ঢাকা ০২:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজবাড়ী কালুখালীতে মনমুগ্ধকর আয়োজনে নববর্ষ ১৪৩২ পালিত লামা মিরিঞ্জা ভ্যালীর সড়ক নির্মাণ পর্যটকসহ স্থানীয়দের প্রাণের দাবি গাবতলীর নবাগত ওসির সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় করেন পৌর যুবদল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর শেষে নিজ দেশে ফিরছেন বদরুজ্জামান সেলিম ময়মনসিংহে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারকারী চক্রের ৩ প্রতারক আটক রাজবাড়ীতে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ রংপুরে দিনব্যাপি নানা আয়োজনে নতুন বর্ষবরণ আত্রাইয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে নববর্ষ উদযাপন বগুড়া গাবতলী পৌর যুবদলের নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা  ব্রাহ্মণবাড়িয়া শান্তিনগর উত্তর শিমরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নববর্ষ উদযাপন

ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলে পর্যটকের ঢল

যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পেতে মানুষ ছুটে চলে প্রকৃতির সান্নিধ্যে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পর্যটকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে চায়ের রাজধানীখ্যাত এই অঞ্চল।

শহরের চা বাগান, পর্যটন কেন্দ্র, ঐতিহাসিক স্থান ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয় ট্যুর অপারেটর ও হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে শুরু করে এবং তৃতীয় ও চতুর্থ দিন হোটেল ও রিসোর্টগুলো প্রায় হাউজফুল হয়ে যায়।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা ফরহাদ বলেন, “শ্রীমঙ্গলের সৌন্দর্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। চা বাগানের সবুজের মাঝে হাঁটতে দারুণ লাগছে। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে মন চায়।”

প্রথমবার চা বাগানে আসা ফাতেমা বেগম বলেন, “চা বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য মন ছুঁয়ে গেছে। এখানে এসে অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটাচ্ছি।”

রাতে রওনা দিয়ে সকালে শ্রীমঙ্গলে পৌঁছানো তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “গরম একটু বেশি থাকলেও প্রকৃতির অপূর্ব শোভা উপভোগ করছি। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আনারস খাচ্ছি, চা বাগানে ঘুরছি-সব মিলিয়ে দারুণ লাগছে!”

শ্রীমঙ্গলের বিখ্যাত চা কন্যার ভাস্কর্য, বধ্যভূমি একাত্তর, বিটিআরআই, সাত রঙের চায়ের দোকান, রাধানগর, মনিপুরী পাড়া, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবপুর লেকে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয়েছে।

শহরের অভ্যন্তরে ব্যস্ত সড়কজুড়ে পর্যটকদের গাড়ির দীর্ঘ সারি চোখে পড়ে। বিশেষ করে চাদের গাড়ি (জিপ) নিয়ে পাহাড়ি পথ ধরে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দে মেতে ওঠেন পর্যটকরা।

শ্রীমঙ্গলের চামুং রেস্টুরেন্টের পরিচালক পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, “ঈদ উপলক্ষে স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের প্রচুর পর্যটক আসছেন। আশা করছি এবারের ঈদের ছুটিতে ভালো ব্যবসা হবে।”

শ্রীমঙ্গল ট্যুর অপারেটর অ্যান্ড ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম জানান, “ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলে প্রচুর পর্যটক এসেছেন। আমাদের বেশিরভাগ ট্যুর গাইড ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিদেশি পর্যটকরাও এসেছেন। অন্য অনেক জায়গায় পর্যটকদের হয়রানির শিকার হতে হয়, কিন্তু শ্রীমঙ্গলে নিরাপদে ঘুরতে পারেন।”

পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের পরিদর্শক মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, “ঈদের ছুটিতে প্রচুর পর্যটক এসেছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিটি দর্শনীয় স্থানে নজরদারি বাড়িয়েছি। ট্যুরিস্ট পুলিশ ছাড়াও থানা পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন রয়েছে, যাতে কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার না হন।”

পর্যটকদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

শ্রীমঙ্গলে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের এ উৎসবমুখর ভিড় আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজবাড়ী কালুখালীতে মনমুগ্ধকর আয়োজনে নববর্ষ ১৪৩২ পালিত

ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলে পর্যটকের ঢল

আপডেট সময় ০৩:৫৩:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫

যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পেতে মানুষ ছুটে চলে প্রকৃতির সান্নিধ্যে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পর্যটকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে চায়ের রাজধানীখ্যাত এই অঞ্চল।

শহরের চা বাগান, পর্যটন কেন্দ্র, ঐতিহাসিক স্থান ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয় ট্যুর অপারেটর ও হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে শুরু করে এবং তৃতীয় ও চতুর্থ দিন হোটেল ও রিসোর্টগুলো প্রায় হাউজফুল হয়ে যায়।

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা ফরহাদ বলেন, “শ্রীমঙ্গলের সৌন্দর্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। চা বাগানের সবুজের মাঝে হাঁটতে দারুণ লাগছে। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে মন চায়।”

প্রথমবার চা বাগানে আসা ফাতেমা বেগম বলেন, “চা বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য মন ছুঁয়ে গেছে। এখানে এসে অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটাচ্ছি।”

রাতে রওনা দিয়ে সকালে শ্রীমঙ্গলে পৌঁছানো তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “গরম একটু বেশি থাকলেও প্রকৃতির অপূর্ব শোভা উপভোগ করছি। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আনারস খাচ্ছি, চা বাগানে ঘুরছি-সব মিলিয়ে দারুণ লাগছে!”

শ্রীমঙ্গলের বিখ্যাত চা কন্যার ভাস্কর্য, বধ্যভূমি একাত্তর, বিটিআরআই, সাত রঙের চায়ের দোকান, রাধানগর, মনিপুরী পাড়া, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবপুর লেকে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয়েছে।

শহরের অভ্যন্তরে ব্যস্ত সড়কজুড়ে পর্যটকদের গাড়ির দীর্ঘ সারি চোখে পড়ে। বিশেষ করে চাদের গাড়ি (জিপ) নিয়ে পাহাড়ি পথ ধরে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দে মেতে ওঠেন পর্যটকরা।

শ্রীমঙ্গলের চামুং রেস্টুরেন্টের পরিচালক পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, “ঈদ উপলক্ষে স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের প্রচুর পর্যটক আসছেন। আশা করছি এবারের ঈদের ছুটিতে ভালো ব্যবসা হবে।”

শ্রীমঙ্গল ট্যুর অপারেটর অ্যান্ড ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম জানান, “ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলে প্রচুর পর্যটক এসেছেন। আমাদের বেশিরভাগ ট্যুর গাইড ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিদেশি পর্যটকরাও এসেছেন। অন্য অনেক জায়গায় পর্যটকদের হয়রানির শিকার হতে হয়, কিন্তু শ্রীমঙ্গলে নিরাপদে ঘুরতে পারেন।”

পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের পরিদর্শক মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, “ঈদের ছুটিতে প্রচুর পর্যটক এসেছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিটি দর্শনীয় স্থানে নজরদারি বাড়িয়েছি। ট্যুরিস্ট পুলিশ ছাড়াও থানা পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন রয়েছে, যাতে কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার না হন।”

পর্যটকদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

শ্রীমঙ্গলে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের এ উৎসবমুখর ভিড় আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।