি অপহরণ ও গুমের রহস্য উদঘাটন করে খবির প্রামাণিক কে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান তারা।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বোরহানউদ্দিনে খাল পরিস্কার – পরিচ্ছন্নতার অভিযানের উদ্বোধন

অপহরন করে গুম: এগারো বছরেও মেলেনি সন্ধান, আইনের সহায়তা চায় ভুক্তভোগীর পরিবার

আপডেট সময় ০১:২৫:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পাবনা’য় নিজ বাড়ি থেকে কৌশলে অপহরন করে নিয়ে যাওয়ার ১১ বছর পরেও সন্ধান মেলেনি নৈশ প্রহরী খবির প্রামাণিক (৪০)’র। রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘ এগারো বছরে নেওয়া হয়নি কোন মামলা। এমনকি ভুক্তভোগীর পরিবার কে বিভিন্ন ভাবে করা হয়েছে অসহনীয় নির্যাতন, দেওয়া হয়েছে হত্যার হুমকি। ঘটনাগুলো ঘটেছে আতংকের জনপদ খ্যাত পাবনার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের চর-বলরামপুর এলাকায়। দীর্ঘ এগারো বছর পরে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ায় আশার আলো দেখতে পেয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। অপহরণ হওয়া খবির প্রামাণিক কে ফিরে পেতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পরিবারের সদস্যরা।

অপহরণের শিকার খবির প্রামাণিকের পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০১৩ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি চর-বলরামপুর গ্রামস্থ নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ হন পাবনা জেলার সদর উপজেলাধীন ভাঁড়ারা ইউনিয়নের অন্তর্গত চর-বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী খবির প্রামাণিক।

অপহরণের শিকার খবির প্রামাণিকের স্ত্রী চাম্পা খাতুন (৩৫) বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে মনছের প্রামাণিকের ছেলে রিপন (৩২) ও উম্বার প্রামাণিকের ছেলে ইকবাল (৩০) আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আমার স্বামী আর ফিরে আসে নি। ওরা আমার স্বামীকে খুন করেছে নাকি গুম করেছে তা জানি না। ঐদিনের পর আমার স্বামী ফেরত না আসলে ওদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে আমাদের মারধর করে ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। বিগত সরকারের আমলে আমরা কথা বলতে পারি নি। এখন যেহেতু দেশ স্বাধীন হয়েছে, স্বাধীন দেশে আমরা আমার স্বামীকে ফেরত চাই, আর যদি আমার স্বামীকে ওরা মেরে ফেলে তাহলে আমি ওদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চাই।

অপহরণের কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যম কর্মীদের ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানান চর- বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী পদের নিয়োগ নিয়ে একই গ্রামের মৃত বাছের মালিথার ছেলে মোহাম্মদ (৫০)’র সাথে ঝামেলা ছাড়াও ইবাদুল ও মাবুদ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবি করায় আমার স্বামী কে অপহরন করা হয়।

পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য খবির প্রামাণিক কে রিপন ও ইকবাল বাড়ি থেকে নিয়ে গেলেও এই অপহরণ ও গুমের সাথে মৃত রজব আলীর ছেলে আহসান (৪০),মৃত বাছের মালিথার ছেলে মোহম্মদ (৫০),মৃত সুরুজ মন্ডলের ছেলে আজাহার মন্ডল (৬০), মৃত রিকাত প্রামাণিকের ছেলে সাইফুল ইসলাম সাকু (৪৮), নাদের প্রামাণিকের ছেলে কুদ্দুস (৪৫), নাদের প্রামাণিকের ছেলে শফিকুর (৩৬), ময়ছের প্রামাণিকের ছেলে শাহিন (৩৭),মৃত কাশেম প্রামাণিকের ছেলে নাহের প্রামাণিক (৪৫), মৃত বাছের মালিথার ছেলে মোতাহের মালিথা, আক্কাস মালিথার ছেলে শামছুর (৩৬), রজব খাঁ’র ছেলে রানু খান (৪৫),লুকাই খাঁ’র ছেলে বক্কার (৫,৫),আকবার প্রামাণিকের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪৫) ও মৃত কফিলউদ্দিন খন্দকারের ছেলে আতাউর রহমান (৫৫) সরাসরি জড়িত। অনতিবিলম্বে এই সকল অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি অপহরণ ও গুমের রহস্য উদঘাটন করে খবির প্রামাণিক কে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান তারা।