চাকরির দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিক্ষোভ, কারখানায় ভাঙচুর করেছেন চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টঙ্গীর বিসিক এলাকায় এ বিক্ষোভে যোগ দেন কয়েকশ শ্রমিক। এ সময় চাকরিচ্যুত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ৯টি পোশাক কারখানায় ভাঙচুর চালান। এতে চাকরিচ্যুত অন্তত দুজন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পরে আন্দোলনকারী আহত বাদশা মিয়াকে (২১) উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অন্য এক নারী শ্রমিক আহত হলেও তিনি নিজ বাসায় ফিরে যান। তার নাম পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
জানা যায়, সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজ নিজ কারখানায় কাজে যোগ দেন টঙ্গীর বিসিক এলাকার সব পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চাকরিচ্যুত তিন শতাধিক শ্রমিক কয়েক ধাপে ৯টি পোশাক কারখানার গেটে অবস্থান নেন। পরে কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের তাদের (চাকরিচ্যুত) সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে আহ্বান জানান। এ সময় কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের ডাকে সাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানান।
এতে চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা ৯টি কারখানায় ভাঙচুর চালান। নিজ কারখানায় ভাঙচুর ঠেকাতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ভাঙচুর এড়াতে ওই ৯টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ছুটি ঘোষণা করা হয় টঙ্গীর বিসিক এলাকার লিমিটেড টসি নিট ফেব্রিক্স লিমিটেড, ন্যাশনাল কম্পোজিট লিমিটেড, পেট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেড, বেলিসিমা অ্যাপারেলস লিমিটেড, জিন্স অ্যান্ড পোলো লিমিটেড, টেঙ্গন গার্মেন্টস লিমিটেড, রেডিসন গার্মেন্টস লিমিটেড, সুমি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও তাজকিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেড।
দুপুর ২টার দিকে কারখানাগুলোতে ছুটি ঘোষণা করলে চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা টঙ্গীর বিসিক এলাকার পানির ট্যাঙ্কি এলাকার শাখা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা টঙ্গী বিসিক এলাকার শাখা সড়কে অবস্থান নিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে রাখেন।
চাকরিচ্যুত শ্রমিক মো. রনি বলেন, আমরা কয়েক সপ্তাহ আগেও বিক্ষোভ করেছিলাম। কারখানাগুলোতে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। আজ চাকরিতে থাকা শ্রমিকরা আমাদের সঙ্গে যোগ দেননি। আমরা সড়কে বসে আছি। আমাদের দাবি না মেনে নিলে কোনো গার্মেন্টসে শ্রমিকদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। তাজকিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (মানবসম্পদ) হেমায়েত উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকালে বহিরাগতরা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে কারখানার প্রধান ফটকে ভাঙচুর চালায়। ভাঙচুর ও ক্ষতি এড়াতে কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাকরিতে বৈষম্য ও পুরুষ শ্রমিকদের নিয়োগে অগ্রাধিকারের দাবি জানিয়ে কয়েকশ চাকরিচ্যুত শ্রমিক ৯টি কারখানায় ভাঙচুর চালায়। বিক্ষুব্ধরা টঙ্গীর বিসিকের একটি সড়কে অবস্থান নিয়েছে।