ঢাকা ১২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর আশীর্বাদপুষ্ট পায়রাবন্দরের পরিচালক, তিনি কে? টঙ্গীতে চাঁদা দাবীর প্রতিবাদে শিল্প উদ্যোক্তার সংবাদ সম্মেলন ট্রাম্পের প্রস্তাবে নমনীয় জেলেনস্কি, বলছেন যুদ্ধবিরতির কথা মীরসরাইয়ে জামায়াত-যুবদলের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০ মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে ‘মহিলা’র পরিবর্তে যুক্ত হচ্ছে ‘নারী’ খুতবার শেষে খতিবের মৃত্যু পাগলা মসজিদে এবার মিলল রেকর্ড ৩০ বস্তা টাকা পেঁয়াজ আলু তেলের মূল্য বৃদ্ধির নেপথ্যে আমদানিকারক ও আড়তদার সিন্ডিকেট গাইবান্ধা থেকে ১৯৮ বোতল ফেন্সিডিলসহ ০২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৩

নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ডাকাতিয়া, মেঘনার তীরবর্তী ও বেড়িবাঁধ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মেঘনার জোয়ার ও ভারি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট এই বন্যার পানি যত কমছে, ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। স্রোতে ভেঙে গেছে বিভিন্ন গ্রামে রাস্তা ও সড়ক। অনেক সড়ক এখনো পানির নিচে। কিছু বাড়িঘরেও পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন অনেক মানুষের।

শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহেদ আরমানের নেতৃত্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, সচেতন নাগরিক, পুলিশ, রেডক্রিসেন্ট, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যক্তিরা ডাকাতিয়া নদী সংযোগ খালে অবৈধ বাঁধগুলো কেঁটে দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মেঘনা নদীর জোয়ার ও ১৪ দিনের টানা বৃষ্টিপাতের ফলে রায়পুর উপজেলায় বন্যা শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত মেঘনা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বর্তমানে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তলিয়ে যাওয়া বিভিন্ন রাস্তা ও সড়ক থেকে পানি সরে যাওয়ায় ভেসে উঠছে ক্ষতের চিহ্ন। বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে এখনো বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার থেকে বন্যা দেখা দেওয়ায় পৌরসভার পশ্চিম কাঞ্চনপুর, দেনায়েতপুরসহ নয়টি ওয়ার্ড, উপজেলার পুর্বাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের কেরোয়া, বামনী, সোনাপুর, চরপাতা এবং মেঘনা উপকূলীয় ৪টি ইউনিয়নসহ ১০০ টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। বুধবার ও বৃহস্পতিবার বন্যার পানি বেড়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। পরবর্তীতে জোয়ারের পানির বেগ কমায় এবং থেমে থেমে বৃষ্টি কম হওয়ায় পানি কমতে থাকে। শনিবার সকাল থেকে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়। ফলে বেশিরভাগ বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যায়। তবে কয়েকটি বাড়িঘরে কেউ কেউ পানিবন্দি আছেন। উত্তর ও দক্ষিন চরবংশী এবং উত্তর ও দক্ষিণ চরআবাবিল ইউপির সংলগ্ন মেঘনা নদীর কয়েকটি স্থানসহ পৌরসভার বেশিরভাগ সড়ক ধসে পড়েছে। এতে করে এসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ আছে। এলাকার পানি ধীরগতিতে নামছে।। পানির স্রোতে সড়কের শহরের টিএন্ডটি এবং রুস্তম আলী কলেজ এলাকায় পিচউঠে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান  বলেন, ‘সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মেঘনা নদীর পানির কমছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত চার সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। বর্তমানে নদীর লক্ষ্মীপুর পয়েন্টে পানির সমতল রয়েছে ৫ দশমিক ৫৪ মিটার। ফলে বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতি হচ্ছে।’

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান খান যুগান্তরকে বলেন, ‘উপজেলায় পানি কমতে শুরু করেছে। কত কিলোমিটার সড়ক ও কয়টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা একদিন পর দেওয়া যাবে। শুকনা খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হয়। কারও পানির সংকট নেই। কারণ, কোনো নলকূপ পানিতে তলিয়ে যায়নি। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে দ্রুত। বাসাবাড়ি থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। ভেঙে যাওয়া সড়ক মেরামত করে যান চলাচলে চেষ্টা করা হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি

নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন

আপডেট সময় ১১:২৭:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ডাকাতিয়া, মেঘনার তীরবর্তী ও বেড়িবাঁধ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মেঘনার জোয়ার ও ভারি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট এই বন্যার পানি যত কমছে, ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। স্রোতে ভেঙে গেছে বিভিন্ন গ্রামে রাস্তা ও সড়ক। অনেক সড়ক এখনো পানির নিচে। কিছু বাড়িঘরেও পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন অনেক মানুষের।

শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহেদ আরমানের নেতৃত্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, সচেতন নাগরিক, পুলিশ, রেডক্রিসেন্ট, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যক্তিরা ডাকাতিয়া নদী সংযোগ খালে অবৈধ বাঁধগুলো কেঁটে দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মেঘনা নদীর জোয়ার ও ১৪ দিনের টানা বৃষ্টিপাতের ফলে রায়পুর উপজেলায় বন্যা শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত মেঘনা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বর্তমানে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তলিয়ে যাওয়া বিভিন্ন রাস্তা ও সড়ক থেকে পানি সরে যাওয়ায় ভেসে উঠছে ক্ষতের চিহ্ন। বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে এখনো বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার থেকে বন্যা দেখা দেওয়ায় পৌরসভার পশ্চিম কাঞ্চনপুর, দেনায়েতপুরসহ নয়টি ওয়ার্ড, উপজেলার পুর্বাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের কেরোয়া, বামনী, সোনাপুর, চরপাতা এবং মেঘনা উপকূলীয় ৪টি ইউনিয়নসহ ১০০ টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। বুধবার ও বৃহস্পতিবার বন্যার পানি বেড়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। পরবর্তীতে জোয়ারের পানির বেগ কমায় এবং থেমে থেমে বৃষ্টি কম হওয়ায় পানি কমতে থাকে। শনিবার সকাল থেকে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়। ফলে বেশিরভাগ বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যায়। তবে কয়েকটি বাড়িঘরে কেউ কেউ পানিবন্দি আছেন। উত্তর ও দক্ষিন চরবংশী এবং উত্তর ও দক্ষিণ চরআবাবিল ইউপির সংলগ্ন মেঘনা নদীর কয়েকটি স্থানসহ পৌরসভার বেশিরভাগ সড়ক ধসে পড়েছে। এতে করে এসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ আছে। এলাকার পানি ধীরগতিতে নামছে।। পানির স্রোতে সড়কের শহরের টিএন্ডটি এবং রুস্তম আলী কলেজ এলাকায় পিচউঠে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান  বলেন, ‘সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মেঘনা নদীর পানির কমছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত চার সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। বর্তমানে নদীর লক্ষ্মীপুর পয়েন্টে পানির সমতল রয়েছে ৫ দশমিক ৫৪ মিটার। ফলে বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতি হচ্ছে।’

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান খান যুগান্তরকে বলেন, ‘উপজেলায় পানি কমতে শুরু করেছে। কত কিলোমিটার সড়ক ও কয়টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা একদিন পর দেওয়া যাবে। শুকনা খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হয়। কারও পানির সংকট নেই। কারণ, কোনো নলকূপ পানিতে তলিয়ে যায়নি। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে দ্রুত। বাসাবাড়ি থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। ভেঙে যাওয়া সড়ক মেরামত করে যান চলাচলে চেষ্টা করা হবে।