ঢাকা ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামের প্রথম যুগের নিরাপত্তারক্ষীরা যেমন ছিল

ওমর (রা.)-কে অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রবর্তক মনে করা হয়। যদিও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্তিত্ব ছিল। তবে তার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ছিল না। তিনি কিছু অশ্বারোহী এবং গোত্রের প্রবীণ লোকদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধীদের শনাক্ত করা ও শাস্তি প্রয়োগের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর যুগে বিষয়টি এমনই ছিল। সর্বপ্রথম আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব লাভ করেছিলেন আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.)। ইসলামের ইতিহাসে ওমর (রা.) অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিয়মতান্ত্রিক বাহিনী গঠন করেন। এই বাহিনী শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ দমনের জন্য রাতে সড়কে টহল দিত।

মদিনার মুসলিমদের প্রতি মক্কার কুরাইশ ও তাদের মিত্রদের পক্ষ থেকে সৃষ্ট হুমকি এবং মদিনার উপকণ্ঠে বসবাসকারী মুসলিমদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক ‘টহল দল’ গঠন করা হয়। এসব বাহিনীতে তিন থেকে ৫০ জন পর্যন্ত সদস্য থাকতেন। তাঁরা মদিনার উপকণ্ঠের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে টহল দিতেন। তাঁদের ‘হিরাসুর-রাসুল’ বলা হতো।

আবু বকর (রা.) মদিনা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাত্রীকালীন টহলের ব্যবস্থা করেন। মসজিদ-ই-নববীতেও পূর্ণ প্রস্তুতিসহ একটি দল সব সময় অবস্থান করত। তাঁর যুগে মদিনার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত দলগুলোর নেতৃত্বে ছিলেন আলী ইবনে আবি তালিব, জুবায়ের ইবনুল আউয়াম, তালহা বিন উবাইদুল্লাহ, সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস, আবদুর রহমান ইবনুল আউফ, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) প্রমুখ।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন যাঁরা 

ওমর (রা.)-এর যুগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব ছিল সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি তারা রাষ্ট্রের অন্যান্য দায়িত্বও পালন করত। ওয়াকি (রহ.) ‘আখবারুল কুজাত’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ইবরাহিম নাখয়ি (রহ.) ছিলেন কাজি সুরাইহ (রহ.)-এর নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মকর্তা। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) কুফার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবিষয়ক দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) আবু মুসা আশআরি (রা.)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন তিনি শরিয়তের বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি না তা পাহারা দেন। অন্যদিকে ইয়েমেনের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিদ্রোহ দমনে ভূমিকা রাখে। আমর ইবনুল আস (রা.) মিসর জয় করলে মিসরের সব শহরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গঠনের নির্দেশ দেন।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ

ওমর (রা.)-এর যুগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সীমান্ত সংরক্ষণ পর্যন্ত সার্বিক দায়িত্ব পালন করত। নিম্নে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি প্রধান দায়িত্বের বর্ণনা তুলে ধরা হলো :

১. সামাজিক নিরাপত্তা : ওমর (রা.)-এর যুগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমাজের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করত। যেমন, ঐতিহাসিকরা লেখেন সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তখন এই বাহিনী রাস্তায় নিয়মিত টহল দিত, রাতের বেলা জনবসতিতে টহল দিত। স্বয়ং ওমর (রা.) রাতে ঘুরে বেড়াতেন। কখনো কখনো আবদুর রহমান ইবনে আউফ ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) তাঁর সঙ্গী হতেন। তাঁরা সঙ্গে চাবুক নিয়ে ঘুরতেন।

২. সীমান্ত রক্ষা : এক দীর্ঘ হাদিসে ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! এই লোকেরা মনে করবে, আমি তাদের প্রতি জুলুম করেছি। এটা তাদেরই শহর, জাহেলি যুগে তারা এতে যুদ্ধ করেছে, ইসলামের যুগে তারা এতেই ইসলাম গ্রহণ করেছে। সেই মহান আল্লাহর শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যেসব ঘোড়ার ওপর আমি যোদ্ধাদের আল্লাহর রাস্তায় আরোহণ করিয়ে থাকি যদি সেগুলো না হতো তবে আমি তাঁদের দেশের এক বিঘত পরিমাণ ভূমিও সংরক্ষণ করতাম না। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩০৫৯)

৩. অপরাধ দমন করা : ওমর (রা.)-এর  যুগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধ দমনে কাজ করত। যেমন, এক ব্যক্তি ঋণ করে তা ঠিকমতো পরিশোধ করত না। ওমর (রা.) তার সম্পদ ঋণগ্রস্তদের মধ্যে বণ্টন করে দেন। হাদিসে এসেছে, ‘জুহাইনা গোত্রের এক ব্যক্তি (উসাইফা) সব হাজির আগে গিয়ে ভালো ভালো উট উচ্চমূল্যে কিনে নিত এবং তাড়াতাড়ি মক্কায় গিয়ে পৌঁছাত।

একসময় সে গরিব হয়ে পড়ল। পাওনাদাররা তাঁদের টাকা আদায়ের জন্য ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর কাছে বিচারপ্রার্থী হলেন। ওমর (রা.) লোকদের সম্বোধন করে বললেন, ‘জুহাইনা গোত্রের উসাইফা অর্থ কর্জ করেছিল এবং আমানত হস্তক্ষেপ করেছিল।

লোকেরা বলে, উসাইফা সবার আগে মক্কায় পৌঁছে যায়। তোমরা জেনে রাখো, সে কর্জ করে তা আদায় করার মনোবৃত্তি রাখেনি। বর্তমানে সে গরিব হয়ে পড়েছে, অথচ কর্জ তার সমুদয় মাল গ্রাস করে ফেলেছে। পাওনাদাররা আগামীকাল সকালে আমার কাছে উপস্থিত হবে। আমি তার সব সম্পদ পাওনাদারদের মধ্যে বণ্টন করে দেব। তোমরা ঋণ নিতে হুঁশিয়ার থেকো। কেননা ঋণের প্রারম্ভ হচ্ছে দুশ্চিন্তা, পরিশেষ হচ্ছে কলহ-বিবাদ। (মুয়াত্তায়ে মালিক, হাদিস : ১৫৮)

৪. কারাগার পাহারা দেওয়া : ওমর (রা.) কারাগার প্রতিষ্ঠা করেন এবং তা পাহারা দিতে রক্ষী নিয়োগ দেন। ঐতিহাসিকরা উল্লেখ করেন, নাফে ইবনে আবদুল হারিস সাফওয়ান ইবনে উমাইয়ার কাছ থেকে একটি বাড়ি ক্রয় করেন কারাগার প্রতিষ্ঠার জন্য। তিনি এই শর্তে বাড়ি ক্রয় করেন যে ওমর (রা.) সম্মত হলেই কেবল বেচাকেনা চূড়ান্ত হবে। অতঃপর বাড়িটি কারাগারে পরিণত করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে তাতে আটকে রাখত।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসলামের প্রথম যুগের নিরাপত্তারক্ষীরা যেমন ছিল

আপডেট সময় ০২:১৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০২২

ওমর (রা.)-কে অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রবর্তক মনে করা হয়। যদিও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্তিত্ব ছিল। তবে তার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ছিল না। তিনি কিছু অশ্বারোহী এবং গোত্রের প্রবীণ লোকদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধীদের শনাক্ত করা ও শাস্তি প্রয়োগের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর যুগে বিষয়টি এমনই ছিল। সর্বপ্রথম আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব লাভ করেছিলেন আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.)। ইসলামের ইতিহাসে ওমর (রা.) অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিয়মতান্ত্রিক বাহিনী গঠন করেন। এই বাহিনী শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ দমনের জন্য রাতে সড়কে টহল দিত।

মদিনার মুসলিমদের প্রতি মক্কার কুরাইশ ও তাদের মিত্রদের পক্ষ থেকে সৃষ্ট হুমকি এবং মদিনার উপকণ্ঠে বসবাসকারী মুসলিমদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক ‘টহল দল’ গঠন করা হয়। এসব বাহিনীতে তিন থেকে ৫০ জন পর্যন্ত সদস্য থাকতেন। তাঁরা মদিনার উপকণ্ঠের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে টহল দিতেন। তাঁদের ‘হিরাসুর-রাসুল’ বলা হতো।

আবু বকর (রা.) মদিনা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাত্রীকালীন টহলের ব্যবস্থা করেন। মসজিদ-ই-নববীতেও পূর্ণ প্রস্তুতিসহ একটি দল সব সময় অবস্থান করত। তাঁর যুগে মদিনার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত দলগুলোর নেতৃত্বে ছিলেন আলী ইবনে আবি তালিব, জুবায়ের ইবনুল আউয়াম, তালহা বিন উবাইদুল্লাহ, সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস, আবদুর রহমান ইবনুল আউফ, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) প্রমুখ।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন যাঁরা 

ওমর (রা.)-এর যুগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব ছিল সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি তারা রাষ্ট্রের অন্যান্য দায়িত্বও পালন করত। ওয়াকি (রহ.) ‘আখবারুল কুজাত’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, ইবরাহিম নাখয়ি (রহ.) ছিলেন কাজি সুরাইহ (রহ.)-এর নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মকর্তা। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) কুফার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবিষয়ক দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) আবু মুসা আশআরি (রা.)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন তিনি শরিয়তের বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি না তা পাহারা দেন। অন্যদিকে ইয়েমেনের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিদ্রোহ দমনে ভূমিকা রাখে। আমর ইবনুল আস (রা.) মিসর জয় করলে মিসরের সব শহরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গঠনের নির্দেশ দেন।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ

ওমর (রা.)-এর যুগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সীমান্ত সংরক্ষণ পর্যন্ত সার্বিক দায়িত্ব পালন করত। নিম্নে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি প্রধান দায়িত্বের বর্ণনা তুলে ধরা হলো :

১. সামাজিক নিরাপত্তা : ওমর (রা.)-এর যুগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমাজের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করত। যেমন, ঐতিহাসিকরা লেখেন সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তখন এই বাহিনী রাস্তায় নিয়মিত টহল দিত, রাতের বেলা জনবসতিতে টহল দিত। স্বয়ং ওমর (রা.) রাতে ঘুরে বেড়াতেন। কখনো কখনো আবদুর রহমান ইবনে আউফ ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) তাঁর সঙ্গী হতেন। তাঁরা সঙ্গে চাবুক নিয়ে ঘুরতেন।

২. সীমান্ত রক্ষা : এক দীর্ঘ হাদিসে ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! এই লোকেরা মনে করবে, আমি তাদের প্রতি জুলুম করেছি। এটা তাদেরই শহর, জাহেলি যুগে তারা এতে যুদ্ধ করেছে, ইসলামের যুগে তারা এতেই ইসলাম গ্রহণ করেছে। সেই মহান আল্লাহর শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যেসব ঘোড়ার ওপর আমি যোদ্ধাদের আল্লাহর রাস্তায় আরোহণ করিয়ে থাকি যদি সেগুলো না হতো তবে আমি তাঁদের দেশের এক বিঘত পরিমাণ ভূমিও সংরক্ষণ করতাম না। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩০৫৯)

৩. অপরাধ দমন করা : ওমর (রা.)-এর  যুগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধ দমনে কাজ করত। যেমন, এক ব্যক্তি ঋণ করে তা ঠিকমতো পরিশোধ করত না। ওমর (রা.) তার সম্পদ ঋণগ্রস্তদের মধ্যে বণ্টন করে দেন। হাদিসে এসেছে, ‘জুহাইনা গোত্রের এক ব্যক্তি (উসাইফা) সব হাজির আগে গিয়ে ভালো ভালো উট উচ্চমূল্যে কিনে নিত এবং তাড়াতাড়ি মক্কায় গিয়ে পৌঁছাত।

একসময় সে গরিব হয়ে পড়ল। পাওনাদাররা তাঁদের টাকা আদায়ের জন্য ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর কাছে বিচারপ্রার্থী হলেন। ওমর (রা.) লোকদের সম্বোধন করে বললেন, ‘জুহাইনা গোত্রের উসাইফা অর্থ কর্জ করেছিল এবং আমানত হস্তক্ষেপ করেছিল।

লোকেরা বলে, উসাইফা সবার আগে মক্কায় পৌঁছে যায়। তোমরা জেনে রাখো, সে কর্জ করে তা আদায় করার মনোবৃত্তি রাখেনি। বর্তমানে সে গরিব হয়ে পড়েছে, অথচ কর্জ তার সমুদয় মাল গ্রাস করে ফেলেছে। পাওনাদাররা আগামীকাল সকালে আমার কাছে উপস্থিত হবে। আমি তার সব সম্পদ পাওনাদারদের মধ্যে বণ্টন করে দেব। তোমরা ঋণ নিতে হুঁশিয়ার থেকো। কেননা ঋণের প্রারম্ভ হচ্ছে দুশ্চিন্তা, পরিশেষ হচ্ছে কলহ-বিবাদ। (মুয়াত্তায়ে মালিক, হাদিস : ১৫৮)

৪. কারাগার পাহারা দেওয়া : ওমর (রা.) কারাগার প্রতিষ্ঠা করেন এবং তা পাহারা দিতে রক্ষী নিয়োগ দেন। ঐতিহাসিকরা উল্লেখ করেন, নাফে ইবনে আবদুল হারিস সাফওয়ান ইবনে উমাইয়ার কাছ থেকে একটি বাড়ি ক্রয় করেন কারাগার প্রতিষ্ঠার জন্য। তিনি এই শর্তে বাড়ি ক্রয় করেন যে ওমর (রা.) সম্মত হলেই কেবল বেচাকেনা চূড়ান্ত হবে। অতঃপর বাড়িটি কারাগারে পরিণত করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে তাতে আটকে রাখত।