ঢাকা ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের লাশ ছিড়ে খাচ্ছে কুকুর

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিরলস এই আগ্রাসনে গাজা ভূখণ্ড পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে।

এর মধ্যেই সামনে এসেছে নতুন তথ্য। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের লাশ ছিড়ে খেয়ে ফেলছে কুকুর। এতে করে নিহত অনেকের লাশ শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন এই সংবাদমাধ্যমটি। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজার উত্তরাঞ্চলের জরুরি পরিষেবার প্রধান ফারেস আফানা সিএনএনকে বলেছেন, তিনি এবং তার সহকর্মীরা উত্তর গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের লাশ পেয়েছেন। যার মধ্যে কিছু লাশ প্রাণীদের খেয়ে ফেলার লক্ষণ রয়েছে।

তিনি বলেন, “ক্ষুধার্ত কুকুরেরা রাস্তায় এসব লাশ খাচ্ছে… আর এ কারণে আমাদের জন্য লাশ শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।” উত্তর গাজা এবং জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী “সবকিছু ধ্বংস করছে”। ইসরায়েলের দাবি, গাজার এই এলাকায় হামাস সদস্যরা পুনরায় সংগঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া ৯৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

আফানা বলেছেন, গত সোমবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত গুদাম সহায়তা কেন্দ্রে খাবারের সন্ধানে থাকা ক্ষুধার্ত বাসিন্দাদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সৈন্যরা। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। তারা সাধারণভাবে তাদের কাজ করতে পারছেন না। উত্তর গাজায় যা ঘটছে তা সত্যিকারের গণহত্যা।”

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের লাশ ছিড়ে খাচ্ছে কুকুর

আপডেট সময় ০২:৩৭:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিরলস এই আগ্রাসনে গাজা ভূখণ্ড পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে।

এর মধ্যেই সামনে এসেছে নতুন তথ্য। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের লাশ ছিড়ে খেয়ে ফেলছে কুকুর। এতে করে নিহত অনেকের লাশ শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন এই সংবাদমাধ্যমটি। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজার উত্তরাঞ্চলের জরুরি পরিষেবার প্রধান ফারেস আফানা সিএনএনকে বলেছেন, তিনি এবং তার সহকর্মীরা উত্তর গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের লাশ পেয়েছেন। যার মধ্যে কিছু লাশ প্রাণীদের খেয়ে ফেলার লক্ষণ রয়েছে।

তিনি বলেন, “ক্ষুধার্ত কুকুরেরা রাস্তায় এসব লাশ খাচ্ছে… আর এ কারণে আমাদের জন্য লাশ শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।” উত্তর গাজা এবং জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী “সবকিছু ধ্বংস করছে”। ইসরায়েলের দাবি, গাজার এই এলাকায় হামাস সদস্যরা পুনরায় সংগঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া ৯৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

আফানা বলেছেন, গত সোমবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত গুদাম সহায়তা কেন্দ্রে খাবারের সন্ধানে থাকা ক্ষুধার্ত বাসিন্দাদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সৈন্যরা। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। তারা সাধারণভাবে তাদের কাজ করতে পারছেন না। উত্তর গাজায় যা ঘটছে তা সত্যিকারের গণহত্যা।”