কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন নিহতের ঘটনায় স্ত্রী জিতু বেগম হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নাম উল্লেখ করে ৫১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে অন্তত ৩শ জনকে।
আদালত মামলাটি গ্রহণ করে কোতোয়ালি থানার ওসিকে রেকর্ডের আদেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রংপুরের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক রাজু আহমেদ বাবু এ আদেশ দেন।
অপর আসামিরা হলেন- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী এ আরাফাত, যুব মহিলা লীগ কেন্দ্রীয় নেত্রী অপু উকিল, পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর-২ আসনের সাবেক এমপি আহসানুল হক চৌধুরীর ডিউক, রংপুর-৫ আসনের সাবেক এমপি জাকির হোসেন সরকার, রংপুর-১ আসনের সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান বাবলু, বদরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র টুটুল চৌধুরী, গংগাচড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার উৎপল রায়, পরশুরাম জোনের সহকারী কমিশনার ইমরান, কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার আরিফুজ্জামান আরিফ, কোতোয়ালি থানার সাব-ইন্সপেক্টর নিতাই রায়, শ্রমিক লীগ সভাপতি আব্দুল মজিদ, রংপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি লক্ষিনচন্দ্র দাস, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম প্রামাণিক, রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিবি খন্দকার রফিক হাসনাইন, রংপুর জজকোর্টের পিপি আব্দুল মালেক, আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক প্রামাণিক, কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রাব্বানী বিপ্লব, রংপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেনসহ ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী মোফাজ্জল হোসেন বকুল জানান, গত ১৯ জুলাই রাজা রামমোহন ক্লাবের সামনে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালিয়ে সাজ্জাদ হোসেনকে নির্মমভাবে খুন করেছে।
তিনি আরও জানান, মামলাটি গ্রহণ করে আদালত মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানাকে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন।
নিহত সাজ্জাদের মা ময়না বেগম জানান, ১৯ জুলাই শুক্রবার বিকালে সিটি বাজার কাঁচামাল আড়তে সবজি কিনতে আসেন সাজ্জাদ। বাজারের সামনে ছাত্র জনতার আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় আন্দোলনকারীদের পানি ও রুটি দিতে এগিয়ে এলে পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করে। ছেলে হত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
মামলার বাদী জিতু বেগম বলেন, আমার স্বামীকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে এর পেছনে যারা আছে বাইরে যারা আছে মদদদাতা যারা আছে তাদের সবার আমি ফাঁসি চাই।