ঋণের টাকা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করার পরও আরো টাকা বকেয়া রয়েছে এমণ দাবি করে এক ঋণগ্রহীতার দোকান ও তার ভাড়া বাসায় তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন কামরুল হাছান নামে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখার এক মাঠকর্মী। পরে স্থানীয়রা এসে তালা ভেঙ্গে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই দোকান ও বাসা বুঝিয়ে দেন।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে উপজেলার উনঝুটি গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো. মামুনুর রশিদ বাদী দেবীদ্বার থানায় আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখার ক্রেডিট কন্ট্রোলার কামরুল হাসান, ছোট আলমপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি শফিক ইসলামসহ মোট তিনজনকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রæয়ারী) রাত সাড়ে ৮ টার সময় কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌরসভার ছোট আলমপুর এলাকায় ঋণগ্রহীতা মোসা ফাহিমা আক্তারের স্বামী সাংবাদিক মামুনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মাস্টার ফার্মেসী ও তার ভাড়া বাসায এ ঘটনা ঘটে।
ঋণগ্রহীতা ফহিমা আক্তার ও তার ম্বামী দৈনিক করতোয়া পত্রিকার কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক মামুনুর রশিদ তখন ব্যক্তিগত কাজে গত পরশু থেকে জেলার মুরাদনগরে টনকী গ্রামে অবস্থান করছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে জানাতে চাইলে ভূক্তভোগী মামুনুর রশিদ বলেন, গত ২০২১ দেবীদ্বার উপজেলার আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে ওই ব্যাংকের দেবীদ্বার এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার ক্রেডিট কন্টোলার কামরুল হাছানের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি। ঋণের টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করে আরো বেশি অঙ্কের টাকা ঋণ নেয়া যাবে। এজন্য তাকে বাড়তি ১৫ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করতে হবে।
তিনি বলেন, শর্ত অনুযায়ী গত আরো ৮-৯ মাস আগে ঋণের সম্পূর্ন টাকা শোধ করে দিয়েছি। শর্তানুযায়ী সে ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন না করেই বাড়তি টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু জরুরি কাজে গত পরশু থেকে আমি মুরাদনগর এসেছি। এরই মধ্যে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ওই মাঠ কর্মকর্তা কামরুল আমাকে না জানিয়ে গত মঙ্গলবার হতে বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা পর্যন্ত আমার ভাড়া বাসায় ও দোকানে তালা মেরে রাখেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয়দের সহযোগীতায় দোকানের তালা ভেঙ্গে সাংবাদিক মামুনুরের বাসা ও দোকান বুঝিয়ে দেন।
ঋনগ্রহীতা ফাহিমা আক্তারের স্বামী মামুনুর রশিদের সাথে যোগাযোগের জন্যই দোকানে তালা মেরেছিলাম বলে শনিবার দুপুরে দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবে এসে আলআরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কন্ট্রোলার কামরুল হাসান স্বীকার করেছেন।
শনিবার বিকেলে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক কোম্পানীগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক আবদুর রহমান ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, ঋন আদায়ে কারোর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা বাসায় তালা মারার নিয়ম নেই। এ বিষয়ে ব্যাংকের প্রধান কার্য্যালয়ের নির্দেশানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণধর জানান, ঋন আদায়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা মারার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।