চলতি বছরের ৭ থেকে ৯ মার্চ একটি উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশে আসছেন মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এবরার্ড কাসাউবোন। ঢাকার পক্ষ থেকে এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) মেক্সিকোর অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ফেডেরিকো সালাস লোফতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের বিষয়টি তুললে, স্বাগত জানান মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, এ সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে। ২০২৩ সালে ঢাকায় দূতাবাস খোলার ঘোষণা দেওয়ায় মেক্সিকো সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, ব্যবসায়ী ও উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সফর এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
একই সময়ে মেক্সিকো ছাড়াও বাংলাদেশে নবনিযুক্ত আরও তিন অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরা হলেন- কিউবার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত আলেজান্দ্রো সিমানসাস ম্যারিন, সার্বিয়ার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত সিনিসা প্যাভিক ও কিংডম অব এসওয়াতিনির অনাবাসিক হাই-কমিশনার মেনজি শিফো ডিলামিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠককালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, তাদের এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও এই আস্থাভাজন দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
অনাবাসিক রাষ্ট্রদূতরা এ সময় অত্যন্ত আন্তরিকভাবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ, কোভিড পরিস্থিতি ও রুশ-ইউক্রেন সংকটসহ অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও বহুমুখী সহযোগিতার বিষয়ে মতবিনিময় করেন। তাদের মধ্যে চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে গম, জ্বালানী ও ভোজ্য তেলের সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত হওয়ায় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে- তা সমাধানে উপায় ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিউবার মহান নেতা ফিডেল ক্যাস্ট্রোকে স্মরণ করে বলেন, তিনি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বাংলাদেশ ও কিউবার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কিউবার রাষ্ট্রদূত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ড. মোমেনের কাছে অভিনন্দনপত্র হস্তান্তর করেন।
রোহিঙ্গা সংকটের ব্যাপারে বলতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। তাদের নিজ দেশে এরা ধর্ষণ, সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষে আর এই ধরণের শরণার্থীদের চাপ বহন করা সম্ভব নয়। কারণ, আমাদের সম্পদ ও স্থানের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে অনিশ্চয়তা বা বিলম্ব শরণার্থীদের চরমপন্থা, মানবপাচার, মাদক ও অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত অপরাধে জড়িয়ে ফেলতে পারে। আর এমনটা হলে তা বাংলাদেশ, মিয়ানমারসহ গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দেবে।