সাতক্ষীরার তালা উপজেলা বিএনপির নেতা এস এম বিপ্লব কবীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর, এই চাঞ্চল্যকর মামলাটি অবশেষে আদালতের সামনে উপস্থাপিত হয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার প্রধান অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর এবং সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মোস্তফা লুৎফুল্লাহসহ ২২ জন।
১৬ মার্চ রবিবার , সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৩-এ নিহত বিপ্লব কবীরের ভাই জাহাঙ্গীর আলম এই মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিদুল হাসান মামলাটি আমলে নিয়েছেন এবং আগামী ২৩ মার্চের মধ্যে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহার হিসেবে গণ্য করে আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ১৮ জুলাই রাতে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত বিপ্লব কবীরকে তার এক বন্ধুর বাড়িতে ঢুকে নির্মমভাবে হত্যা করে। অভিযোগ করা হয়েছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। বিপ্লব কবীরকে প্রথমে রড দিয়ে আঘাত করা হয় এবং পরে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর, তার লাশ গাড়িতে করে নিয়ে ইসলামকাটি ব্রিজের কাছে ফেলে দেওয়া হয়।
মামলায় অভিযুক্ত অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাতক্ষীরা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক ওসি একেএম আজমল হুদা, ডিবি পুলিশের কনস্টেবল হাসিবুর রহমান, ফারুক চৌধুরী, রাসেল মাহমুদ, শিকদার মনিরুজ্জামান, তালা থানার সাবেক ওসি আবু বকর সিদ্দিক, এসআই আকরাম হোসেন, এএসআই গোলাম সরোয়ার, জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম মুক্তি, তালার মাঝিয়াড়া গ্রামের যুবলীগ নেতা শেখ আবু জাফর, দোহার গ্রামের যুবলীগ নেতা শাহিন শেখ, জালালপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আমিরুল শেখ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী রুহুল আমিন শেখ মিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আমজাদ আলী, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল সরদার, যুবলীগ নেতা আক্তারুল সরদার, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মহিবুল্লাহ মোড়ল, উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শেখ আনারুল ইসলাম ও জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাম প্রসাদ দাশ।
মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেছেন, বিপ্লব কবীরের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আসামিরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বিপ্লব বিষয়টি জানতে পেরে রাতে বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন,কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না তাহার।