রাজবাড়ীতে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী ও তার ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীসহ ১৭০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাজবাড়ী সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লা (২৪)।
তিনি সদর উপজেলার মাটিপাড়ার কাউরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে ও রাজবাড়ী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল কালাম আজাদকে মামলাটি তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী, রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী কেরামত আলী, কাজী ইরাদত আলীর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী রকিবুল হাসান শান্তনু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ রাজিব, জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নুরুজ্জামান মিয়া সোহেল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহিন শেখ ও রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র আলমগীর শেখ তিতু। এতে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ ও ছাত্রলীগের ১৭০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী রাজিব মোল্লা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সারা বাংলাদেশের মতো রাজবাড়ীতেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকে নৎসাত করার জন্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। গত ১৮ জুলাই বিকাল ৩টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র, অভিভাবক ও শিক্ষকরা রাজবাড়ী শহরের বড়পুল মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক উল্লিখিত এজাহার নামীয় আসামিরা দেশীয় অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে অতর্কিতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর নির্দেশে এজাহার নামীয় আসামিরা আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা নিক্ষেপ করে ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে। এছাড়া আন্দোলনকারীদের বেধরক মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়। আসামিরা আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেয়নি। আসামিদের আক্রমণে সোনিয়া আক্তার স্মৃতি, নুরুন্নবী, আশিল ইসলাম অভি, রাজিব মোল্লা, মেহেরাব,আলতাফ মাহমুদ সাগর, উৎস সরকার, রিয়াজসহ অসংখ্য আন্দোলনকারীরা আহত হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মামলার বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে মামলার কপি এখনও হাতে পাইনি। মামলার কপি হাতে পেলে তদন্ত শুরু করবো।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখারুল আলম প্রধান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য রাজিব মোল্লা ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৩০০ জনকে আজ্ঞাত ব্যক্তিতে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন। মামলাটি এসআই আবুল কালাম আজাদকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।