রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায়,জাহাজকোম্পানী মোড় ও বিকেলে রাজা রামমোহন মার্কেটের সামনে পাতলা কম্বল গায়ে জড়ানো এ নারীকে দেখে অনেকেই জানতে চায় কোলের সন্তান সম্পর্কে। আশেপাশে কিছু মানুষের ভিড়। এরই মধ্যে ছুটে এসেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শক্ত করে কোলে আঁকড়ে ধরে আছে কি?এমন ঠান্ডায় বাইরে অবস্থানের কারণ জানতে চাইতেই মহিলা কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
আমরা কথা বলে জানতে পারলাম, তার কোলে যে মৃত্যু সন্তান শুয়ে আছে সে তারই নাড়িছেঁড়া সন্তান, তবে শিশুটি বেঁচে নেই। তা জানা সত্ত্বেও সন্তানের বেঁচে উঠার আশায় কোলে নিয়ে দিনভর এদিক সেদিক ছুটেছেন অবুঝ মনের এই মা। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা নাড়া দিয়েছে স্থানীয় লোকজন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সহ সাধারণ লোকদের চোখে পানি চলে আসে। পুলিশের বরাত দিয়ে জানা যায়, ওই নারী কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। বিয়ে না হলেও এক অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। আর সেই সম্পর্কের ফসল এই সন্তান। গত ১৭ দিন আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ এলাকায় নবজাতকের জন্ম দেন তিনি।
এরপর সন্তানকে নিয়ে তার নিজ বাড়িতে গেলে সৎ বাবা তাকে মারধর করে শিশুটিকে বিক্রি করে দিতে বলেন। এ নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি রংপুর শহরে চলে আসেন।সন্তান নিয়ে ঘুরে ঘুরে যেখানে রাত হয় সেখানেই খোলা জায়গায় কোনোরকমে রাত যাপন করেন। এতে অযত্ন ঠান্ডা জনিত কারণে একপর্যায়ে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে শুক্রবার সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান তিনি। সেখানে দায়িত্ব রত চিকিৎসক জানান, শিশুটি মারা গেছে।কিন্তু এই অভাগি মা মানতে নারাজ তার সন্তান এখনো জীবিত আছে। এই ধারণা নিয়ে তার মৃত্যু সন্তান কোলে নিয়ে পরম যত্নে আগলে রাখছে। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেল কে এই অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার? তাকে খোঁজে বের করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চয়ই সঠিক আইনি পদক্ষেপ নিবেন।