ঢাকা ০২:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পুষ্টিগুণে ভরপুর সজনেপাতা, জেনে নিন কীভাবে খাবেন বিএসএমএমইউ’র নতুন ভিসি অধ্যাপক শাহিনুল আলম গণহত্যার অভিযোগে আমু-কামরুলের পরবর্তী শুনানি ১৮ ডিসেম্বর মিলে গেল ডিএনএ, মাহমুদুর রহমানই হারিছ চৌধুরী জনমনে ভয় দেখিয়ে পাবনা পৌরসভার সাবমার্সিবল ফি আদায় মাইকিং অভিযোগ কুমিল্লায় বসুন্ধরা ফেডারেশন কাপের প্রথম ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসের জয় কুমিল্লায় বিজিবির পৃথক অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য এবং চোরাচালানী পণ্য জব্দ ওয়ালটন প্লাজার উদ্যোগে শিবরাম স্কুলে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত আমাকে সাংবাদিকতা শিখাতে হবেনা, আমি ও সাংবাদিক ছিলাম চুনারুঘাটে ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা দেবানন্দ জামালপুরে ফুলকপি ও লাউয়ের মিশ্র চাষে লাভবান আনিস

কোন পথে জাতীয় পার্টি?

বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছে জাতীয় পার্টি৷ দলটি শেষপর্যন্ত রাজনীতি করতে পারবে কি-না, তা নিয়ে দলের নেতারা চিন্তিত৷ প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে, দেশে এখনও কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি৷

কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ও শ্রমিক আন্দোলন ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের’ সহযোগী হিসাবে দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে৷ আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, আমরা মনে করি নিষিদ্ধ হবে বিচারের মাধ্যমে৷ তবে তার আগে আমরা জাতীয় পার্টির কার্যক্রম স্থগিত করার দাবি জানিয়েছি সরকারের কাছে৷

ঘোষণা দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার কাকরাইলে জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা চালানো হয়৷ এসময় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়৷ প্রথম দফায় জাতীয় পার্টির লোকজন ওই হামলা প্রতিরোধ করতে পারলেও রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুই জন সমন্বয়ক ঘোষণা দিয়ে  ছাত্রদের নিয়ে সেখানে যান৷

দ্বিতীয় দফায় হামলা ও আগুনের সময় ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকেও সেখানে আগুন নেভাতে দেয়া হয়নি৷ আর পুলিশ ছিল পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়৷ আর শনিবার জাতীয় পার্টি কাকরাইল এলাকায় সমাবেশ ডেকেও তা প্রত্যাহার করে পুলিশের নিষেধাজ্ঞার কারণে৷ পুলিশ শনিবার ওই এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে৷ কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ও শ্রমিক আন্দোলন নগরীর অন্য এলাকায় জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশ করেছে৷

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, হামলাকে আমরা সমর্থন করি না৷ তবে ফেসবুক পোস্ট দিয়ে যে সমন্বয়কেরা গেছেন, সেটা আমাদের আন্দোলনেরই অংশ৷ তারা স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদের দোসর ছিল৷ তাই ঘেরাও করা আন্দোলনেরই অংশ৷ আমরা আগুন বা হামলা সমর্থন করি না৷ তবে ওই হামলা ও আগুনের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই৷ কারণ তারা গেছে রাত সাড়ে ৮টার পরে৷ তার আগেই হামলা ও আগুনের ঘটনা ঘটেছে৷

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিষিদ্ধ হবে কি-না, তা দেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে৷  তাদের বিচার হবে৷ তবে বিচার শেষ হওয়ার আগে আমরা তাদের দলের কার্যক্রম স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছি সরকারের কাছে৷

আর প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার জানান, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেই৷ কোনো দলকে নিষিদ্ধও করা হয়নি৷ একটি ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷

রাজনৈতিক দলগুলো কী বলছে?

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-এর সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, জাতীয় পার্টি একটি স্বৈরাচারী দল৷ তাদের জন্ম স্বৈরাচারী কায়দায়৷ আর তারা স্বৈরাচারকে টিকে থাকতে সহায়তা করেছে৷ এই দলটি সম্পর্কে দেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে যে তারা রাজনীতি করতে পারবে কী পারবে না৷

তিনি আরও বলেন, আর আমাদের সংবিধানে সভা-সমাবেশ করার অধিকার দেওয়া আছে৷ জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে৷ তার মানে এই নয় যে, কোনো একটি দলকে নিষিদ্ধ করা হবে বা তার রাজনীতি করার অধিকার নেই৷

আর জাতীয় পার্টি অফিসে হামলা ও আগুন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা তো একটা ফ্যাসিবাদী আক্রমণ৷ যে ঘোষণা করে, ঘটা করে একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে আক্রমণ এবং আগুন দেয়া হয়েছে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ আমরা মনে করি, আমরা যে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আছি এর মাধ্যমে সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷

গণ অধিকার পরিষদের প্রধান নুরুল হক নুর বলেন, আমরা কোনো ধরনের হামলা, সহিংসতা ও মব জাস্টিসকে সমর্থন করি না৷ আমরা মনে করি, এখন একটা সরকার আছে৷ সেই অবস্থায় যদি এরকম করা হয় তাহলে দেশে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা হবে৷ আর জাতীয় পার্টি অফিসে কারা হামলা করেছে, নিজেরাই করেছে কি-না তার তদন্ত হওয়া দরকার৷ তবে যারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর এবং সহযোগী ছিলো তাদের নিষিদ্ধের দাবি জানাই আমরা৷

এদিকে, ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বিএনপি৷ দেশে অযথা ইস্যু তৈরি করে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে৷ বাংলাদেশকে ঘিরে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে৷ এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দেশের জনগণকে সজাগ থাকতে হবে৷

আর কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ভাঙচুর থেকে বিরত থাকতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে সব দলকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী৷

কী ভাবছে জাতীয় পার্টি?

জাতীয় পার্টি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের দিন সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে দাওয়াত পেলেও অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কোনো সংলাপেই তাদের ডাকা হয়নি৷ আওয়ামী লীগের সহযোগী ১৩ দলও ডাক পায়নি৷ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাতীয় পার্টিকেও নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল৷

কয়েকদিন আগে রংপুরে দুই সমন্বয়কের সফরের সময় প্রতিরোধের ডাক দেয় জাতীয় পার্টি৷ এরপর তারা ঢাকায় শনিবারের সমাবেশের কর্মসূচি দিলে বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় পার্টি অফিসে হামলা ও আগুনের ঘটনা ঘটে৷ তারপরও তারা শনিবার সমাবেশের ব্যাপারে অনড় ছিল৷ কিন্তু পুলিশের নিষেধাজ্ঞার পর তারা সমাবেশ বাতিল করে৷

এ প্রসঙ্গে আইনের প্রতি শ্রদ্ধার কথা বললেও আসলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানান জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা৷ তারা বলেন, হামলার প্রতিক্রিয়া, বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া দেখে তারা পরের অবস্থান নেবেন৷

জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পটোয়ারী বলেন, আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি, এই কারণে আমাদের নিষিদ্ধ করা হবে ছাত্রদের দাবির মুখে তা হতে পারে না৷ সংবিধান এবং আইনে কারা সংগঠন করতে পারবে এবং দল করতে পারবে তা স্পষ্ট বলা আছে৷ সন্ত্রাসী কাজের জন্য, জঙ্গি তৎপরতার জন্য নিষিদ্ধ করা যায়৷ জাতীয় পার্টি কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয়৷

তিনি বলেন, আমাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলার সময় পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিরোধে যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল, তা রাখতে তারা ব্যর্থ হয়েছে৷ সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া দরকার ছিল৷ মামলা করার জন্য আমাদের লোক গেছে। কিন্তু এখনও পুলিশ মামলা নেয়নি৷

তিনি আরাও বলেন, এখানে ঘোষণা দিয়ে হামলা করা হয়েছে৷ সুতরাং কারা হামলা করেছে তা স্পষ্ট৷ সরকার চাইলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে৷

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, জাতীয় পার্টি তার গণতান্ত্রিক রাজনীতি অব্যাহত রাখবে৷ঘোষণা দিয়ে হামলা, রাজনীতি নিষিদ্ধ করা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে৷ কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না৷

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পুষ্টিগুণে ভরপুর সজনেপাতা, জেনে নিন কীভাবে খাবেন

কোন পথে জাতীয় পার্টি?

আপডেট সময় ১২:১৭:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছে জাতীয় পার্টি৷ দলটি শেষপর্যন্ত রাজনীতি করতে পারবে কি-না, তা নিয়ে দলের নেতারা চিন্তিত৷ প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে, দেশে এখনও কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি৷

কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ও শ্রমিক আন্দোলন ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের’ সহযোগী হিসাবে দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে৷ আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, আমরা মনে করি নিষিদ্ধ হবে বিচারের মাধ্যমে৷ তবে তার আগে আমরা জাতীয় পার্টির কার্যক্রম স্থগিত করার দাবি জানিয়েছি সরকারের কাছে৷

ঘোষণা দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার কাকরাইলে জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা চালানো হয়৷ এসময় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়৷ প্রথম দফায় জাতীয় পার্টির লোকজন ওই হামলা প্রতিরোধ করতে পারলেও রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুই জন সমন্বয়ক ঘোষণা দিয়ে  ছাত্রদের নিয়ে সেখানে যান৷

দ্বিতীয় দফায় হামলা ও আগুনের সময় ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকেও সেখানে আগুন নেভাতে দেয়া হয়নি৷ আর পুলিশ ছিল পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়৷ আর শনিবার জাতীয় পার্টি কাকরাইল এলাকায় সমাবেশ ডেকেও তা প্রত্যাহার করে পুলিশের নিষেধাজ্ঞার কারণে৷ পুলিশ শনিবার ওই এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে৷ কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ও শ্রমিক আন্দোলন নগরীর অন্য এলাকায় জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশ করেছে৷

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, হামলাকে আমরা সমর্থন করি না৷ তবে ফেসবুক পোস্ট দিয়ে যে সমন্বয়কেরা গেছেন, সেটা আমাদের আন্দোলনেরই অংশ৷ তারা স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদের দোসর ছিল৷ তাই ঘেরাও করা আন্দোলনেরই অংশ৷ আমরা আগুন বা হামলা সমর্থন করি না৷ তবে ওই হামলা ও আগুনের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই৷ কারণ তারা গেছে রাত সাড়ে ৮টার পরে৷ তার আগেই হামলা ও আগুনের ঘটনা ঘটেছে৷

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিষিদ্ধ হবে কি-না, তা দেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে৷  তাদের বিচার হবে৷ তবে বিচার শেষ হওয়ার আগে আমরা তাদের দলের কার্যক্রম স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছি সরকারের কাছে৷

আর প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার জানান, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেই৷ কোনো দলকে নিষিদ্ধও করা হয়নি৷ একটি ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷

রাজনৈতিক দলগুলো কী বলছে?

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-এর সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, জাতীয় পার্টি একটি স্বৈরাচারী দল৷ তাদের জন্ম স্বৈরাচারী কায়দায়৷ আর তারা স্বৈরাচারকে টিকে থাকতে সহায়তা করেছে৷ এই দলটি সম্পর্কে দেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে যে তারা রাজনীতি করতে পারবে কী পারবে না৷

তিনি আরও বলেন, আর আমাদের সংবিধানে সভা-সমাবেশ করার অধিকার দেওয়া আছে৷ জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে৷ তার মানে এই নয় যে, কোনো একটি দলকে নিষিদ্ধ করা হবে বা তার রাজনীতি করার অধিকার নেই৷

আর জাতীয় পার্টি অফিসে হামলা ও আগুন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা তো একটা ফ্যাসিবাদী আক্রমণ৷ যে ঘোষণা করে, ঘটা করে একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে আক্রমণ এবং আগুন দেয়া হয়েছে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ আমরা মনে করি, আমরা যে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আছি এর মাধ্যমে সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷

গণ অধিকার পরিষদের প্রধান নুরুল হক নুর বলেন, আমরা কোনো ধরনের হামলা, সহিংসতা ও মব জাস্টিসকে সমর্থন করি না৷ আমরা মনে করি, এখন একটা সরকার আছে৷ সেই অবস্থায় যদি এরকম করা হয় তাহলে দেশে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা হবে৷ আর জাতীয় পার্টি অফিসে কারা হামলা করেছে, নিজেরাই করেছে কি-না তার তদন্ত হওয়া দরকার৷ তবে যারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর এবং সহযোগী ছিলো তাদের নিষিদ্ধের দাবি জানাই আমরা৷

এদিকে, ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বিএনপি৷ দেশে অযথা ইস্যু তৈরি করে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে৷ বাংলাদেশকে ঘিরে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে৷ এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দেশের জনগণকে সজাগ থাকতে হবে৷

আর কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ভাঙচুর থেকে বিরত থাকতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে সব দলকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী৷

কী ভাবছে জাতীয় পার্টি?

জাতীয় পার্টি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের দিন সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে দাওয়াত পেলেও অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কোনো সংলাপেই তাদের ডাকা হয়নি৷ আওয়ামী লীগের সহযোগী ১৩ দলও ডাক পায়নি৷ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাতীয় পার্টিকেও নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল৷

কয়েকদিন আগে রংপুরে দুই সমন্বয়কের সফরের সময় প্রতিরোধের ডাক দেয় জাতীয় পার্টি৷ এরপর তারা ঢাকায় শনিবারের সমাবেশের কর্মসূচি দিলে বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় পার্টি অফিসে হামলা ও আগুনের ঘটনা ঘটে৷ তারপরও তারা শনিবার সমাবেশের ব্যাপারে অনড় ছিল৷ কিন্তু পুলিশের নিষেধাজ্ঞার পর তারা সমাবেশ বাতিল করে৷

এ প্রসঙ্গে আইনের প্রতি শ্রদ্ধার কথা বললেও আসলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানান জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা৷ তারা বলেন, হামলার প্রতিক্রিয়া, বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া দেখে তারা পরের অবস্থান নেবেন৷

জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পটোয়ারী বলেন, আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি, এই কারণে আমাদের নিষিদ্ধ করা হবে ছাত্রদের দাবির মুখে তা হতে পারে না৷ সংবিধান এবং আইনে কারা সংগঠন করতে পারবে এবং দল করতে পারবে তা স্পষ্ট বলা আছে৷ সন্ত্রাসী কাজের জন্য, জঙ্গি তৎপরতার জন্য নিষিদ্ধ করা যায়৷ জাতীয় পার্টি কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয়৷

তিনি বলেন, আমাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলার সময় পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিরোধে যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল, তা রাখতে তারা ব্যর্থ হয়েছে৷ সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া দরকার ছিল৷ মামলা করার জন্য আমাদের লোক গেছে। কিন্তু এখনও পুলিশ মামলা নেয়নি৷

তিনি আরাও বলেন, এখানে ঘোষণা দিয়ে হামলা করা হয়েছে৷ সুতরাং কারা হামলা করেছে তা স্পষ্ট৷ সরকার চাইলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে৷

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, জাতীয় পার্টি তার গণতান্ত্রিক রাজনীতি অব্যাহত রাখবে৷ঘোষণা দিয়ে হামলা, রাজনীতি নিষিদ্ধ করা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে৷ কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না৷