বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আজকে যখন সরকার দেখছে তাদের দিন শেষ, তখন তারা বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় থাকতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে বিজয় র্যালি বের করে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। র্যালিতে অংশ নিয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, অনেক কথা বলেছেন। আপনার সব কথার জবাব আমরা দেব না। শুধু মনে করিয়ে দিতে চাই—এই আওয়ামী লীগই স্বাধীনতার পরে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল গঠন করেছিল। এখন গত ১৪ বছরে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, লুটপাট করেছে।
‘বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে’—প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রসঙ্গে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, সরকার দিশেহারা হয়ে নানা কথা বলছে। আমরা ১০টি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছি। যেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। বিশৃঙ্খলা তারা (আওয়ামী লীগ) সৃষ্টি করেছে। ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদের অন্যায়কে ধামাচাপা দিতে বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
বিএনপির ১০টি সমাবেশে জনগণ রায় দিয়েছে, এই সরকারকে তারা দেখতে চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের আজ একই দাবি—এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে চায়। তাই জনগণকে রক্ষা করতে আমরা ১০ দফা দিয়েছি। এই দাবি জনগণের দাবি। এই দাবির সমর্থনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে যুগপৎ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছি। আজকে আবার আহ্বান জানাতে চাই—আসুন দেশপ্রেমিক, গণতন্ত্রকামী দলমত নির্বিশেষে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলে এই দেশকে বাঁচাই।
র্যালিতে বিএনপি ও দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। দুপুর ৩টা ৩৫ মিনিটে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে র্যালির উদ্বোধন করা হয়। পরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালি শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল, কাকরাইল, শান্তিনগর ও মালিবাগ মোড় ঘুরে আবার নয়াপল্টনে এসে বেলা ৫টার পর র্যালি শেষ হয়। র্যালিতে নেতৃত্ব দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
র্যালির সামনে ছিল বিএনপির অঙ্গসংগঠন মুক্তিযোদ্ধা দল। আর র্যালির শেষের প্রান্তে ছিল আরেক অঙ্গসংগঠন যুবদল। জাতীয় পতাকার পাশাপাশি বিএনপির দলীয় পতাকা, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, ঘোড়ার গাড়ি ও পিকআপ ভ্যানে দলীয় সংগীতসহ নানা দেশাত্মবোধক গান বাজিয়ে নেতাকর্মীরা র্যালি রঙিন করে তোলেন।
এছাড়া র্যালিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের মতো করে একজনকে সাজিয়ে নিয়ে আসা হয়। তার পাশে প্রতীকী ট্যাংকও রাখা হয়। এর বাইরে র্যালিতে দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বড়-বড় ছবিও শোভা পায়। একইসঙ্গে দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
বিএনপির বিজয় র্যালিকে কেন্দ্র করে বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। কয়েক শতাধিক পুলিশসহ সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়।
র্যালিতে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মো. শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমদ আজম খান, আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ আরও অনেকে।