হেফাজতে ইসলামকে দমন করতে যে পদক্ষেপ সরকার নিয়েছিল এখন সেই অবস্থা ও পরিস্থিতি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, জনগণ জেগে উঠেছে, তাদের দমন করতে পারবেন না। ১০ ডিসেম্বর প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এর আগে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বিএনপির উদ্দেশে বলেছিলেন, হেফাজত হতে চাইলে পরিষ্কার হয়ে যাবেন।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিএনপির এই সমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে পাল্টা কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে। ফলে ১০ ডিসেম্বর ঘিরে এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে থেকে এমন কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করব না, যাতে জনগণের দুর্ভোগ ও কষ্ট হবে। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা এমন আবহ তৈরি করছেন যাতে মনে হচ্ছে যুদ্ধ হবে- এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের পরিষ্কার কথা, ঢাকার সমাবেশ হচ্ছে বিভাগীয় সমাবেশের সর্বশেষ সমাবেশ। এখান থেকে আমরা পরবর্তীতে আন্দোলন কর্মসূচি নির্ধারণে যাব। এটা চূড়ান্ত আন্দোলন কর্মসূচি নয়। অথচ আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে তা নস্যাৎ করার পাঁয়তারা করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা শত বাধা-প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে বিভাগীয় সমাবেশগুলো করছি। সেখানে সহিংসতা পাল্টা প্রতিরোধ করিনি। এখন সরকার ১০ ডিসেম্বর পরিবেশ নস্যাৎ করার জন্য বালখিল্য আচরণ করছে। উদ্দেশ্য একটাই গণতন্ত্রকামী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন নস্যাৎ করা। কারণ আওয়ামী লীগ নিজস্ব চরিত্র হারিয়ে ফেলেছে, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন আমলা ও গোয়েন্দা নির্ভর হয়ে পড়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটাই সমাধান- পদত্যাগ করুন। যত দ্রুত করতে পারবেন ততই মঙ্গল হবে। অন্যথায় নিরাপদে পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না। জঙ্গিবাদকে বাংলাদেশের জন্য একটা ইস্যু তৈরির চেষ্টা চলছে বলে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যারা চিকিৎসক। অথচ আমরা তো জঙ্গি দেখি না। এটা সরকারের পুরোনো অস্ত্র, তাতে কাজ হবে না।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূতের দেওয়া বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জাপান রাষ্ট্রদূত চরম সত্য কথা বলেছেন। আন্তর্জাতিক কমিউনিটির চোখ খুলে গেছে, তারাও দেখতে পাচ্ছেন। ১৪ নভ্ম্বের সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, নির্বাচন নিয়ে বৈশ্বিক মতামতের একটা গুরুত্ব আছে।
জাপান ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরপর উদ্বেগ জানিয়েছিল। আমরা নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখার কথা শুনেছি, যা পৃথিবীর আর কোথাও শুনিনি। আমি আশা করব, এবার তেমন সুযোগ থাকবে না বা এমন ঘটনা ঘটবে না। এসব বক্তব্যের জন্য গতকাল তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। তবে কী বার্তা দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।