বিএনপি নেতাকর্মীদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যে অভ্যুত্থান শুরু হয়েছে তা বন্ধ করা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আমাদের ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে সরকার। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। আর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গিয়ে বলেন, যুদ্ধ চাই না, নিষেধাজ্ঞা চাই না। শাওন, আব্দুর রহিম ও নুর আলমের মৃত্যুতে মানুষের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, যে অভ্যুত্থান শুরু হয়েছে, এই অভ্যুত্থানকে বন্ধ করা সম্ভব হবে না। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। মুন্সীগঞ্জে যুবদলকর্মী শহীদুল ইসলাম শাওন হত্যার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী যুবদল এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
দেশের মানুষ জেগে উঠেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি আবারও আহ্বান করছি, এ দেশকে রক্ষা করার জন্য, বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর কথা বলছি না। ক্ষমতায় বসানোর কথা বলছি বাংলাদেশের মানুষকে। কারণ ক্ষমতার মালিক হচ্ছে জনগণ। তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চাই। মানুষের জীবনের অধিকার চাই, নিরাপত্তা চাই। কথায় কথায় গুলি করবেন, কথায় কথায় ফেলে দেবেন, কথায় কথায় আগুন জ্বালিয়ে দেবেন, এ দেশের মানুষ আর এসব সহ্য করবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দুর্বার গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পরিষ্কার কথা, এখনও সময় আছে, পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন এবং তাদের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করুন।
তিনি বলেন, মুন্সীগঞ্জে শুধুমাত্র শাওনকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি তারা। এরপর তারা বিএনপি নেতার কারখানা জ্বালিয়ে দিয়েছে। বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। এভাবে মুন্সীগঞ্জে একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সারা দেশে একটি ত্রাস সৃষ্টি করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আজ শাওনের বাবার কণ্ঠে আমরা আহাজারি শুনিনি, তার চোখে অশ্রু দেখেছি। একই সঙ্গে তার চোখে আগুন দেখেছি। বজ্রকণ্ঠে তিনি বলেছেন, আমি আপস করব না। তোমরা যতই বলো পেছন থেকে ইটের আঘাতে সে (শাওন) মারা গেছে, বিএনপির লোকেরা তাকে মেরেছে। শাওনের ডেথ সার্টিফিকেটে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে যে, মেসিভ ব্রেইন ইনজুরি ডিউ টু গান শট। বন্দুকের গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে। তাই আর মিথ্যাচার করবেন না। মিথ্যাচার করে জনগণকে বোকা বানিয়ে রেখেছেন।
যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।