ঢাকা: গত আগস্ট মাসে ৪৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৬ জন নিহত এবং ৭৯৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৭১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৮ জন নিহত এবং ১৪৯ জন আহত হয়েছে।
মোটরসাইলে দুর্ঘটনা মোট দুর্ঘটনার ৩৮.৭৭ শতাংশ, নিহতের ৩৯.৪৩ শতাংশ ও আহতের ১৮.৭৮ শতাংশ।
আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, ১২৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২৬ জন নিহত হয়েছে।
বুধবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৩৫টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৮.৩৪ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.২০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৫.১১ শতাংশ বাস, ১৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫.৯৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৪.৫৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.৭৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংঘটিতত মোট দুর্ঘটনার ৬১.৪৫ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২১.৯৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২.৯২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ২.৭২ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং ০.৯০ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে মোট দুর্ঘটনার ৩৮.৫৪ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১.০৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩১.০৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৭.২৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.১৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরে এবং ০.৯০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, আগস্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ:
১. দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক অবাধ চলাচল।
২. মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি।
৩. সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা।
৪. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।
৫. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন।
৬. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।
৭. রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বরত ব্যক্তির গাফিলতি। ফিডার রোড এবং আঞ্চলিক রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সুপারিশ:
১. মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা।
২. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান।
৩. ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা।
৪. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা।
৫. সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং অঙ্কন ও স্থাপন করা।
৬. সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ করা।
৭. গণপরিবহন বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।