ঢাকা ০৩:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলেমদের মুক্তি দিয়ে দেশকে দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচান : হেফাজত আমির

আলেমদের দ্রুত মুক্তি দিয়ে আসন্ন দুর্ভিক্ষ থেকে দেশকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলিস্তানের কাজী বশীর মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

হেফাজত আমির বলেন, হযরত ইউসুফ (আ.) যখন কারাগারে বন্দি ছিলেন তখন ওই দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা গিয়েছিল। মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সর্বশেষ নবী। তার পর পৃথিবীতে আর কোনো নবী রাসুলের আগমন ঘটবে না। ওলামারাই নবী-রাসুলের উত্তরসূরি। তাদের বন্দি রেখে দেশে শান্তি এবং সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। দেশের এই ক্রান্তিকালে অশান্তি ও দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রথমত হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। গ্রেপ্তারকৃতদের দ্রুত মুক্তি দিয়ে মজলুমদের কান্না বন্ধ করুন।

তিনি আরও বলেন, আল্লাহর ক্রোধ ও অসন্তুষ্টিকে ভয় করুন। বিশেষ করে মজলুম হাফেজ, আলেমদের চোখের পানিকে ভয় করুন। এসব জুলুম ও নির্যাতনের কারণে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

হেফাজত আমির বলেন, ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফি কর্তৃক ঘোষিত হেফাজতের ১৩ দফা দাবিতে কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা ছিল না। মুসলমানের স্বার্থ সংরক্ষণে এসব দাবি বাস্তবায়নে যখনই ডাক আসবে তখন দল মত নির্বিশেষে সবাইকে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এজন্য সকলের মানসিক প্রস্তুতিও থাকতে হবে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে আমাদের অনেক আলেম-ওলামা কারাগারে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন। তাদের পরিবার ও প্রতিষ্ঠানগুলো আজ ধ্বংসের মুখে। কারাগারে আলেমদের কেউ কেউ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন।

জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে হেফাজত সাত দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো, অবিলম্বে সংঘটনটির নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি, হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, ইসলাম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস, কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা, শিক্ষা কারিকুলামে ধর্ম শিক্ষা ও পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা, জাতীয় শিক্ষা কমিশনে হাইয়াতুল উলইয়ার প্রতিনিধি থাকা বাধ্যতামূলক করা এবং বিশ্ব ইজতেমায় বিতর্কিত মাওলানা সাদকে আসার অনুমতি না দেওয়া।

এসব দাবি বাস্তবায়নে দলটি রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে শানে রেসালত সম্মেলন করবে বলে জানানো হয়। এছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় কমিটি ঘোষণা করবে দলটি।

সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী ও মুফতী জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আলেমদের মুক্তি দিয়ে দেশকে দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচান : হেফাজত আমির

আপডেট সময় ০৮:১৩:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২

আলেমদের দ্রুত মুক্তি দিয়ে আসন্ন দুর্ভিক্ষ থেকে দেশকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলিস্তানের কাজী বশীর মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

হেফাজত আমির বলেন, হযরত ইউসুফ (আ.) যখন কারাগারে বন্দি ছিলেন তখন ওই দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা গিয়েছিল। মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর সর্বশেষ নবী। তার পর পৃথিবীতে আর কোনো নবী রাসুলের আগমন ঘটবে না। ওলামারাই নবী-রাসুলের উত্তরসূরি। তাদের বন্দি রেখে দেশে শান্তি এবং সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। দেশের এই ক্রান্তিকালে অশান্তি ও দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রথমত হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। গ্রেপ্তারকৃতদের দ্রুত মুক্তি দিয়ে মজলুমদের কান্না বন্ধ করুন।

তিনি আরও বলেন, আল্লাহর ক্রোধ ও অসন্তুষ্টিকে ভয় করুন। বিশেষ করে মজলুম হাফেজ, আলেমদের চোখের পানিকে ভয় করুন। এসব জুলুম ও নির্যাতনের কারণে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

হেফাজত আমির বলেন, ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফি কর্তৃক ঘোষিত হেফাজতের ১৩ দফা দাবিতে কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা ছিল না। মুসলমানের স্বার্থ সংরক্ষণে এসব দাবি বাস্তবায়নে যখনই ডাক আসবে তখন দল মত নির্বিশেষে সবাইকে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এজন্য সকলের মানসিক প্রস্তুতিও থাকতে হবে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে আমাদের অনেক আলেম-ওলামা কারাগারে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন। তাদের পরিবার ও প্রতিষ্ঠানগুলো আজ ধ্বংসের মুখে। কারাগারে আলেমদের কেউ কেউ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন।

জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে হেফাজত সাত দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো, অবিলম্বে সংঘটনটির নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি, হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, ইসলাম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস, কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা, শিক্ষা কারিকুলামে ধর্ম শিক্ষা ও পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা, জাতীয় শিক্ষা কমিশনে হাইয়াতুল উলইয়ার প্রতিনিধি থাকা বাধ্যতামূলক করা এবং বিশ্ব ইজতেমায় বিতর্কিত মাওলানা সাদকে আসার অনুমতি না দেওয়া।

এসব দাবি বাস্তবায়নে দলটি রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে শানে রেসালত সম্মেলন করবে বলে জানানো হয়। এছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় কমিটি ঘোষণা করবে দলটি।

সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী ও মুফতী জসিম উদ্দিন প্রমুখ।