ঢাকা ১২:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শরীয়তপুর জয়নগর দুই গ্রুপের সংঘর্ষ কুমিল্লা মুরাদনগরে মাদক মামলায় আসামী গ্রেপ্তার রাজবাড়ী আওয়ামী লীগের ১৯ নেতাকর্মী কারাগারে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সালথায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা আলিয়ায় আনন্দ শোভাযাত্রা চুনারুঘাটে পবিত্র কোরআনের সূরা নিয়ে ব্যঙ্গ  ববি অধ্যাপক ড. মুহসিনকে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অব্যাহতি বান্দরবানে বর্ণাট্য আয়োজনে মারমা নববর্ষ মাহাঃ সাংগ্রাই পোয়েঃ উদযাপন বগুড়া গাবতলী আরাফাত রহমান কোকো’র স্মৃতি স্মরণে ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত ফরিদপুর সালথায় মামা ভাগ্নের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছে দিল্লি, বেকাদায় আদানি

আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত অন্তত এক ডজন ভারতীয় সংস্থার বাংলাদেশে বড় মাপের লগ্নি রয়েছে। সবেমাত্র দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। জল ও স্থলপথে দু’দেশের মধ্যে একগুচ্ছ সংযোগকারী পরিকাঠামো প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন স্তরে কাজ চলছে। আচমকা শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের ফলে দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে মোদি সরকারের অন্দরমহলে চিন্তা বেড়েছে। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।

কেন্দ্রীয় সরকারের এক প্রথম সারির মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘আমাদের আশু চ্যালেঞ্জ, বাংলাদেশে নতুন যে সরকার আসবে, তার সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ আগের মতোই চালিয়ে যাওয়া।’ এ বিষয়ে মোদি সরকারের শীর্ষ কর্তারা আশা করছেন, বাংলাদেশে নতুন সরকারও প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে অন্তত অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবে।

শেখ হাসিনার বিদায়ের পরেই নরেন্দ্র মোদীর ঘনি‌ষ্ঠ বলে পরিচিত গৌতম আদানির সংস্থার বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং প্রতি মাসে ৯ কোটি ডলারের বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে দিল্লিতে আলোচনা শুরু হয়েছে। আদানি গোষ্ঠী ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ২৫ বছরের জন্য ১৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে। গত বছরের জুন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। গোড্ডায় উৎপাদিত তাপবিদ্যুতের পুরোটাই বাংলাদেশে যায়। আদানি গোষ্ঠী অবশ্য জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছাড়াই বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন পর্ষদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ চলছে।

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রালয়ের সূত্রের বক্তব্য, ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ এখন ১২৯০ কোটি ডলার। ভারত থেকে রপ্তানির পরিমাণে বাংলাদেশ অষ্টম স্থানে রয়েছে। গত অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১১০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ভারত বাংলাদেশ থেকে মূলত ইস্পাতজাত পণ্য, বস্ত্র ও চামড়ার পণ্য আমদানি করে।

দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য আরও বাড়ানোর জন্য সামগ্রিক বাণিজ্য চুক্তি বা সেপা (কমপ্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা যে বাণিজ্যে কিছুটা হলেও ধাক্কা দেবে তাতে সন্দেহ নেই।

এখন চ্যালেঞ্জ হল, নতুন কোনো চুক্তির দিকে না গিয়ে যে সমস্ত আর্থিক লেনদেন চলছে, তা বজায় রাখা। ভারত থেকে কৃষি ও শিল্পজাত পণ্য রপ্তানি ধাক্কা খেলে বাংলাদেশও অসুবিধায় পড়বে। সে দিক থেকে আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের নতুন সরকারও সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে চাইবে। রপ্তানিকারীদের সংগঠন ফিও সূত্রের বক্তব্য, বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় গত কয়েক দিন ধরে ব্যাংকের লেনদেনে সমস্যা হয়েছে। পণ্য রপ্তানিকারীরাও চিন্তায় রয়েছেন। এখন সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দায়িত্ব নেওয়ায় পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রালয়ের কর্তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত আট বছরে ভারত বাংলাদেশকে রেল, সড়ক, বন্দর পরিকাঠামো তৈরির জন্য ৮০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। গত বছরের শেষেই আখাউড়া-আগরতলা রেল যোগাযোগ, খুলনা-মঙ্গলা বন্দর রেলপথ চালু হয়েছে। বাণিজ্যিক লেনদেন চালু রাখতে এই ধরনের যাবতীয় রেল, সড়ক, জলপথ যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে হবে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শরীয়তপুর জয়নগর দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছে দিল্লি, বেকাদায় আদানি

আপডেট সময় ১০:৫৬:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০২৪

আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত অন্তত এক ডজন ভারতীয় সংস্থার বাংলাদেশে বড় মাপের লগ্নি রয়েছে। সবেমাত্র দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। জল ও স্থলপথে দু’দেশের মধ্যে একগুচ্ছ সংযোগকারী পরিকাঠামো প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন স্তরে কাজ চলছে। আচমকা শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের ফলে দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে মোদি সরকারের অন্দরমহলে চিন্তা বেড়েছে। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।

কেন্দ্রীয় সরকারের এক প্রথম সারির মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘আমাদের আশু চ্যালেঞ্জ, বাংলাদেশে নতুন যে সরকার আসবে, তার সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ আগের মতোই চালিয়ে যাওয়া।’ এ বিষয়ে মোদি সরকারের শীর্ষ কর্তারা আশা করছেন, বাংলাদেশে নতুন সরকারও প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে অন্তত অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবে।

শেখ হাসিনার বিদায়ের পরেই নরেন্দ্র মোদীর ঘনি‌ষ্ঠ বলে পরিচিত গৌতম আদানির সংস্থার বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং প্রতি মাসে ৯ কোটি ডলারের বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে দিল্লিতে আলোচনা শুরু হয়েছে। আদানি গোষ্ঠী ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ২৫ বছরের জন্য ১৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে। গত বছরের জুন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। গোড্ডায় উৎপাদিত তাপবিদ্যুতের পুরোটাই বাংলাদেশে যায়। আদানি গোষ্ঠী অবশ্য জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছাড়াই বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন পর্ষদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ চলছে।

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রালয়ের সূত্রের বক্তব্য, ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ এখন ১২৯০ কোটি ডলার। ভারত থেকে রপ্তানির পরিমাণে বাংলাদেশ অষ্টম স্থানে রয়েছে। গত অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১১০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ভারত বাংলাদেশ থেকে মূলত ইস্পাতজাত পণ্য, বস্ত্র ও চামড়ার পণ্য আমদানি করে।

দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য আরও বাড়ানোর জন্য সামগ্রিক বাণিজ্য চুক্তি বা সেপা (কমপ্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা যে বাণিজ্যে কিছুটা হলেও ধাক্কা দেবে তাতে সন্দেহ নেই।

এখন চ্যালেঞ্জ হল, নতুন কোনো চুক্তির দিকে না গিয়ে যে সমস্ত আর্থিক লেনদেন চলছে, তা বজায় রাখা। ভারত থেকে কৃষি ও শিল্পজাত পণ্য রপ্তানি ধাক্কা খেলে বাংলাদেশও অসুবিধায় পড়বে। সে দিক থেকে আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের নতুন সরকারও সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে চাইবে। রপ্তানিকারীদের সংগঠন ফিও সূত্রের বক্তব্য, বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় গত কয়েক দিন ধরে ব্যাংকের লেনদেনে সমস্যা হয়েছে। পণ্য রপ্তানিকারীরাও চিন্তায় রয়েছেন। এখন সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দায়িত্ব নেওয়ায় পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রালয়ের কর্তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত আট বছরে ভারত বাংলাদেশকে রেল, সড়ক, বন্দর পরিকাঠামো তৈরির জন্য ৮০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। গত বছরের শেষেই আখাউড়া-আগরতলা রেল যোগাযোগ, খুলনা-মঙ্গলা বন্দর রেলপথ চালু হয়েছে। বাণিজ্যিক লেনদেন চালু রাখতে এই ধরনের যাবতীয় রেল, সড়ক, জলপথ যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে হবে।