সারাদেশে গত জানুয়ারি মাসে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ৫৪৩টি। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৮০৪ জন ও নিহত হয়েছেন ৩২২ জন।
এসময়ে নৌপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬১টি। এর মধ্যে আহত হয়েছেন ৮৭ জন। আর নিহত হয়েছেন ১৬ জন। পাশাপাশি ২৬টি রেল দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪৬ জন ও নিহত হয়েছে ১১ন জন। অন্যদিকে আকাশপথে কোন দুর্ঘটনা না ঘটলেও বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে অসুস্থ হয়েছেন ৭৮ জন।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো সেভ দ্য রোডের মহাসচিব শান্তা ফারজানার পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। জাতীয় দৈনিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, টেলিভিশন ও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সড়কে মোটরসাইকেলের জন্য লেন না থাকা, অনিয়ন্ত্রিত গতিতে যানবাহন চালানো ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়ায় জানুয়ারি মাসে ১ হাজার ৩২৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৪ জন ও নিহত হয়েছেন ৮০ জন। এছাড়া ৫৭৯টি ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬৫৯ জন এবং নিহত হয়েছেন ৬৭ জন।
পাশাপাশি ৭৬০টি বাস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮৬৫ ও নিহত হয়েছেন ১০১ জন। সিএনজি চালিত অটোরিকশা-নসিমন-করিমনসহ অবৈধ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের ৮৭৬টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৯২৬ জন ও নিহত হয়েছেন ৭৪ জন।
সেভ দ্য রোড বলছে, সড়কপথে দুর্ঘটনা না কমার জন্য রাজধানীসহ সারাদেশে গণপরিবহন সেক্টরে কেবলমাত্র প্রশাসনিক অদক্ষতাই নয়, এজন্য দায়ী দুর্নীতি-অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার। পাশাপাশি যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন সেই সরকারের লেজুড়বৃত্তি করে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া এক শ্রেণির চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট পরিবহন সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করেন। সড়ক, নৌ ও রেলপথে নিরাপদ-নির্বিঘ্নে চলাচল করা আমাদের নাগরিক অধিকার। সেই অধিকার রক্ষায় মালিক-শ্রমিক-প্রশাসনিক এবং সাধারণ জনগণের সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ৭ দফা দাবি জানিয়েছে সেভ দ্য রোড। দাবিগুলো হলো—
১. মীরসরাই ট্রাজেডিতে নিহতদের স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করা।
২. ফুটপাত দখলমুক্ত করে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা দেওয়া।
৩. সড়কে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেসবিহীন যানবাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতীত চালক-সহযোগী নিয়োগ ও হেলপার দিয়ে পরিবহন চালানো বন্ধ করা।
৪. সরকারিভাবে স্থল-নৌ-রেল ও আকাশপথে দুর্ঘটনায় নিহতদের কমপক্ষে ১০ লাখ ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
৫. ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সত্যিকারের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ বাস্তবায়ন করা।
৬. দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সতর্কতা তৈরি করা।
৭ ইউলুপ বৃদ্ধি, পথ-সেতুসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।