ঢাকা ১১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাবি এলাকায় লম্পট বাবার যৌন নির্যাতনে মেয়ের মৃত্যু! নেত্রকোনায় আলোর ফেরিওয়ালা সেজে দুর্নীতির গডফাদার : অধ্যক্ষ ফারুকের বিচার ও অপসারণ দাবি যবিপ্রবির সামাজিক ক্লাব কতৃক -কোয়ান্টাম সাইন্স ফেস্ট -২০২৫ আয়োজন। পবিপ্রবিতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণে জলবায়ু পরিবর্তনে অর্থায়ন বিষয়ক কর্মশালা বকশীগঞ্জে অটোরিকশার ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের! সাংবা‌দিক ও সাহি‌ত্যিক ইমতিয়াজ আহমেদ এর তৃতীয় গল্পগ্রন্থ ‘অসমাপ্ত রাতের ছায়া’ থাক‌ছে বইমেলায় রামপালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তারুণ্যে মেলা অনুষ্ঠিত জুলাই -আগস্ট বিপ্লবে আহত ও শহীদদের স্মরণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান খুলনা কেএমপি নগরীতে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের লিডারসহ গ্রেফতার -২ বকশীগঞ্জে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার-২

মামলার পরেই আত্মগোপনে যান মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মানবতাবিরোধী ২ আসামি

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নকিব হোসেন আদিল সরকার (৬৯) ও মোখলেছুর রহমান মুকুলকে (৬৭) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর দক্ষিণখান ও আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাব-২ জানায়, ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাকচর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ২০১৫ সালে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি নকিব ও মোখলেছুরসহ ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

২০১৫ সালে মামলা দায়েরের পরপরই গ্রেপ্তার ২ জন আত্মগোপনে চলে যান। তারা পরিচয় পাল্টে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল ফোনে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, রায় ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যেই দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপারে সহযোগিতার কারণে মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলীকে রাজাকারদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। টর্চার সেলে নির্যাতনের পর ১৫ আগস্ট সকালে তাকে গুলি করে হত্যা করে।

২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর শহীদ ইউনুস আলীর ছেলে ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেছুর রহমান মুকুলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আদালত বিচারিক কার্যক্রমের জন্য মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১ মামলা রুজু হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় উভয়ের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। ২০১৭ সালে বর্ণিত অভিযোগের তদন্ত শেষে তদন্ত নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেছুর রহমান মুকুলসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামি রায়ের আগেই মারা যান। গত ২৩ জানুয়ারি নকিব ও মোখলেছুরসহ ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার নকিব ও মোখলেছুর মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকায় বাঙ্গালিদের আটক, নির্যাতন, অপহরণ, হত্যা, লুটপাট, ঘরবাড়ি লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই গ্রেপ্তাররা পলাতক ছিলেন। তারা গ্রেপ্তার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করেন ও একাধিকবার বাসা পরিবর্তন করেন। তাদের ছেলে-মেয়েরা আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ায় প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য তারা নিয়মিত অর্থ প্রদান করতেন। আত্মগোপনে থাকার সময় তারা জনসমাগম স্থান, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও তার ব্যক্তিগত পরিচয় প্রকাশ পায় এমন স্থান এড়িয়ে চলতেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাবি এলাকায় লম্পট বাবার যৌন নির্যাতনে মেয়ের মৃত্যু!

মামলার পরেই আত্মগোপনে যান মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মানবতাবিরোধী ২ আসামি

আপডেট সময় ০৩:০১:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নকিব হোসেন আদিল সরকার (৬৯) ও মোখলেছুর রহমান মুকুলকে (৬৭) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর দক্ষিণখান ও আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাব-২ জানায়, ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাকচর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ২০১৫ সালে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি নকিব ও মোখলেছুরসহ ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

২০১৫ সালে মামলা দায়েরের পরপরই গ্রেপ্তার ২ জন আত্মগোপনে চলে যান। তারা পরিচয় পাল্টে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল ফোনে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, রায় ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যেই দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপারে সহযোগিতার কারণে মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ আলীকে রাজাকারদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। টর্চার সেলে নির্যাতনের পর ১৫ আগস্ট সকালে তাকে গুলি করে হত্যা করে।

২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর শহীদ ইউনুস আলীর ছেলে ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেছুর রহমান মুকুলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আদালত বিচারিক কার্যক্রমের জন্য মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১ মামলা রুজু হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় উভয়ের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। ২০১৭ সালে বর্ণিত অভিযোগের তদন্ত শেষে তদন্ত নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেছুর রহমান মুকুলসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামি রায়ের আগেই মারা যান। গত ২৩ জানুয়ারি নকিব ও মোখলেছুরসহ ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার নকিব ও মোখলেছুর মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকায় বাঙ্গালিদের আটক, নির্যাতন, অপহরণ, হত্যা, লুটপাট, ঘরবাড়ি লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই গ্রেপ্তাররা পলাতক ছিলেন। তারা গ্রেপ্তার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করেন ও একাধিকবার বাসা পরিবর্তন করেন। তাদের ছেলে-মেয়েরা আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ায় প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য তারা নিয়মিত অর্থ প্রদান করতেন। আত্মগোপনে থাকার সময় তারা জনসমাগম স্থান, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও তার ব্যক্তিগত পরিচয় প্রকাশ পায় এমন স্থান এড়িয়ে চলতেন।