ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বড়ই বেপরোয়া সোনা দিলীপ (প্রথম পর্ব)

আওয়ামীলীগের শিল্প- বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির উপ-সম্পাদক দিলীপ আগারওয়ালের বড় পরিচয় হচ্ছে তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র‘ এর প্রভাবশালী এজেন্ট। এটা মুখে মুখে রটানো কোনো অভিযোগ নয়, দিলীপ আগারওয়াল নিজেও গর্বের সঙ্গে এ পরিচয় দিয়ে থাকেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে পত্র পত্রিকায় কোনো প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তুতি নিলেই সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারকে র এর কান্ট্রি ডিরেক্টর পদবীর এক দাদাবাবু ফোন দিয়ে নরমে গরমে হুমকি ধমকি দিয়ে থাকেন। ওই ফোনদাতাও দিলীপ আগারওয়ালকে তাদের নিজস্ব লোক দাবি করে বলতেন, তার ব্যাপারে কোনরকম নেগেটিভ আলোচনা মিডিয়ায় আনা যাবে না, এটা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই নিষেধ রয়েছে। দিলীপের হয়ে পোষ্য কর্মকর্তা- কর্মচারীর মতো ব্যবহার হতেন ডিবির সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান ও একই বিভাগের এডিসি নাজমুল আলম। দিলীপের আঙ্গুলি হেলনে তারা যে কাউকে সাইবার এ্যাক্ট ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় আসামি বানিয়ে দিতেন। এমনকি তাদের আটক করে জঙ্গী সাজিয়ে ডিবির সাত তলায় নির্মিত গুম ঘরে আটকে বর্বর নির্যাতন চালাতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে দিলীপ আগারওয়াল নিজে লাপাত্তা হলেও নতুন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলতে নানা লবিং চালিয়ে যাচ্ছে তার লোকজন। এক্ষেত্রে নিজেকে সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা পরিচয় দেয়া এক আন্ডারগ্রাউন্ড দৈনিকের সম্পাদক জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ার খাতে দিলীপ আগারওয়ালের নাকি একশ কোটি টাকা র্পযন্ত বাজেট রয়েছে। পাশাপাশি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গেও গভীর সখ্যতা গড়তে বিকল্প কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন আগারওয়াল। তার ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের পিআরও পরিচয়দানকারী ও অপর একজন ম্যানেজার ইতিমধ্যেই রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে দফায় দফায় নানা উপহার সামগ্রি পৌঁছানোর কাজে খুবই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এ কৌশলে ইতিমধ্যেই থানা পর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চালানো শিক্ষার্থীদের ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে নানারকম খাতির যত্ন করা হয়েছে। তাদের কারণেই গুলশানে অবস্থিত ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডে কেউ একটা ঢিল ছুঁড়তেও সাহস পায়নি বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির পিআরও শাখার কর্মকর্তা দাবিদার সাহাদাত হোসেন ওরফে সাজ্জাত।
—————————

বিশেষ প্রতিনিধি
হঠাত করেই স্বর্ণ চোরাচালান, হীরা প্রতারণা, হুন্ডি বাণিজ্যসহ অজ্ঞাত সূত্রে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া দিলীপ কুমার আগারওয়ালকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় শুরু হয়েছে। তাকে কেন্দ্র করে সরকারের নানা পর্যায়েও সৃষ্টি হয়েছে বিব্রতকর পরিস্থিতির। দুদক থেকে উচ্চ আদালত সর্বত্রই চলছে তোলপাড়। সুনির্দ্দিষ্ট তথ্য প্রমানভিত্তিক পাহাড়সম অভিযোগ থাকা সত্তেও বেজায় দাপটের চরম বেপরোয়া দিলীপ আগারওয়ালকে কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না। এবার তার এমপি হওয়ার খায়েশ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় খোদ ক্ষমতাসীন দলেই মারাত্মক বিভক্তির সূত্রপাত ঘটেছে।
সেখানকার সরকারদলীয় চার সংসদ সদস্যসহ ত্যাগী নেতা কর্মিদের বিরুদ্ধে দিলীপ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা নোংরা খেলায় মেতে উঠেছেন, শুরু করেছেন বিরোধ, বিভক্তির নানা তেলেসমাতি। বিভিন্ন দল, মতের দুই শতাধিক বহিরাগত লোককে লেলিয়ে নানা দুর্বৃত্তপনার মাধ্যমে মাফিয়া চক্রটি চুয়াডাঙ্গার আওয়ামীলীগকে আজ্ঞাবহ করার পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়েছে। চলছে টাকার ছড়াছড়ি। আওয়ামীলীগের পরিবর্তে দিলীপ আগারওয়াল সেখানে নৌকা মঞ্চ বানিয়ে আগাম নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বত্রই দলীয় নেতা কর্মিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।
দিলীপ কুমার আগরওয়ালার পৈতৃক নিবাস চুয়াডাঙ্গা সদরের বড়বাজার এলাকায়। সেখানকার সাধারণ মানুষজনের কাছে দিলীপ কুমার বড় ধরনের মাফিয়া ডন হিসেবেই পরিচিত। অনেকেই মনে করেন, জীবিকার সন্ধানে দুই দশক আগে চুয়াডাঙ্গা ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমানো দিলীপ কুমার বিভিন্ন চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে নিজের ভাগ্যকে আমূল বদলে নিয়েছেন। তার আস্তানায় এখন দেশি বিদেশি হরেক রকম ধনকুবের, স্মাগলার, রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ভিড় লেগেই থাকে। অঢেল সহায় সম্পদ তার। ভারতের কোলকাতা, বোম্বে এবং জয়পুরে তার আলীশান বাড়ি নির্মিত হয়েছে। অষ্ট্রেলিয়াতেও আছে প্রাসাদসম স্থাপনা। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ও অষ্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব রয়েছে তার। আছে একাধিক পাসপোর্ট। তার দাপটের কোনো কমতি নেই।
চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক আব্দুল কাদের বলেন, কর্মজীবনের শুরুতে তারই বন্ধু টিটোর সঙ্গে পার্টনারশিপে ঠিকাদারীর কাজ করতো দিলীপ। কোনরকম জীবন যাপন করা দিলীপ ঢাকায় গিয়েই রাতারাতি ধনাঢ্য হয়ে উঠে। তার মূল ব্যবসা হচ্ছে সোনা চোরাচালান। সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, দিলীপ খুবই পল্টিবাজ মানুষ। আজ যার সঙ্গে গলাগলি ধরে পথ চলবে কালই তাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলবে। একসময় তার ঠিকাদারীর পার্টনার পার্টনার ওয়াসকুরুনি টিটোর সাথেও তার বিরোধ। ডায়মন্ড বলে নকল ডায়মন্ড বিক্রি করে বলে শুনেছি।
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার নতিপোতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, দিলীপ আমার সাথে পড়তো। তখন সে জাসদ ছাত্রলীগ করতো। জাসদের স্থানীয় নেতাদের সাথে ওঠাবসা ছিল। নারীঘটিত কারণে লতিফ টিএসআই তাকে গ্রেপ্তার করে। সে সাতদিন জেলও খেটেছে। সদর হাসপাতালের মাইক্রোবাসের ড্রাইভার স্বপন বলেন, আমি দিলীপের কাছে কাজ করতাম। সে আমাকে দিয়ে গোল্ড পাচার করিয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় থাকতেই সে সোনা পাচারের সাথে জড়িত ছিল। পরে ঢাকায় চলে যায়। আমি ঢাকাতেও তার কাছে চাকরি করেছি। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা কখনই আওয়ামী লীগ করেনি। তবে সে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন নেওয়ার চেষ্টা করেছে। তার অঢেল টাকা উপার্জনের পেছনে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।

যেভাবে উত্থান মাফিয়া দিলীপের
দিলীপ আগারওয়ালের চাচা পিংকসিটির গীতাঞ্জলির মালিক পবন কুমার। তার চাচা পবন কুমারও ছিলেন একটা সিনেমা হলের মালিক। শুরুতে দিলীপ আগারওয়াল সেই সিনেমা হলের পিওন ছিলেন। সেখান থেকে চাচা ভাতিজা মিলে সিনেমা বানানোর অফিস করে ঢাকার কাকরাইলে। সেখান থেকেই নায়িকা, মডেল, এক্সট্রা নায়িকাদের ঘিরে নারীকেন্দ্রীক নানারকম বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
সেই সুবাদে ইউনিয়ন গ্রুপের মালিক এক সময়ের বাংলা মদের চোরাকারবারী শফিউল্লাহ রানার সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে তার। রানা তার গুলশানের ভবনে আশ্রয় দেন দিলীপকে। রানা চড়া সুদে তাকে টাকা দিতেন পুঁজি হিসেবে। কিন্তু তার অতিমাত্রার সুদের টাকার যোগান দিতে গিয়ে গলদঘর্ম হয়ে পড়া দিলীপ পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। সেখান থেকে গোল্ড কালারের কয়েন এনে অলঙ্কার বানিয়ে ঢাকায় বিক্রি শুরু করেন। যা নিম্ন মানের মেসনাইড ও নকল ডায়মন্ড দিয়ে বানিয়ে ক্রেতাদের প্রতারণা করা হয় বলে এন্তার অভিযোগ রয়েছে। অনুমোদনহীন অভিনব এ বাণিজ্য থেকেই তিনি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠতে থাকেন বলে তার একসময়ের ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন।
শুরুতে যখন শোরুম ওপেনিং হয় তখন শুল্ক কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে তার অবৈধ মালামাল জব্দ করেছিল। তার চোরাচালান, অবৈধ অর্থ পাচার ও বেশুমার সম্পদের বিষয়াদি নিয়ে দুদকও অনুসন্ধান শুরু করে। কিন্তু অঢেল অর্থ ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বরাবরই দিলীপ ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকেছেন।
ওই সময় ঢাকার ব্যবসায়ি মহলে ‘ব্রিফকেসধারী ফেরিওলা দিলীপ‘ হিসাবেই তার সমধিক পরিচিতি ছিল। সিঙ্গাপুর থেকে লাগেজের মাধ্যমে নানা ধরনের অলঙ্কার, জিনিসপত্র ঢাকায় এনে দোকানে দোকানে সাপ্লাই দেয়ার কারণেই সোনা দিলীপের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে।
চুয়াডাঙ্গায় স্থানীয়ভাবে মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের সন্তান হিসেবেই পরিচিত দিলীপ কুমার আগরওয়ালা মাত্র দুই দশকেই আমূল বদলে নিয়েছেন নিজেকে। একদা জীবনযুদ্ধে নিজ বাড়িঘর ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশে পাড়ি জমানো দলীপ কুমার ধূর্ততাসহ নানা কলা কৌশলকে পুঁজি করে সম্পদ প্রাচুর্যের পাহাড় জমিয়েছেন। তার পৈতৃক নিবাস চুয়াডাঙ্গায় সরেজমিন অনুসন্ধানকালেও নানা অবিশ্বাস্য কাহিনী বেরিয়ে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারাও দিলীপ কুমার আগরওয়ালার রাতারাতি বিত্তশালী বনে যাওয়ার ঘটনাকে রীতিমত আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়া বলেই মনে করছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলায় দিলীপ কুমার আগরওয়াল এর পরিচিত মহলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্র জীবন শেষে বন্ধুদের সাথে যৌথ ঠিকাদারী ব্যবসা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। তার পিতার নাম অমিয় আগরওয়াল। বংশগত ভাবেই তার চাচার ছিল সিনেমা হলের (রূপছায়া বর্তমানে পান্না সিনেমা হল) ব্যবসা। তাতে আগরওয়াল পরিবারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা খুব একটা ছিল না। সিনেমা হলের ব্যবসায় ফুটফরমায়েশ পালনের পাশাপাশি হল সংলগ্ন জায়গা জমিতে দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েই চলতো সংসারের খরচ। একপর্যায়ে ছোটখাটো সাপ্লাইয়ের কাজকর্মেও যুক্ত হন দিলীপ আগারওয়াল। কিন্তু চুয়াডাঙ্গায় পার্টটাইম ঠিকাদারি আর সিনেমা হলের টুকটাক আয়ে পরিবারের দৈন্যতা কাটাতে ব্যর্থ হয়েই দিলীপ পাড়ি জমান ঢাকায়।
শুরুতে ঢাকার বিজয়নগরে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে নিজের অফিস করতেন এবং পাশের মহল্লায় দুই রুমের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি। তবে ওই সময় ঢাকায় দিলীপ কুমার কিসের ব্যবসা করতেন তা তার ঘনিষ্ঠজনরাও কেউ কিছু বলতে পারেননি।

দিলীপ কুমার আগারওয়ালের বক্তব্য
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)-এর সাধারণ সম্পাদক ও এফবিসিসিআই-এর পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা তার সম্পর্কে পত্র পত্রিকায় উত্থাপিত নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে ইতিপূর্বে গণমাধ্যমের কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, ইদানিং কিছু নাম কা ওয়াস্তের পত্র পত্রিকা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে- এটা পরিকল্পিত অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়।
দিলীপ কুমার বলেন, ‘২০১৭ সালে আমিসহ বেশকিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেনামে দুদকে অভিযোগ দেয় কে বা কারা। অভিযোগটি দুদক আমলে নিয়ে তদন্তে নামে। দীর্ঘদিন তদন্তে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের সত্যতা না পেলে দুদক অভিযোগটি খারিজ করে দেয়। হঠাৎ করে এটি নিয়ে সর্বপ্রথম একটি অনলাইন পত্রিকায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার সামাজিক কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করে। ওই সংবাদে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চুয়াডাঙ্গার একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মেছি। আমার পিতামহ, পিতা এবং আমি এখানে জন্মে এখানেই বেড়ে উঠেছি। আমার বাবা অমিয় আগরওয়ালা জার্মান থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তাকারী (ডোনার)। আমি কোনো সেটেলার নই, আমি চুয়াডাঙ্গারই সন্তান। মায়ের মৃত্যুর পর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেছি তারাদেবী ফাউন্ডেশন। চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকি সব সময়। হুইল চেয়ার, শিক্ষাবৃত্তি, ঈদ উপহার, শীতবস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজের মাধ্যমে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই আমি।’

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে

বড়ই বেপরোয়া সোনা দিলীপ (প্রথম পর্ব)

আপডেট সময় ০৪:৩০:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪

আওয়ামীলীগের শিল্প- বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির উপ-সম্পাদক দিলীপ আগারওয়ালের বড় পরিচয় হচ্ছে তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র‘ এর প্রভাবশালী এজেন্ট। এটা মুখে মুখে রটানো কোনো অভিযোগ নয়, দিলীপ আগারওয়াল নিজেও গর্বের সঙ্গে এ পরিচয় দিয়ে থাকেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে পত্র পত্রিকায় কোনো প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তুতি নিলেই সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারকে র এর কান্ট্রি ডিরেক্টর পদবীর এক দাদাবাবু ফোন দিয়ে নরমে গরমে হুমকি ধমকি দিয়ে থাকেন। ওই ফোনদাতাও দিলীপ আগারওয়ালকে তাদের নিজস্ব লোক দাবি করে বলতেন, তার ব্যাপারে কোনরকম নেগেটিভ আলোচনা মিডিয়ায় আনা যাবে না, এটা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই নিষেধ রয়েছে। দিলীপের হয়ে পোষ্য কর্মকর্তা- কর্মচারীর মতো ব্যবহার হতেন ডিবির সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান ও একই বিভাগের এডিসি নাজমুল আলম। দিলীপের আঙ্গুলি হেলনে তারা যে কাউকে সাইবার এ্যাক্ট ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় আসামি বানিয়ে দিতেন। এমনকি তাদের আটক করে জঙ্গী সাজিয়ে ডিবির সাত তলায় নির্মিত গুম ঘরে আটকে বর্বর নির্যাতন চালাতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে দিলীপ আগারওয়াল নিজে লাপাত্তা হলেও নতুন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলতে নানা লবিং চালিয়ে যাচ্ছে তার লোকজন। এক্ষেত্রে নিজেকে সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা পরিচয় দেয়া এক আন্ডারগ্রাউন্ড দৈনিকের সম্পাদক জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ার খাতে দিলীপ আগারওয়ালের নাকি একশ কোটি টাকা র্পযন্ত বাজেট রয়েছে। পাশাপাশি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গেও গভীর সখ্যতা গড়তে বিকল্প কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন আগারওয়াল। তার ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের পিআরও পরিচয়দানকারী ও অপর একজন ম্যানেজার ইতিমধ্যেই রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে দফায় দফায় নানা উপহার সামগ্রি পৌঁছানোর কাজে খুবই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এ কৌশলে ইতিমধ্যেই থানা পর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চালানো শিক্ষার্থীদের ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে নানারকম খাতির যত্ন করা হয়েছে। তাদের কারণেই গুলশানে অবস্থিত ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডে কেউ একটা ঢিল ছুঁড়তেও সাহস পায়নি বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির পিআরও শাখার কর্মকর্তা দাবিদার সাহাদাত হোসেন ওরফে সাজ্জাত।
—————————

বিশেষ প্রতিনিধি
হঠাত করেই স্বর্ণ চোরাচালান, হীরা প্রতারণা, হুন্ডি বাণিজ্যসহ অজ্ঞাত সূত্রে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া দিলীপ কুমার আগারওয়ালকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় শুরু হয়েছে। তাকে কেন্দ্র করে সরকারের নানা পর্যায়েও সৃষ্টি হয়েছে বিব্রতকর পরিস্থিতির। দুদক থেকে উচ্চ আদালত সর্বত্রই চলছে তোলপাড়। সুনির্দ্দিষ্ট তথ্য প্রমানভিত্তিক পাহাড়সম অভিযোগ থাকা সত্তেও বেজায় দাপটের চরম বেপরোয়া দিলীপ আগারওয়ালকে কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না। এবার তার এমপি হওয়ার খায়েশ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় খোদ ক্ষমতাসীন দলেই মারাত্মক বিভক্তির সূত্রপাত ঘটেছে।
সেখানকার সরকারদলীয় চার সংসদ সদস্যসহ ত্যাগী নেতা কর্মিদের বিরুদ্ধে দিলীপ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা নোংরা খেলায় মেতে উঠেছেন, শুরু করেছেন বিরোধ, বিভক্তির নানা তেলেসমাতি। বিভিন্ন দল, মতের দুই শতাধিক বহিরাগত লোককে লেলিয়ে নানা দুর্বৃত্তপনার মাধ্যমে মাফিয়া চক্রটি চুয়াডাঙ্গার আওয়ামীলীগকে আজ্ঞাবহ করার পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়েছে। চলছে টাকার ছড়াছড়ি। আওয়ামীলীগের পরিবর্তে দিলীপ আগারওয়াল সেখানে নৌকা মঞ্চ বানিয়ে আগাম নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বত্রই দলীয় নেতা কর্মিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।
দিলীপ কুমার আগরওয়ালার পৈতৃক নিবাস চুয়াডাঙ্গা সদরের বড়বাজার এলাকায়। সেখানকার সাধারণ মানুষজনের কাছে দিলীপ কুমার বড় ধরনের মাফিয়া ডন হিসেবেই পরিচিত। অনেকেই মনে করেন, জীবিকার সন্ধানে দুই দশক আগে চুয়াডাঙ্গা ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমানো দিলীপ কুমার বিভিন্ন চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে নিজের ভাগ্যকে আমূল বদলে নিয়েছেন। তার আস্তানায় এখন দেশি বিদেশি হরেক রকম ধনকুবের, স্মাগলার, রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ভিড় লেগেই থাকে। অঢেল সহায় সম্পদ তার। ভারতের কোলকাতা, বোম্বে এবং জয়পুরে তার আলীশান বাড়ি নির্মিত হয়েছে। অষ্ট্রেলিয়াতেও আছে প্রাসাদসম স্থাপনা। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ও অষ্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব রয়েছে তার। আছে একাধিক পাসপোর্ট। তার দাপটের কোনো কমতি নেই।
চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক আব্দুল কাদের বলেন, কর্মজীবনের শুরুতে তারই বন্ধু টিটোর সঙ্গে পার্টনারশিপে ঠিকাদারীর কাজ করতো দিলীপ। কোনরকম জীবন যাপন করা দিলীপ ঢাকায় গিয়েই রাতারাতি ধনাঢ্য হয়ে উঠে। তার মূল ব্যবসা হচ্ছে সোনা চোরাচালান। সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, দিলীপ খুবই পল্টিবাজ মানুষ। আজ যার সঙ্গে গলাগলি ধরে পথ চলবে কালই তাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলবে। একসময় তার ঠিকাদারীর পার্টনার পার্টনার ওয়াসকুরুনি টিটোর সাথেও তার বিরোধ। ডায়মন্ড বলে নকল ডায়মন্ড বিক্রি করে বলে শুনেছি।
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার নতিপোতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, দিলীপ আমার সাথে পড়তো। তখন সে জাসদ ছাত্রলীগ করতো। জাসদের স্থানীয় নেতাদের সাথে ওঠাবসা ছিল। নারীঘটিত কারণে লতিফ টিএসআই তাকে গ্রেপ্তার করে। সে সাতদিন জেলও খেটেছে। সদর হাসপাতালের মাইক্রোবাসের ড্রাইভার স্বপন বলেন, আমি দিলীপের কাছে কাজ করতাম। সে আমাকে দিয়ে গোল্ড পাচার করিয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় থাকতেই সে সোনা পাচারের সাথে জড়িত ছিল। পরে ঢাকায় চলে যায়। আমি ঢাকাতেও তার কাছে চাকরি করেছি। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা কখনই আওয়ামী লীগ করেনি। তবে সে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন নেওয়ার চেষ্টা করেছে। তার অঢেল টাকা উপার্জনের পেছনে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।

যেভাবে উত্থান মাফিয়া দিলীপের
দিলীপ আগারওয়ালের চাচা পিংকসিটির গীতাঞ্জলির মালিক পবন কুমার। তার চাচা পবন কুমারও ছিলেন একটা সিনেমা হলের মালিক। শুরুতে দিলীপ আগারওয়াল সেই সিনেমা হলের পিওন ছিলেন। সেখান থেকে চাচা ভাতিজা মিলে সিনেমা বানানোর অফিস করে ঢাকার কাকরাইলে। সেখান থেকেই নায়িকা, মডেল, এক্সট্রা নায়িকাদের ঘিরে নারীকেন্দ্রীক নানারকম বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
সেই সুবাদে ইউনিয়ন গ্রুপের মালিক এক সময়ের বাংলা মদের চোরাকারবারী শফিউল্লাহ রানার সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে তার। রানা তার গুলশানের ভবনে আশ্রয় দেন দিলীপকে। রানা চড়া সুদে তাকে টাকা দিতেন পুঁজি হিসেবে। কিন্তু তার অতিমাত্রার সুদের টাকার যোগান দিতে গিয়ে গলদঘর্ম হয়ে পড়া দিলীপ পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। সেখান থেকে গোল্ড কালারের কয়েন এনে অলঙ্কার বানিয়ে ঢাকায় বিক্রি শুরু করেন। যা নিম্ন মানের মেসনাইড ও নকল ডায়মন্ড দিয়ে বানিয়ে ক্রেতাদের প্রতারণা করা হয় বলে এন্তার অভিযোগ রয়েছে। অনুমোদনহীন অভিনব এ বাণিজ্য থেকেই তিনি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠতে থাকেন বলে তার একসময়ের ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন।
শুরুতে যখন শোরুম ওপেনিং হয় তখন শুল্ক কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে তার অবৈধ মালামাল জব্দ করেছিল। তার চোরাচালান, অবৈধ অর্থ পাচার ও বেশুমার সম্পদের বিষয়াদি নিয়ে দুদকও অনুসন্ধান শুরু করে। কিন্তু অঢেল অর্থ ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বরাবরই দিলীপ ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকেছেন।
ওই সময় ঢাকার ব্যবসায়ি মহলে ‘ব্রিফকেসধারী ফেরিওলা দিলীপ‘ হিসাবেই তার সমধিক পরিচিতি ছিল। সিঙ্গাপুর থেকে লাগেজের মাধ্যমে নানা ধরনের অলঙ্কার, জিনিসপত্র ঢাকায় এনে দোকানে দোকানে সাপ্লাই দেয়ার কারণেই সোনা দিলীপের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে।
চুয়াডাঙ্গায় স্থানীয়ভাবে মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের সন্তান হিসেবেই পরিচিত দিলীপ কুমার আগরওয়ালা মাত্র দুই দশকেই আমূল বদলে নিয়েছেন নিজেকে। একদা জীবনযুদ্ধে নিজ বাড়িঘর ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশে পাড়ি জমানো দলীপ কুমার ধূর্ততাসহ নানা কলা কৌশলকে পুঁজি করে সম্পদ প্রাচুর্যের পাহাড় জমিয়েছেন। তার পৈতৃক নিবাস চুয়াডাঙ্গায় সরেজমিন অনুসন্ধানকালেও নানা অবিশ্বাস্য কাহিনী বেরিয়ে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারাও দিলীপ কুমার আগরওয়ালার রাতারাতি বিত্তশালী বনে যাওয়ার ঘটনাকে রীতিমত আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়া বলেই মনে করছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলায় দিলীপ কুমার আগরওয়াল এর পরিচিত মহলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্র জীবন শেষে বন্ধুদের সাথে যৌথ ঠিকাদারী ব্যবসা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। তার পিতার নাম অমিয় আগরওয়াল। বংশগত ভাবেই তার চাচার ছিল সিনেমা হলের (রূপছায়া বর্তমানে পান্না সিনেমা হল) ব্যবসা। তাতে আগরওয়াল পরিবারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা খুব একটা ছিল না। সিনেমা হলের ব্যবসায় ফুটফরমায়েশ পালনের পাশাপাশি হল সংলগ্ন জায়গা জমিতে দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েই চলতো সংসারের খরচ। একপর্যায়ে ছোটখাটো সাপ্লাইয়ের কাজকর্মেও যুক্ত হন দিলীপ আগারওয়াল। কিন্তু চুয়াডাঙ্গায় পার্টটাইম ঠিকাদারি আর সিনেমা হলের টুকটাক আয়ে পরিবারের দৈন্যতা কাটাতে ব্যর্থ হয়েই দিলীপ পাড়ি জমান ঢাকায়।
শুরুতে ঢাকার বিজয়নগরে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে নিজের অফিস করতেন এবং পাশের মহল্লায় দুই রুমের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি। তবে ওই সময় ঢাকায় দিলীপ কুমার কিসের ব্যবসা করতেন তা তার ঘনিষ্ঠজনরাও কেউ কিছু বলতে পারেননি।

দিলীপ কুমার আগারওয়ালের বক্তব্য
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)-এর সাধারণ সম্পাদক ও এফবিসিসিআই-এর পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা তার সম্পর্কে পত্র পত্রিকায় উত্থাপিত নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে ইতিপূর্বে গণমাধ্যমের কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, ইদানিং কিছু নাম কা ওয়াস্তের পত্র পত্রিকা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে- এটা পরিকল্পিত অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়।
দিলীপ কুমার বলেন, ‘২০১৭ সালে আমিসহ বেশকিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেনামে দুদকে অভিযোগ দেয় কে বা কারা। অভিযোগটি দুদক আমলে নিয়ে তদন্তে নামে। দীর্ঘদিন তদন্তে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের সত্যতা না পেলে দুদক অভিযোগটি খারিজ করে দেয়। হঠাৎ করে এটি নিয়ে সর্বপ্রথম একটি অনলাইন পত্রিকায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার সামাজিক কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করে। ওই সংবাদে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চুয়াডাঙ্গার একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মেছি। আমার পিতামহ, পিতা এবং আমি এখানে জন্মে এখানেই বেড়ে উঠেছি। আমার বাবা অমিয় আগরওয়ালা জার্মান থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তাকারী (ডোনার)। আমি কোনো সেটেলার নই, আমি চুয়াডাঙ্গারই সন্তান। মায়ের মৃত্যুর পর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেছি তারাদেবী ফাউন্ডেশন। চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকি সব সময়। হুইল চেয়ার, শিক্ষাবৃত্তি, ঈদ উপহার, শীতবস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজের মাধ্যমে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই আমি।’