গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুনসহ নির্বাচিত ৫৭ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের অপসারণের খবর পেয়েই গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সরানোর হিড়িক পড়েছে। ফাইল সরানোর কাজগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে করেন মেয়রের প্রধান উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম সমর্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফাইল সরানোর ভিডিও ফুটেজ যুগান্তরের হাতে এসেছে।
ফাইল সরানোকে জায়েজ করতে তড়িঘড়ি করে সোমবার রাজস্ব বিভাগের ফাইল হালনাগাদের কথা বলে ৮টি আঞ্চলিক অফিসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ওই দিনই একটি আদেশ অনুমোদন পায়। ফলে অনুমোদনের একই দিনে সোমবার সকাল থেকেই গাড়িবোঝাই করে চলে ফাইল সরানোর কাজ।
সোমবার দুপুর থেকে ২টি অটো, ৩টি সিএনজি, ১টি মাইক্রোবাস আবার কেউ কেউ মাথায় করে বহন করে নিয়ে গেছে ফাইল। যে যেভাবে পারছে সেভাবেই দ্রুত ফাইল সরানোর কাজ করেছে।
রোববার সিটি করপোরেশনসহ জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ অধ্যাদেশ জারি হয়। মেয়রসহ সিটি করপোরেশনের জনপ্রতিনিধিরা অপসারণ হবেন এমনটা আঁচ করতে পেরেই ফাইল সরাতে শুরু করেন বলে মনে করেন অনেকেই।
ফলশ্রুতিতে সোমবার হঠাৎ করে গাড়ি করে হাজার হাজার ফাইল বাইরে সরাতে শুরু করলে অনেকের সন্দেহ হয়। অনেকে বলছেন জাহাঙ্গীর আলমের হাজার হাজার কোটি টাকা অনিয়ম-দুর্নীতির ফাইল সিটি মেয়র নিজেই সরিয়ে ফেলছেন। নগরভবন এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি জনমনে নেতিবাচক প্রশ্ন দেখা দেয়।
অবশেষে বিকাল ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা খবর পেয়ে ফাইলসহ দুটি লেগুনা আটক করে ফাইল রেখে ছেড়ে দেয়। পরে ফাইলগুলো নিচের রুমে জমা দিয়ে দেন। শিক্ষার্থীরা বাইরের গেটে তালা মেরে মসজিদে যাওয়ার ব্যবস্থা করে চাবি হেফাজতে নিয়েছেন। রাতের আঁধারে ফাইল যাতে সরাতে না পারে সেজন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হান্নান জানান, এগুলো রাজস্ব বিভাগের হালনাগাদ করা ফাইল। পরিমাণ সংখ্যা জানা নেই। তবে অফিসের অনুমতি আছে ৮টি আঞ্চলিক অফিসে পাঠানো হচ্ছে।