ঢাকা ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

বাতিল হয়নি ‘ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট’, ভারতে কতদিন থাকতে পারবেন শেখ হাসিনা?

ছাত্র আন্দোলন থেকে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। এর পর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। সঙ্গে রয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানাও। জানা গেছে, দিল্লির উপকণ্ঠে একটি আধাসামরিক বাহিনীর অতিথি নিবাস বা ‘সেফ হাউসে’ই দুই বোনকে একসঙ্গে রাখা হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেশটির পার্লামেন্টে জানান, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনা ‘সাময়িকভাবে’ এ দেশে আসার অনুমোদন চেয়েছিলেন এবং তা মঞ্জুর হওয়ার পরই তিনি ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন। খবর বিবিসি বাংলার।

দিল্লিতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ হাসিনার যে ‘ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল’ পাসপোর্ট ছিল তা এখনও বৈধ এবং সেই পাসপোর্টের সুবাদে তিনি অন্তত দেড় মাস কোনও ভিসা ছাড়াই অনায়াসে ভারতে অবস্থান করতে পারেন। শেখ হাসিনা ভারতে গেছেন ১৫ দিন। ভারতের আইন অনুযায়ী আর ৩০ দিন দেশটিতে থাকতে পারবেন তিনি। যদি-না এর মধ্যে সেই পাসপোর্ট ‘রিভোকড’ বা প্রত্যাহৃত হয়। তাই বর্তমান অবস্থান সম্পূর্ণ আইনসম্মত, ভারতের এ ক্ষেত্রে আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রয়োজনও নেই।

দিল্লিতে একাধিক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে আভাস দিয়েছেন, ভারতে শেখ হাসিনার এই মুহূর্তে অবস্থানের ভিত্তিটা হলো ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘সংশোধিত ট্র্যাভেল অ্যারেঞ্জমেন্ট’।

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি সরকারের মধ্যে ঢাকাতে এই সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই।

ভারতের পক্ষে ওই সমঝোতাপত্রে সই করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন বিশেষ সচিব (বাংলাদেশ ও মিয়ানমার) ব্রজরাজ শর্মা। আর বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষরকারী ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা পরিষেবা বিভাগের তখনকার সচিব ফরিদউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছর মেয়াদি এই সমঝোতাটি তারপর নিয়মিত ব্যবধানে নবায়ন করার কথা, যা এ বছরের গোড়ার দিকে করাও হয়েছে।

ওই সমঝোতাপত্রের ১(এ) ধারাতেই পরিষ্কার উল্লেখ করা আছে, উভয় দেশের ডিপ্লোম্যাটিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের ৪৫ দিনের মেয়াদে ভিসা ছাড়াই বসবাসের জন্য (‘ভিসা ফ্রি রেজিম’) থাকতে দিতে দুই দেশ পারস্পরিকভাবে রাজি হয়েছে।

অর্থাৎ কি না, এই সমঝোতা অনুযায়ী বাংলাদেশের ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীরা ভারতে ভিসা ছাড়াই ৪৫ দিন থাকতে পারবেন – আবার অন্যদিকে ভারতের ওই বিশেষ ধরনের পাসপোর্টধারীরা বাংলাদেশেও ঠিক একই সুবিধা পাবেন।

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্র বা সরকারের যে পদাধিকারীদের কূটনৈতিক বা সরকারি কোনও প্রয়োজনে বিদেশে সফর করতে হয়, তাদেরই এই ‘ডিপ্লোম্যাটিক’ বা ‘অফিশিয়াল’ বা ‘সার্ভিস’ পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়ে থাকে।

বিবিসি যেটা জানতে পেরেছে, প্রধানমন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা যখন দেশত্যাগ করেন, তার ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল পাসপোর্ট কিন্তু সম্পূর্ণ বৈধ ছিল– যে কোনও কারণেই হোক তা কিন্তু বাতিল করা হয়নি।

বাংলাদেশে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও তা বাতিল করেছে বলে এখনও পর্যন্ত কোনও খবর নেই।

ফলে যতদিন সেই পাসপোর্ট বহাল থাকছে, তার ভিত্তিতেই দু’দেশের মধ্যেকার সমঝোতা অনুযায়ী তিনি টেকনিক্যালি কোনও ধরনের ভিসা ছাড়াই ৪৫ দিন ভারতে অবস্থান করতে পারবেন – যার মধ্যে মাত্র ১৫ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে।

কিন্তু এই দেড় মাসের মধ্যে যদি শেখ হাসিনার বর্তমান পাসপোর্ট ‘রিভোক’ বা বাতিল করা হয়, তাহলে ভারতের কী করণীয় আছে?

দিল্লির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বলেন, সেটাও বড় কোনও সমস্যা নয়, কারণ এই ধরনের পরিস্থিতিতে আমাদের ‘প্ল্যান বি’ বা ‘প্ল্যান সি’ প্রস্তুত রাখতেই হয়, এখানেও নিশ্চয়ই সেটা তৈরি আছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

বাতিল হয়নি ‘ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট’, ভারতে কতদিন থাকতে পারবেন শেখ হাসিনা?

আপডেট সময় ১০:৩৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

ছাত্র আন্দোলন থেকে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। এর পর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। সঙ্গে রয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানাও। জানা গেছে, দিল্লির উপকণ্ঠে একটি আধাসামরিক বাহিনীর অতিথি নিবাস বা ‘সেফ হাউসে’ই দুই বোনকে একসঙ্গে রাখা হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেশটির পার্লামেন্টে জানান, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনা ‘সাময়িকভাবে’ এ দেশে আসার অনুমোদন চেয়েছিলেন এবং তা মঞ্জুর হওয়ার পরই তিনি ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন। খবর বিবিসি বাংলার।

দিল্লিতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ হাসিনার যে ‘ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল’ পাসপোর্ট ছিল তা এখনও বৈধ এবং সেই পাসপোর্টের সুবাদে তিনি অন্তত দেড় মাস কোনও ভিসা ছাড়াই অনায়াসে ভারতে অবস্থান করতে পারেন। শেখ হাসিনা ভারতে গেছেন ১৫ দিন। ভারতের আইন অনুযায়ী আর ৩০ দিন দেশটিতে থাকতে পারবেন তিনি। যদি-না এর মধ্যে সেই পাসপোর্ট ‘রিভোকড’ বা প্রত্যাহৃত হয়। তাই বর্তমান অবস্থান সম্পূর্ণ আইনসম্মত, ভারতের এ ক্ষেত্রে আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রয়োজনও নেই।

দিল্লিতে একাধিক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে আভাস দিয়েছেন, ভারতে শেখ হাসিনার এই মুহূর্তে অবস্থানের ভিত্তিটা হলো ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘সংশোধিত ট্র্যাভেল অ্যারেঞ্জমেন্ট’।

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি সরকারের মধ্যে ঢাকাতে এই সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই।

ভারতের পক্ষে ওই সমঝোতাপত্রে সই করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন বিশেষ সচিব (বাংলাদেশ ও মিয়ানমার) ব্রজরাজ শর্মা। আর বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষরকারী ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা পরিষেবা বিভাগের তখনকার সচিব ফরিদউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছর মেয়াদি এই সমঝোতাটি তারপর নিয়মিত ব্যবধানে নবায়ন করার কথা, যা এ বছরের গোড়ার দিকে করাও হয়েছে।

ওই সমঝোতাপত্রের ১(এ) ধারাতেই পরিষ্কার উল্লেখ করা আছে, উভয় দেশের ডিপ্লোম্যাটিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের ৪৫ দিনের মেয়াদে ভিসা ছাড়াই বসবাসের জন্য (‘ভিসা ফ্রি রেজিম’) থাকতে দিতে দুই দেশ পারস্পরিকভাবে রাজি হয়েছে।

অর্থাৎ কি না, এই সমঝোতা অনুযায়ী বাংলাদেশের ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীরা ভারতে ভিসা ছাড়াই ৪৫ দিন থাকতে পারবেন – আবার অন্যদিকে ভারতের ওই বিশেষ ধরনের পাসপোর্টধারীরা বাংলাদেশেও ঠিক একই সুবিধা পাবেন।

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্র বা সরকারের যে পদাধিকারীদের কূটনৈতিক বা সরকারি কোনও প্রয়োজনে বিদেশে সফর করতে হয়, তাদেরই এই ‘ডিপ্লোম্যাটিক’ বা ‘অফিশিয়াল’ বা ‘সার্ভিস’ পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়ে থাকে।

বিবিসি যেটা জানতে পেরেছে, প্রধানমন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা যখন দেশত্যাগ করেন, তার ডিপ্লোম্যাটিক/অফিশিয়াল পাসপোর্ট কিন্তু সম্পূর্ণ বৈধ ছিল– যে কোনও কারণেই হোক তা কিন্তু বাতিল করা হয়নি।

বাংলাদেশে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও তা বাতিল করেছে বলে এখনও পর্যন্ত কোনও খবর নেই।

ফলে যতদিন সেই পাসপোর্ট বহাল থাকছে, তার ভিত্তিতেই দু’দেশের মধ্যেকার সমঝোতা অনুযায়ী তিনি টেকনিক্যালি কোনও ধরনের ভিসা ছাড়াই ৪৫ দিন ভারতে অবস্থান করতে পারবেন – যার মধ্যে মাত্র ১৫ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে।

কিন্তু এই দেড় মাসের মধ্যে যদি শেখ হাসিনার বর্তমান পাসপোর্ট ‘রিভোক’ বা বাতিল করা হয়, তাহলে ভারতের কী করণীয় আছে?

দিল্লির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বলেন, সেটাও বড় কোনও সমস্যা নয়, কারণ এই ধরনের পরিস্থিতিতে আমাদের ‘প্ল্যান বি’ বা ‘প্ল্যান সি’ প্রস্তুত রাখতেই হয়, এখানেও নিশ্চয়ই সেটা তৈরি আছে।