রাজধানীর মিরপুর থেকে জমি ও বসতবাড়ির সীমানা নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং তর্ক বিতর্কের জের ধরে বন্ধু রাজুকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মো: শামীম শেখ (৪২)কে গ্রেফতার র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেফতারকৃত মোঃ শামীম শেখ নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার কলাবাড়িয়া চরকান্দিপাড়া গ্রামের মোঃ দাউদ শেখ এর পুত্র। র্যাব জানিয়েছে, ২০০৫ সালে নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানা এলাকায় বন্ধু শামীম এর সাথে জমি সংকান্ত বিরোধ ও তর্ক বিতর্কের জের ধরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে অপর বন্ধু রাজুকে হত্যা করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্হানে পালাতক ছিলেন।
এঘটনার দীর্ঘ ১৭ বছর পর রাজু হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মো: শামীম শেখ (৪২)কে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-৩। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্তর এলাকা থেকে শামীম শেখকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ দুপুরে র্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লেঃ কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, র্যাব-৩ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) ফারজানা হক জানান, ২০০৫ সালে নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানা এলাকায় বন্ধুর সাথে জমি ও বসতবাড়ির সীমানা নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং তর্ক বিতর্কের জের ধরে বন্ধু রাজুকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার বিষয়টি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী শামীম শেখ স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে র্যাবকে জানায়, ২০০৫ সালে তার বন্ধু ভিকটিম রাজুর সাথে তার জমিজমা এবং উভয়ের বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় বাড়ির সীমানা নিয়ে কোন্দল ও তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে ভিকটিম রাজু গ্রেফতারকৃত শামীম শেখকে আঘাত করে।
পরবর্তীতে শামীম শেখ সুস্থ হয়ে রাজুকে মারার পরিকল্পনা করে এবং কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে সে অনুযায়ী সুযোগ খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে সুযোগ বোঝে পরিকল্পনা মোতাবেক শামীম শেখ ও তার ৫ জন সহযোগী মিলে তার বন্ধু রাজুকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই হত্যা মামলার আসামী শামীম শেখ এবং তার অপরাপর ৬ জন সহযোগীকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী একে একে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
র্যাব বলছে, এঘটনার তিন মাস পর আটক শামীম শেখ জামিনে মুক্তি পায়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের জুলাই মাসে বিজ্ঞ আদালত এই মামলার সকল আসামীদেরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষনার পর থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত শামীম শেখ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পলাতক জীবন যাপন করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।