করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ন্যাসাল ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ভারত। দেশটির সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন এ অনুমোদন দিয়েছে। ফলে প্রথমবার নিজেদের তৈরি সুঁই ছাড়া ভ্যাকসিন বাজারে আনতে যাচ্ছে ভারত বায়োটেক। ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের হেটেরোলগাস বুস্টার ডোজ হিসেবে এই ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে।
কোনো ব্যক্তি ভাইরাস মোকাবিলায় প্রাথমিকভাবে যেকোনো একটি ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে পারেন। পরে ভাইরাস মোকাবিলায় অন্য ভ্যাকসিনের ব্যবহারকে হেটেরোলগাস বুস্টার ডোজ বলা হয়। ভারতের বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের তৈরি কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন ব্যবহার করেছেন। অনুমতি সাপেক্ষে তারা বুস্টার ডোজ হিসেবে ভারত বায়োটেকের তৈরি ভ্যাকসিন বুস্টার ডোজ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
এদিকে ভারত বায়োটেক দাবি করেছে, করোনা মোকাবিলায় তৈরি ইন্ট্রান্যাসাল ভ্যাকসিন ইনকোভ্যাক অর্থাৎ BBV154 নিরাপদ বলেই পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে। এর ফেজ থ্রির নিয়ন্ত্রিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সহনীয় এবং ইমিউনোজেনিক বলে প্রমাণিত হয়েছে বলেও দাবি করেছে তারা।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, আগে সফলভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হয়। ইতোমধ্যে এই ভ্যাকসিন প্রায় ৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও দাবি ভারত বায়োটেকের।
ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর কৃষ্ণা এলা জানিয়েছেন, ইনকোভ্যাক ইন্ট্রান্যাসাল ভ্যাকসিন এবং হেটেরোলগাস বুস্টার ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা শুধু ভারতে নয়, বিশ্বের কাছেও নজির। এই মুহূর্তে করোনা ভ্যাকসিনের চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও ভবিষ্যতের সংক্রামক রোগের মোকাবিলায় প্রস্তুতি রাখতেই গবেষণা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ভবিষ্যতের প্রস্তুতির জন্য ভিন্ন ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এই ভ্যাকসিন তৈরি করতে ভারত বায়োটেক শিম্পাঞ্জির কোল্ড ভাইরাস ব্যবহার করেছে। এই গবেষণায় সাহায্য করেছে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি সেন্ট লুইস। নাকের ভেতরে কিংবা শ্লেষ্মায় করোনাভাইরাস থাকলে তার ওপরে গিয়ে কাজ করে এই ন্যাসাল ভ্যাকসিন, হাতে দেওয়া ভ্যাকসিন যে কাজ করতে পারে না। এটি ইমিউনোগ্লোবিউলিন নামে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা সংক্রমণকে বাধা দেয় এবং মানুষের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়।