নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন, বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের সভা-সমাবেশে হামলা-বাধা, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার, হয়রানির প্রতিবাদ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে আগামী ২ ডিসেম্বর রাজধানীতে সমাবেশ করবে গণঅধিকার পরিষদ।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে গণঅধিকার পরিষদের পল্টন কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক জরুরি সভায় এ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।
সভায় দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়গুলোতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা হামলা ও ভাঙচুরের নিন্দা প্রকাশ করা হয়। কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করেন, গণঅধিকার পরিষদের নিবন্ধন বানচাল করতেই এসব হামলা করা হচ্ছে। দলীয় কার্যালয় রক্ষায় তারা নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
সভায় দেশের চলমান রিজার্ভ সংকট ও জ্বালানি সংকট, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের দমন-পীড়ন, গুলি করে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করা হয়। নেতারা বলেন, সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়েছে, জনগণ জেগে উঠেছে, জনমানুষের গণজোয়ারে ভয় পেয়ে আওয়ামী লীগ তার পুরোনো চরিত্রে ফিরে এসেছে।
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, সরকার টের পেয়েছে তাদের আর ক্ষমতায় থাকার মতো অবস্থায় নেই। যেকোনো সময় তারা গণজোয়ারে ভেসে যাবে। দেশের অর্থনীতি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধ্বংস করে ও হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে রাতের ভোটের এই সরকার এখন নিজেই বেকায়দায় পড়েছে। তাদের ক্ষমতা থেকে নামাতে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। তাই জনগণকে ভয় দেখাতে হামলা-মামলা ও গুম-খুনের রাজনীতি শুরু করেছে। তবে জনগণ এসব আর ভয় পায় না। তিনি পুলিশ-প্রশাসনের কর্মরতদের সংবিধান ও চাকরিবিধি মেনে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
সভার সভাপতি গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, দেশের অর্থনীতি এখন খাদের কিনারায়, যেকোনো মুহূর্তে দেশ দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে, আর কিছুদিন গেলে খাদ্য আমদানির মতো কোনো অর্থ থাকবে না। গত ১৩ বছরে এই সরকার দেশটাকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। অতি দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে সেই সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এছাড়া সভায় সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে বিভাগীয় সাংগঠনিক উপ-কমিটির তত্ত্বাবধানে ১৬ ডিসেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে জেলা ও বিভাগীয় সমাবেশ, দলের আর্থিক সংকট নিরসনে ‘পাবলিক ফান্ড’ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় আগামী ২০ ও ২১ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী দলের ১ম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।