রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় একটি ইটভাটায় জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। ৮ নম্বর ইউনিয়নের পাগলার হাট এলাকায় অবস্থিত ASB ব্রিকস, যা বর্তমানে খায়রুল ব্রিকস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ নামে পরিচালিত হচ্ছে, সেটির মেইন গেটে তালা লাগিয়ে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আহসান হাবিব রুমনের বিরুদ্ধে।
প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান মালিক খায়রুল ইসলাম, যিনি ঢাকায় একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি জানান, ইটভাটাটি মূল মালিক ছালেহা বেগম, মৃত শাহ রেজাউল করিম সেলিমের কাছ থেকে দলিলমূলে ক্রয় করেন। এর আগে আহসান হাবিব রুমন একই ভাটা কিনতে চুক্তিবদ্ধ হলেও অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হন। পরে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সরকারি স্ট্যাম্পে একটি লিখিত সমঝোতা হয়, যার ভিত্তিতে খায়রুল চূড়ান্তভাবে দলিল করে ভাটার মালিকানা নেন।
তবে অভিযোগ রয়েছে, (১ জুন) দুপুরে আহসান হাবিব রুমন নিজ গ্রাম তাহিয়ারপুর থেকে লোকজনসহ ভাটায় উপস্থিত হয়ে প্রধান ফটকে তালা লাগান এবং খায়রুলের কর্মীদের বের করে দেন।
জানা গেছে, বর্তমানে ইটভাটাটির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন খায়রুল ইসলামের শ্বশুর। রবিবার দুপুরে আহসান হাবিব রুমন ও তার সহযোগীরা ভাটায় গিয়ে তাকে আটকে রাখেন এবং হুমকি দেন। তারা সাফ জানিয়ে দেন—ভাটায় কোনো প্রকার ইট বেচাকেনা চলবে না। এরপরই তারা প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন এবং কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
অন্যদিকে আহসান হাবিব রুমন সম্পূর্ণ ভিন্ন দাবি করেছেন। তার ভাষ্য, “এই চুক্তিটি ভুয়া। সেখানে যে স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে, তা আমার নয়। এই ভাটার প্রকৃত মালিকানা আমার, এবং আমি ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠা করতে এসেছি। এখানে আমারও বড় অংকের বিনিয়োগ রয়েছে।”
এদিকে একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ভাটার মালিকানা সংক্রান্ত দলিল প্রক্রিয়ার সময় অবৈধভাবে দখলকারী আহসান হাবিব রুমন নিজে উপস্থিত থেকে দলিলে স্বাক্ষর করছেন। ভিডিওটি থেকে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় যে, রুমন দলিল প্রক্রিয়ার সময় সম্মত ছিলেন এবং স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর করেছেন। ফলে পরবর্তীতে চুক্তিকে ভুয়া বলে দাবি করা প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
কাগজপত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সালেহা বেগমের কাছ থেকে খায়রুল ইসলাম কর্তৃক ইটভাটাটি লীজের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণভাবে আইনানুগভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৫ সালের ৯ মার্চ নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিটসহ দলিল সম্পাদন করা হয়, যার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার কোনো আইনি উদ্যোগ অবৈধভাবে দখলকারী রুমন এখনো গ্রহণ করেননি। এসব তথ্য প্রাথমিকভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটি রুমনের সম্মতিতেই সম্পন্ন হয়েছিল।
বর্তমান মালিক খায়রুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, এটি একটি পরিকল্পিত জবরদখল। তিনি দ্রুত ভাটার উৎপাদন স্বাভাবিক করতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও যৌথবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।