ঢাকা ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ওয়ারিশান জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার জমি আত্মসাৎ! বেদখল হয়ে যাচ্ছে প্রাচীন মাজার

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউপির দেবীপুর গ্রামের মৃত আমজাদ আলীর পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক আলী গংদের প্রায় ১ একর পৈত্রিক সম্পত্তি ওয়ারিশান জালিয়াতির মাধ্যমে দখলের করছেন স্থানীয় একটি চক্র।ওই চক্রের বিরুদ্ধে দখলকৃত জমি ঘেষা প্রাচীন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন হযরত নাসিম শাহ আউলিয়া ওরফে গঙ্গাজল মাজারের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে।

যুগের পর যুগ ওই মুক্তিযোদ্ধা আপোষ-মীমাংসা করার চেষ্টা করলেও আজ পর্যন্ত কোন কোনো বিচার পাননি।দখলদারদের জমির কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হলে তারা তা না দেখিয়ে উল্টো হুমকি প্রদান করছেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই মুক্তিযোদ্ধার পৈত্রিক সম্পত্তি উপজেলার ২নং চৌমুহনী ইউপির দেবীপুর গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের ৪ পুত্র মৃত আবদুল মোতালেব,আব্দুল মন্নাফ, আব্দুর রহিম ও আব্দুর রহমানের নামে উপজেলার দেবীপুর মৌজার কয়েকটি খতিয়ানের ১২৮ জেএল নাম্বারে ফাইনাল রেকর্ডভুক্ত রয়েছে।হবিগঞ্জ জেলা ও মাধবপুর চারাভাঙ্গাস্থ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে বিগত দলিলাদির রেকর্ড তল্লাসী দিয়েও এদের নামে কোন বৈধ দলিল পাওয়া যায় নি। সুত্রে জানা গেছে,উপজেলার দেবীপুর মৌজার এসএ খতিয়ানের ৪৫৫ ও ৬৫৬ গঙ্গাজলের পুকুর ও পুকুরপাড় দাগে মোট ১০৩ শতক জায়গা এসএ মালিক মৃত আমজাদ আলীর ওয়ারিশ মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকসহ ১০ জন ওয়ারিশ রয়েছে।যারা সবাই ওই জমির হিস্যানুযায়ী প্রাপ্য।

স্থানীয়সুত্রে আরো অভিযোগ পাওয়া গেছে,ওই চক্রটি ঐতিহ্যবাহী নাসিম শাহ আউলিয়ার ওরফে গঙ্গাজল মাজারের জায়গা দখল করেছেন।এছাড়াও মাজারের পাশ অংশ ভেঙ্গে গেলেও সেখানে গাইড ওয়াল নির্মাণে দেয়া হচ্ছে। এলাকাবাসী দাবী গঙ্গাজল মাজারের পাড় ও গঙ্গাজলের পুকুর ব্যক্তিমালিকানায় হতে পারে না ।পুকুরের চারপাশে এটি একটি পুরনো কবরস্থান যে বা যাহারা এটি নিজেদের নামে করেছে সেটি সুখাধিকার আইনে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা। মাজারের খাদেম শামসুল ইসলাম ওরফে আসাম উদ্দিন জানান,এই আওলিয়ার মাজারটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন কিছু লোকের চক্রান্তের কারণে জিয়ারতকারীদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। মাজারের উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।মাজারখানি পুকুরে ভেঙে যাচ্ছে সেটি মেরামতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া মাজারের মোমবাতি জালানো ও ঔরশ পালনে আমাদেকে বিরক্তও করছে ওই চক্রটি। তিনি আরো বলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক আলীও অন্যান্য ওয়ারিশগনও তার পৈত্রিক সম্পত্তি হিস্যা মাজারকে দিতে চান কিন্তু একটি চক্র জালিয়াতির মাধ্যমে সেই জমি দখল করে আছে।আমরা সঠিক তদন্ত চাই।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক আলী জানান, আমার পৈত্রিক ১ একর অধিক জমি অন্যান্য ভাই-বোনদের না জানিয়ে কে বা কারা বিক্রি ও ক্রয় করেছে আমরা জানি না।পরে দেখছি ওই জমি আমার গ্রামের আব্দুল মোতালেব, আব্দুল মন্নাফ আব্দুর রহিম, আব্দুর রহমান এর নামের নামে ফাইনাল রেকর্ড।আমরা এই জমি মাজারকে দিতে চাই।আমার বোনরা দারিদ্রতার মধ্যে জীবন যাপন করছে।।আমরা এই দীর্ঘমেয়াদী জালিয়াতির বিচার চাই। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধার পৈতৃক সম্পত্তির রেকর্ডধারী মালিক আব্দুল মন্নাফ,আব্দুর রহিম ও আব্দুর রহমানদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান,তারা ওই জমি মৃত আমজাদ আলীর ২ ছেলে মৃত সিকান্দার আলী ও মহরম আলীর কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। এর বেশি কিছু বলতে আমরা আগ্রহী নই। সংস্লিষ্ট মনতলা ভূমি অফিসের ইউপি উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তহসিলদার মোঃকুতুব উদ্দিন জানান,পুরনো কবরস্থান,মাজার বা পথরাস্তা বন্ধ করার কোনো বিধান নেই। এলাকাবাসীর সাক্ষী ও প্রমাণের ভিত্তিতে সুখাধিকার আইনে এগুলা খাস খতিয়ানভুক্ত হতে হতে পারে।আরো বলেন,বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক আলী পৈত্রিক সম্পদ জালিয়াতির বিষয়টিও তদন্ত সাপেক্ষে সাপেক্ষে বিচারের দাবী রাখে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বোরহানউদ্দিনে খাল পরিস্কার – পরিচ্ছন্নতার অভিযানের উদ্বোধন

ওয়ারিশান জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার জমি আত্মসাৎ! বেদখল হয়ে যাচ্ছে প্রাচীন মাজার

আপডেট সময় ০৫:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৩

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউপির দেবীপুর গ্রামের মৃত আমজাদ আলীর পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক আলী গংদের প্রায় ১ একর পৈত্রিক সম্পত্তি ওয়ারিশান জালিয়াতির মাধ্যমে দখলের করছেন স্থানীয় একটি চক্র।ওই চক্রের বিরুদ্ধে দখলকৃত জমি ঘেষা প্রাচীন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন হযরত নাসিম শাহ আউলিয়া ওরফে গঙ্গাজল মাজারের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে।

যুগের পর যুগ ওই মুক্তিযোদ্ধা আপোষ-মীমাংসা করার চেষ্টা করলেও আজ পর্যন্ত কোন কোনো বিচার পাননি।দখলদারদের জমির কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হলে তারা তা না দেখিয়ে উল্টো হুমকি প্রদান করছেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই মুক্তিযোদ্ধার পৈত্রিক সম্পত্তি উপজেলার ২নং চৌমুহনী ইউপির দেবীপুর গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের ৪ পুত্র মৃত আবদুল মোতালেব,আব্দুল মন্নাফ, আব্দুর রহিম ও আব্দুর রহমানের নামে উপজেলার দেবীপুর মৌজার কয়েকটি খতিয়ানের ১২৮ জেএল নাম্বারে ফাইনাল রেকর্ডভুক্ত রয়েছে।হবিগঞ্জ জেলা ও মাধবপুর চারাভাঙ্গাস্থ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে বিগত দলিলাদির রেকর্ড তল্লাসী দিয়েও এদের নামে কোন বৈধ দলিল পাওয়া যায় নি। সুত্রে জানা গেছে,উপজেলার দেবীপুর মৌজার এসএ খতিয়ানের ৪৫৫ ও ৬৫৬ গঙ্গাজলের পুকুর ও পুকুরপাড় দাগে মোট ১০৩ শতক জায়গা এসএ মালিক মৃত আমজাদ আলীর ওয়ারিশ মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকসহ ১০ জন ওয়ারিশ রয়েছে।যারা সবাই ওই জমির হিস্যানুযায়ী প্রাপ্য।

স্থানীয়সুত্রে আরো অভিযোগ পাওয়া গেছে,ওই চক্রটি ঐতিহ্যবাহী নাসিম শাহ আউলিয়ার ওরফে গঙ্গাজল মাজারের জায়গা দখল করেছেন।এছাড়াও মাজারের পাশ অংশ ভেঙ্গে গেলেও সেখানে গাইড ওয়াল নির্মাণে দেয়া হচ্ছে। এলাকাবাসী দাবী গঙ্গাজল মাজারের পাড় ও গঙ্গাজলের পুকুর ব্যক্তিমালিকানায় হতে পারে না ।পুকুরের চারপাশে এটি একটি পুরনো কবরস্থান যে বা যাহারা এটি নিজেদের নামে করেছে সেটি সুখাধিকার আইনে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা। মাজারের খাদেম শামসুল ইসলাম ওরফে আসাম উদ্দিন জানান,এই আওলিয়ার মাজারটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন কিছু লোকের চক্রান্তের কারণে জিয়ারতকারীদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। মাজারের উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।মাজারখানি পুকুরে ভেঙে যাচ্ছে সেটি মেরামতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া মাজারের মোমবাতি জালানো ও ঔরশ পালনে আমাদেকে বিরক্তও করছে ওই চক্রটি। তিনি আরো বলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক আলীও অন্যান্য ওয়ারিশগনও তার পৈত্রিক সম্পত্তি হিস্যা মাজারকে দিতে চান কিন্তু একটি চক্র জালিয়াতির মাধ্যমে সেই জমি দখল করে আছে।আমরা সঠিক তদন্ত চাই।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক আলী জানান, আমার পৈত্রিক ১ একর অধিক জমি অন্যান্য ভাই-বোনদের না জানিয়ে কে বা কারা বিক্রি ও ক্রয় করেছে আমরা জানি না।পরে দেখছি ওই জমি আমার গ্রামের আব্দুল মোতালেব, আব্দুল মন্নাফ আব্দুর রহিম, আব্দুর রহমান এর নামের নামে ফাইনাল রেকর্ড।আমরা এই জমি মাজারকে দিতে চাই।আমার বোনরা দারিদ্রতার মধ্যে জীবন যাপন করছে।।আমরা এই দীর্ঘমেয়াদী জালিয়াতির বিচার চাই। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধার পৈতৃক সম্পত্তির রেকর্ডধারী মালিক আব্দুল মন্নাফ,আব্দুর রহিম ও আব্দুর রহমানদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান,তারা ওই জমি মৃত আমজাদ আলীর ২ ছেলে মৃত সিকান্দার আলী ও মহরম আলীর কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। এর বেশি কিছু বলতে আমরা আগ্রহী নই। সংস্লিষ্ট মনতলা ভূমি অফিসের ইউপি উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তহসিলদার মোঃকুতুব উদ্দিন জানান,পুরনো কবরস্থান,মাজার বা পথরাস্তা বন্ধ করার কোনো বিধান নেই। এলাকাবাসীর সাক্ষী ও প্রমাণের ভিত্তিতে সুখাধিকার আইনে এগুলা খাস খতিয়ানভুক্ত হতে হতে পারে।আরো বলেন,বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক আলী পৈত্রিক সম্পদ জালিয়াতির বিষয়টিও তদন্ত সাপেক্ষে সাপেক্ষে বিচারের দাবী রাখে।