জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন দলটির চিফ প্যাট্রন ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। সেই সঙ্গে দলের ঐক্য বজায় রাখতে জাপাকে বিভক্ত করার কোনো ধরনের ইচ্ছা নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রোববার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রায় ৫ মাস ব্যাংককে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন তিনি।
তাকে স্বাগত জানাতে জিএম কাদেরের বিমানবন্দরে না আসার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রওশন এরশাদ বলেন, আসেনি তো, কী হয়েছে? ওনার কোনো সমস্যা আছে মনে হয়। এতে আমি কোনও সমস্যা দেখছি না।
জিএম কাদেরর সঙ্গে তার কোনো দ্বন্দ্ব আছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, না। জিএম কাদেরর সঙ্গে আগামীতে একসঙ্গে চলবেন কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিশ্চয় চলব।
লিখিত বক্তব্যে এরশাদ পত্নী বলেন, আমি সবসময় জাপার ঐক্য চাই। আমার স্বামী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের কত কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। আমি দেখেছি গত ৩২ বছরে দলের নেতাকর্মীরা কতটা কঠোর পরিশ্রম করেছেন। পার্টিকে বিভক্ত করার প্রশ্নই উঠে না।
তিনি বলেন, আমি ঢাকায় ফিরে এসেছি। সব এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং অন্যান্যদের সঙ্গে যে কোনো বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে বসব। আমি নিশ্চিত, সেই ভুল বোঝাবুঝি দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে শিগগিরই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ফিরতে পারব। পার্টিকে দুর্বল করতে কিছু ষড়যন্ত্র হতে পারে। যেমনটি ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০১৪ সালে দেখেছি।
বিএনপির অধীনে জাপা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, আমি ও আমার নাবালক সন্তানসহ দলের হাজার হাজারও নেতাকর্মী জেল খেটেছিলেন। তখন আমাদের জনসভাও করতে দেওয়া হয়নি।
বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন বজায় রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন রিরোধীদলীয় নেতা। তার ভাষ্য, দুর্নীতি, অর্থনীতিতে অব্যবস্থাপনা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির মতো কিছু ত্রুটি রয়েছে। আমি নিশ্চিত, প্রধানমন্ত্রী এসব বিষয়ে অবগত আছেন।
এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি এখন ঠিক আছি, কিন্তু পায়ে কিছু সমস্যা আছে। ফিজিওথেরাপি নিচ্ছি। ব্যাংককে আমার চিকিৎসার সময় সহযোগিতা এবং স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
আসন্ন রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে লাঙ্গলের মেয়রপ্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার নাম জানান রওশন এরশাদ।
এসময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার, সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা ও সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশীদ।