ঢাকা ০৩:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জেলা প্রশাসককে গাছের চারা উপহার দিলেন ইউএনও টঙ্গীতে সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের ফাঁসীর দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের নামে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মমিন মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে লেক ভিউ আবাসিক হোটেলের নামে চলছে নারী জুয়া ও মাদক ব্যবসা যাত্রাবাড়িতে দেহব্যবসার মহারানী রেখার রঙিন জগৎ ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ কেবল শিল্প কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচন উত্তরায় চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করছেন ইমরান খান নন্দনপুর সরকারি রাস্তা কেটে ইট পোড়াচ্ছেন আজাদ ব্রিকসের মালিক ইসহাক সরদার জামাই-শশুর মিইল্লা পদ্মা অয়েল খাইল গিল্লা! বখতিয়ারের কোটি টাকার রহস্য কী? অনিয়ম-দুর্নীতিতে বেহাল অবস্থা সামসুল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজ

অনাবৃষ্টিতে আমন আবাদের খরচ দ্বিগুন

আমন আবাদের জন্য কৃষকদের সাধারণত বৃষ্টির ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় সেচই ছিল প্রধান মাধ্যম। এতে ধান আবাদে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। অনেক জমি রয়ে গেছে অনাবাদি। কৃষকদের ভাষ্য, ধানের দাম বেশি না হলে লোকসান গুনতে হবে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, ধানের চারা রোপণে কোনো সমস্যা হয়নি। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উদয়পুর গ্রামের শাহপাড়ার কৃষক আমদ আলী। এবার তিনি ১৫ কাঠা জমিতে সেচের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করেন, কিন্তু পানির অভাবে সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তাঁর খরচ হয়েছিল ১০ হাজার টাকা।

এদিকে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় সময়মতো ধান রোপণ করতে পারেননি কৃষকেরা। তবে দেরিতে হলেও গভীর নলকূপের পানি দিয়ে ধান রোপণ করেন তারা। ধান রোপণের পর এক মাস হয়ে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে একদিকে কৃষি উপকরণ ও জ্বালানি তেলের চড়া দাম, সে সঙ্গে বৃষ্টি না হওয়ায় উৎপাদন খরচ বিঘাপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বেড়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পূরণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। পানির অভাবে ফসলের জমিগুলো ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। অনেক জমির ধান পানির অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক কৃষক ধান নষ্ট হওয়ার ভয়ে শ্যালো মেশিন বা গভীর নলকূপ দিয়ে সেচ দিচ্ছেন।

সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের কৃষক শিমুল মোল্লা বলেন, আমন ধান রোপণ করা হয় বৃষ্টির পানি দিয়ে, কিন্তু এ বছর বৃষ্টি না থাকায় মাঠ ফেটে চৌচির। এজন্য সেচ দিয়ে ফসলের মাটি ভেজাতে অনেক বেশি পানি লাগছে। এতে খরচ বেড়ে গেছে। বাড়তি খরচ করে ধান চাষ করে ন্যায্যমূল্য না পেলে মরণদশা হবে। তিনি বলেন, অন্যবার ১০ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করতেন, কিন্তু এ বছর ৭ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন।

ঝিনাইদহ পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামের কৃষক সোহাগ হোসেন বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় ধান নিয়ে বিপদে পড়তে হয়েছে। ৪ বিঘা জমিতে এবার ধানের চাষ করছি। পুরোটাই সেচের মাধ্যমে পানি দিতে হচ্ছে। আমার ৪ বিঘা জমিতে সেচ দিতে ৪ হাজার টাকা লেগেছে, যা অন্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টি না হলে আরও বিপদে পড়তে হবে। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মো. জাহিদুল করিম বলেন, আমন ধানের রোপণ প্রায় শেষই বলা যায়। আষাঢ়-শ্রাবণ চলে গিয়ে ভাদ্র মাসও চলে যাচ্ছে, কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। কৃষক ভাইদের জমি অনেকটা ফেটে যাচ্ছে। সেজন্য রাতে সেচ দেওয়ার জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তা ছাড়া কৃষক তাঁদের সেচ মেশিনগুলো দিয়ে সেচ দিচ্ছেন। সেচের সঙ্গে বৃষ্টির পানি খুব প্রয়োজন। বৃষ্টির পানি পেলে ধানের আবাদ খুবই ভালো হবে।

এরপরও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সেচের মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব ধান উৎপাদনটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। ঝিনাইদহ কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আজগর আলী বলেন, বৃষ্টি না হলেও জেলায় ধানের চারা রোপণে কোনো সমস্যা হয়নি। কৃষকেরা ব্যক্তি উদ্যোগে সেচের মাধ্যমে চারা রোপণ করেছেন। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৪৫০ হেক্টর জমিতে। ইতিমধ্যে ১ লাখ ২২৮ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে। বাকি জমিতে পাটসহ অন্যান্য ফসল থাকায় এখনো চারা রোপণ করা হয়নি। তবে শতভাগ চারা রোপণ হয়েছে বলা যায়।

Tag :

One thought on “অনাবৃষ্টিতে আমন আবাদের খরচ দ্বিগুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা প্রশাসককে গাছের চারা উপহার দিলেন ইউএনও

অনাবৃষ্টিতে আমন আবাদের খরচ দ্বিগুন

আপডেট সময় ০২:১৯:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

আমন আবাদের জন্য কৃষকদের সাধারণত বৃষ্টির ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় সেচই ছিল প্রধান মাধ্যম। এতে ধান আবাদে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। অনেক জমি রয়ে গেছে অনাবাদি। কৃষকদের ভাষ্য, ধানের দাম বেশি না হলে লোকসান গুনতে হবে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, ধানের চারা রোপণে কোনো সমস্যা হয়নি। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উদয়পুর গ্রামের শাহপাড়ার কৃষক আমদ আলী। এবার তিনি ১৫ কাঠা জমিতে সেচের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করেন, কিন্তু পানির অভাবে সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তাঁর খরচ হয়েছিল ১০ হাজার টাকা।

এদিকে আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় সময়মতো ধান রোপণ করতে পারেননি কৃষকেরা। তবে দেরিতে হলেও গভীর নলকূপের পানি দিয়ে ধান রোপণ করেন তারা। ধান রোপণের পর এক মাস হয়ে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে একদিকে কৃষি উপকরণ ও জ্বালানি তেলের চড়া দাম, সে সঙ্গে বৃষ্টি না হওয়ায় উৎপাদন খরচ বিঘাপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বেড়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পূরণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। পানির অভাবে ফসলের জমিগুলো ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। অনেক জমির ধান পানির অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক কৃষক ধান নষ্ট হওয়ার ভয়ে শ্যালো মেশিন বা গভীর নলকূপ দিয়ে সেচ দিচ্ছেন।

সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের কৃষক শিমুল মোল্লা বলেন, আমন ধান রোপণ করা হয় বৃষ্টির পানি দিয়ে, কিন্তু এ বছর বৃষ্টি না থাকায় মাঠ ফেটে চৌচির। এজন্য সেচ দিয়ে ফসলের মাটি ভেজাতে অনেক বেশি পানি লাগছে। এতে খরচ বেড়ে গেছে। বাড়তি খরচ করে ধান চাষ করে ন্যায্যমূল্য না পেলে মরণদশা হবে। তিনি বলেন, অন্যবার ১০ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করতেন, কিন্তু এ বছর ৭ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন।

ঝিনাইদহ পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামের কৃষক সোহাগ হোসেন বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় ধান নিয়ে বিপদে পড়তে হয়েছে। ৪ বিঘা জমিতে এবার ধানের চাষ করছি। পুরোটাই সেচের মাধ্যমে পানি দিতে হচ্ছে। আমার ৪ বিঘা জমিতে সেচ দিতে ৪ হাজার টাকা লেগেছে, যা অন্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টি না হলে আরও বিপদে পড়তে হবে। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মো. জাহিদুল করিম বলেন, আমন ধানের রোপণ প্রায় শেষই বলা যায়। আষাঢ়-শ্রাবণ চলে গিয়ে ভাদ্র মাসও চলে যাচ্ছে, কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। কৃষক ভাইদের জমি অনেকটা ফেটে যাচ্ছে। সেজন্য রাতে সেচ দেওয়ার জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তা ছাড়া কৃষক তাঁদের সেচ মেশিনগুলো দিয়ে সেচ দিচ্ছেন। সেচের সঙ্গে বৃষ্টির পানি খুব প্রয়োজন। বৃষ্টির পানি পেলে ধানের আবাদ খুবই ভালো হবে।

এরপরও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সেচের মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব ধান উৎপাদনটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। ঝিনাইদহ কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আজগর আলী বলেন, বৃষ্টি না হলেও জেলায় ধানের চারা রোপণে কোনো সমস্যা হয়নি। কৃষকেরা ব্যক্তি উদ্যোগে সেচের মাধ্যমে চারা রোপণ করেছেন। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৪৫০ হেক্টর জমিতে। ইতিমধ্যে ১ লাখ ২২৮ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে। বাকি জমিতে পাটসহ অন্যান্য ফসল থাকায় এখনো চারা রোপণ করা হয়নি। তবে শতভাগ চারা রোপণ হয়েছে বলা যায়।