ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার বিছিন্ন চর ‘চর রায়হান’ এ জলদস্য দৌরাত্ম্য, আতঙ্কে বসবাস কারেন শতাধিক পরিবার।
চরম উৎকণ্ঠা আর শঙ্কা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
জলদস্যু বাহাদুর ভূইয়া, কামাল ভূইয়া,মো.হোসেন,মো.ফরিদ, জাহাঙ্গীর,সহ এদের বেশ কয়েকজনের নামে ডাকাতি সহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এরা আঃ হাই চৌধুরীর ইন্ধনে ‘চর রায়হান’থেকে অস্ত্রের মুখে কৃষকদের গরু-ছাগল, মহিষ, নৌকা ভেড়াসহ নানান সম্পত্তি লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এসব সম্পত্তি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিগত ২ বছর ধরে চলছে বিরোধ। মাঝেমধ্যে এ বিরোধ রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন- গত (১৮ এপ্রিল) রাতে মো. হোসেন ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দেন,তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মো.হোসেন তাকে পিটিয়ে ডান হাত ভেঙে দেন। পরদিন ১৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে মোহাম্মদ আলী নামে এক জনকে ধরে নিয়ে আটক করে রাখেন, তাদের আস্তানায় এই খবর ছড়িয়ে গেলে কুলসুম, লিপি,সালাম সহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে যান। তারা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর কথার কাটাকাটির এক পর্যায়ে মো.হোসেন, ফরিদ,জাহাঙ্গীর কামাল সহ বেশ কয়েকজন তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় এতে কুলসুম, লিপি সালাম ও মোহাম্মদ আলী সহ বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মো.জাকির মাল জানান – আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রান সামগ্রী গ্রহণ করে মোটামুটি ভালোই দিন কেটেছে, তবে হঠাৎ এই ডাকাত বাহিনী তাদের নামে তজুমউদ্দিন থানায় ডাকাতি ও মারামারি মামলা রয়েছে। এরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ‘চর রায়হান’ এ খাঁটি করেন। আমাদের খেটে খাওয়া মানুষের ভোগান্তি কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। এরা আঃ হাই চৌধুরীর, উপজেলার চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন দুলাল মিয়া ও নাজিম উদ্দীন বাবুলের ছত্র ছায়ায় থেকে এসব করে থাকে।
অন্যদিকে হারুন মাঝি কান্না করে বলেন, আমার সন্তান ঈদের দিন নতুন জামা চেয়েছে আমি দিতে পারিনি, তজুমউদ্দিন উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি আঃ হাই চৌধুরীর ইন্ধনে কিছু চিহ্নিত ডাকাত মো.হোসেন সহ কয়েক জন ডাকাত বাহিনী আমার নৌকাটি নিয়ে যায়। নাজিম উদ্দীন বাবুলকে জানালে তিনি নৌকা উদ্ধার করে দিবেন বলে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা চান। এতো টাকা আমি পাবো কই, এখন পর্যন্ত আমার নৌকাটি উদ্ধার করতে পারিনি। এতে আমি এখন কর্মহীন বেকার হয়ে পড়েছি।
চেয়ারম্যান নুরনবী শিকদার জানান, ২০০৩ সাল থেকে তিনি ১ নং বড় মলংচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। চরবাসীর সুখে- দুঃখে তিনি তাদের পাশে থাকেন। কিন্তু হঠাৎ করে গেল ২ বছর ধরে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই চরটির একাংশ দখলের নেয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। দিনরাত স্থানীয় কিছু চিহ্নিত জলদস্য সন্ত্রাসী নিয়ে চরে আস্তানা করে লুটপাট চালাচ্ছেন। নারীদের শ্লীলতাহানি করে আসছেন। এতে প্রতিবাদ করতে গেলেই সৃষ্টি হয় বিরোধের।
অভিযুক্ত আব্দুল হাই এর কাছে সাংবাদিকরা এই বিষয় জানতে চাইলে, তিনি এমপির বাসায় মিটিং এ আছে বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল হক জানান, চর রায়হান একটি বিছিন্ন চর। ওই চরের পুরো জমি এখনো জেগে ওঠেনি। যতটুকু জেগে ওঠেছে। তাতে কিছু মানুষ বসবাস শুরু করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জানতি পারি আঃ হাই চৌধুরী নামে আ.লীগ নেতা চর রায়হানের এক অংশ দখল নিয়েছেন। তবে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে, কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ ফেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।