গত বেশ কয়েক বছর ধরেই শীতকালে ভারতের রাজধানী দিল্লির বাতাস ভয়াবহ দূষণের শিকার হয়। শীত কালের শুষ্ক আবহাওয়া, পার্শ্ববর্তী দুই রাজ্য হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশে বিপুল পরিমাণ খড়-বিচালি পোড়ানো এবং মোটরযান থেকে নিঃসৃত ধোঁয়া মূলত এই দূষণের জন্য দায়ী।
কিন্তু চলতি বছর শীত জেঁকে বসার আগেই বায়ুদূষণ শুরু হয়েছে। বাতাসের গুণাগুণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সূচক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে শনিবার দিল্লির বাতাস ‘গুরুতর’ দূষিত অবস্থায় রয়েছে।
জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচআই) তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই সূচক অনুযায়ী, কোনো শহরের বাতাসের গুণাগুণ যদি ০ থেকে ৫০ পয়েন্টের মধ্যে থাকে তাহলে তা ‘ভালো’, ৫১ থেকে ১০০’র মধ্যে থাকলে ‘সন্তোষজনক’, ১০১ থেকে ২০০ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে ‘সহনীয়’, ২০১ থেকে ৩০০’র মধ্যে থাকলে ‘খারাপ’, ৩০১ থেকে ৪০০’র মধ্যে থাকলে ‘খুব খারাপ’ এবং ৪০১ থেকে ৫০০’র মধ্যে থাকলে ‘গুরুতর’।
একিউআই সূচকের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দুপুর ১ টার দিকে রাজধানী নয়াদিল্লির বিভিন্ন এলাকার বাতাসের গুণাগুণ ছিল ৪০০ থেকে ৪০১ পয়েন্ট। এছাড়া দিল্লির অন্তর্ভূক্ত বা সংলগ্ন বিভিন্ন জেলা শহরের বাতাসের গুণাগুণও প্রায় একই রকম।
সূচকের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দুপুরে বাতাসের গুণাগুণের বিচারে দিল্লির সংলগ্ন ফরিদাবাদের পয়েন্ট ছিল ৩৯৬, বৃহত্তর নয়ডার ৩৯৫, নয়ডার ৩৯০ এবং গাজিয়াবাদের পয়েন্ট ছিল ৩৮০।
দিল্লিতে বায়ু দূষণ শুরু হয় অক্টোবরের শেষ দিক থেকে, দীপাবলী উৎসবের পর। ওই উৎসবে রাজধানীজুড়ে অজস্র বাজি ও পটকা ফোটানোর ফলে বাতাসে বিপুল পরিমাণ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ভেসে বেড়াতে থাকে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতে, জোর বাতাস থাকলে এসব উপকরণ এমনভাবে ভেসে বেড়াতে পারত না। কিন্তু অক্টোবরের শেষ থেকে দিল্লির বাতাস ভারী ও কুয়াশাচ্ছন্ন হতে থাকে। সেই সঙ্গে দিল্লির সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে শীতকালে বিপুল পরিমাণ খড়-বিচুলি পোড়ানো হয়; সেখান থেকেও অতিক্ষুদ্র বিভিন্ন বস্তুকণা ভেসে আসে দিল্লির বাতাসে।
চলতি বছর অবশ্য দীপাবলী উৎসবের সময় দিল্লির বাতাস বিস্ময়করভাবে দূষণমুক্ত ছিল। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জোর হাওয়া ও বৃষ্টিই ছিল এর কারণ।তবে তার কয়েকদিনের মধ্যেই ফের ‘গুরুতর’ দূষণের মুখে পড়ল ভারতের রাজধানীর বাতাস।