ঢাকা ০১:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দাউদকান্দি উপজেলা নবাগত ইউএন ও এসিল্যান্ড ভূমি ও পৌর প্রশাসক মো: জিয়াউর রহমান কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় ভোলায় আজকের পত্রিকার পাঠক বন্ধুর উদ্যোগে মাদক বিরোধী র‌্যালি,সেমিনার ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নতুন ব্রিজ এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে পথচারী জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে আমরা আর কোনো অবিচার চাই না’ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে বদলি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ রিমান্ডে যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক ২ আইজিপি বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ফের উত্তাল আশুলিয়া, বন্ধ ৫২ কারখানা ট্রাইব্যুনালে প্রথমবার হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ

মাদ্রাসা থেকে নাহিদ-আসিফের মতো সূর্যসন্তান তৈরি করতে হবে: বাহাউদ্দীন

মাদ্রাসা থেকে নাহিদ-আসিফের মতো সূর্যসন্তান তৈরি করতে হবে: বাহাউদ্দীন
দেশের মাদ্রাসাগুলোতে গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষকদের অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছিনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন।

তিনি বলেন, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী কত হলো, কত আয় হলো- এটি দিয়ে সাফল্য নির্ধারণ হয় না। কতজন যোগ্য লোক তৈরি হলো, কতজন নাহিদ ও আসিফ তৈরি করতে পেরেছেন সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। মাদরাসা থেকে নাহিদ-আসিফের মতো সূর্যসন্তান তৈরি করতে হবে।

শনিবার রাজধানীর মহাখালীস্থ গাউসুল আজম কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদারের্ছীনের নির্বাহী কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদকসহ নানাবিধ অপরাধে সমাজ যে ছেয়ে গেছে, সেখান থেকে অপরাধমুক্ত সমাজ, শিক্ষা ব্যবস্থা ও মানুষ তৈরি করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারীদের রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অর্থনীতিবিদ নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতা কামনা এবং নৈরাজ্য ও অপতৎপরতা রোধে শিক্ষক-কর্মচারীদের করণীয় শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছিন।

সভায় জমিয়াত সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, আমরা একটা দুঃশাসন থেকে মুক্ত হয়ে সুশাসনের দিকে যাত্রা শুরু করেছি মাত্র। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র চলছে। এ সরকারের সামনে ১৬ বছরের জঞ্জাল সরানোর চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূস সাহেব বলেছেন, গোটা সমাজটা পচে গেছে, সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমি
সবাইকে সামনের দিকে তাকানোর আহ্বান জানাচ্ছি।

ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা দুনিয়াতে উদাহরণ হয়ে গেছে। তবে দুঃখজনক হলো আমাদের আলেমদের এখানে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল অনেক কম।

জমিয়াত সভাপতি বলেন, আমাদের কিছু লোকজন শুধু বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, চাকরির নিশ্চয়তা এগুলোর পেছনে ছুটোছুটি করছেন। জমিয়াতুল মোদাররেছিন দেশের আলেম-ওলামাগণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বেতন-ভাতার বার্গেনিং এজেন্ট হওয়ার জন্য না। এটা পীর-মাশায়েখদের সংগঠন। এদেশে যাতে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ হয়, দেশটা যাতে সঠিকভাবে ইসলামি নীতি অনুসরণ করে চলে- এসবের জন্য তারা কাজ করেছিলেন।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, ড. ইউনূস সাহেবও ছোটবেলায় মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন। উনার নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ, সেনাবাহিনীতে যারা আছে সবাই ইসলামপ্রিয়। লেবাসে আমরা যাতে বিভ্রান্ত না হই। এর আগে অনেকে বড় বড় লেবাসধারী ছিল, রামকৃষ্ণ মিশনে পড়াশোনা করেছেন বলে নওফেল গর্ব করে বলেছেন। তার পেছনে গিয়ে মাদরাসা বোর্ড, আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বোর্ডের সদস্য হওয়ার জন্য ফতোয়া দিয়েছেন অনেকে যে, ধর্ম যার যার উৎসব সবার, পূজার প্রসাদ খাওয়া জায়েজ ইত্যাদি।

তিনি বলেন, উৎসব সবার হতে যাবে কেন? যার যার ধর্মীয় উৎসব তারা তারা পালন করবেন। এ ধরণের ফতোয়া যারা দিয়েছেন তাদের পেছনে কোনো ঈমানদার থাকতে পারে না।

এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, এ সরকারকে (অন্তর্বর্তী সরকার) আমাদের সারাদেশে শর্তহীন সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে যেতে হবে। কারণ এই সরকারের কোন রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নেই। তাদের রাষ্ট্র গঠনে এক বছরও লাগতে পারে, এর বেশিও লাগতে পারে। রাষ্ট্রটার অর্থনৈতিক, শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে ভয়াবহ অবস্থা। এটা পরিচ্ছন্ন করতে সময় লাগবে।

ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, আমাদের কোন চাওয়া-পাওয়া, উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই। আমরা চাই সমাজ সুন্দর হোক, সমাজে যেন সম্মান নিয়ে চলতে পারি। ১৯৭১ সালে কোন দল কি করেছে সেটি নিয়ে এতোদিন দাঁড়ি-টুপি দেখলেই অসম্মানিত করা, সেকেন্ডারি নাগরিকের মতো চলা সেটি আর থাকবে না। আমরা এখন সবাই প্রথম শ্রেণির নাগরিক হিসেবে চলবো।

জমিয়াতুল মোদারের্ছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজীর পরিচালনায় এতে দোয়া পরিচালনা করেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান। এসময় বিভিন্ন মাদ্রাসার সাবেক ও বর্তমান অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

দাউদকান্দি উপজেলা নবাগত ইউএন ও এসিল্যান্ড ভূমি ও পৌর প্রশাসক মো: জিয়াউর রহমান কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময়

মাদ্রাসা থেকে নাহিদ-আসিফের মতো সূর্যসন্তান তৈরি করতে হবে: বাহাউদ্দীন

আপডেট সময় ০৭:১০:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

মাদ্রাসা থেকে নাহিদ-আসিফের মতো সূর্যসন্তান তৈরি করতে হবে: বাহাউদ্দীন
দেশের মাদ্রাসাগুলোতে গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন মাদ্রাসা শিক্ষকদের অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছিনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন।

তিনি বলেন, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী কত হলো, কত আয় হলো- এটি দিয়ে সাফল্য নির্ধারণ হয় না। কতজন যোগ্য লোক তৈরি হলো, কতজন নাহিদ ও আসিফ তৈরি করতে পেরেছেন সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। মাদরাসা থেকে নাহিদ-আসিফের মতো সূর্যসন্তান তৈরি করতে হবে।

শনিবার রাজধানীর মহাখালীস্থ গাউসুল আজম কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদারের্ছীনের নির্বাহী কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদকসহ নানাবিধ অপরাধে সমাজ যে ছেয়ে গেছে, সেখান থেকে অপরাধমুক্ত সমাজ, শিক্ষা ব্যবস্থা ও মানুষ তৈরি করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারীদের রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অর্থনীতিবিদ নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতা কামনা এবং নৈরাজ্য ও অপতৎপরতা রোধে শিক্ষক-কর্মচারীদের করণীয় শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছিন।

সভায় জমিয়াত সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, আমরা একটা দুঃশাসন থেকে মুক্ত হয়ে সুশাসনের দিকে যাত্রা শুরু করেছি মাত্র। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র চলছে। এ সরকারের সামনে ১৬ বছরের জঞ্জাল সরানোর চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূস সাহেব বলেছেন, গোটা সমাজটা পচে গেছে, সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমি
সবাইকে সামনের দিকে তাকানোর আহ্বান জানাচ্ছি।

ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা দুনিয়াতে উদাহরণ হয়ে গেছে। তবে দুঃখজনক হলো আমাদের আলেমদের এখানে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল অনেক কম।

জমিয়াত সভাপতি বলেন, আমাদের কিছু লোকজন শুধু বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, চাকরির নিশ্চয়তা এগুলোর পেছনে ছুটোছুটি করছেন। জমিয়াতুল মোদাররেছিন দেশের আলেম-ওলামাগণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বেতন-ভাতার বার্গেনিং এজেন্ট হওয়ার জন্য না। এটা পীর-মাশায়েখদের সংগঠন। এদেশে যাতে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ হয়, দেশটা যাতে সঠিকভাবে ইসলামি নীতি অনুসরণ করে চলে- এসবের জন্য তারা কাজ করেছিলেন।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, ড. ইউনূস সাহেবও ছোটবেলায় মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন। উনার নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ, সেনাবাহিনীতে যারা আছে সবাই ইসলামপ্রিয়। লেবাসে আমরা যাতে বিভ্রান্ত না হই। এর আগে অনেকে বড় বড় লেবাসধারী ছিল, রামকৃষ্ণ মিশনে পড়াশোনা করেছেন বলে নওফেল গর্ব করে বলেছেন। তার পেছনে গিয়ে মাদরাসা বোর্ড, আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বোর্ডের সদস্য হওয়ার জন্য ফতোয়া দিয়েছেন অনেকে যে, ধর্ম যার যার উৎসব সবার, পূজার প্রসাদ খাওয়া জায়েজ ইত্যাদি।

তিনি বলেন, উৎসব সবার হতে যাবে কেন? যার যার ধর্মীয় উৎসব তারা তারা পালন করবেন। এ ধরণের ফতোয়া যারা দিয়েছেন তাদের পেছনে কোনো ঈমানদার থাকতে পারে না।

এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, এ সরকারকে (অন্তর্বর্তী সরকার) আমাদের সারাদেশে শর্তহীন সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে যেতে হবে। কারণ এই সরকারের কোন রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নেই। তাদের রাষ্ট্র গঠনে এক বছরও লাগতে পারে, এর বেশিও লাগতে পারে। রাষ্ট্রটার অর্থনৈতিক, শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে ভয়াবহ অবস্থা। এটা পরিচ্ছন্ন করতে সময় লাগবে।

ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, আমাদের কোন চাওয়া-পাওয়া, উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই। আমরা চাই সমাজ সুন্দর হোক, সমাজে যেন সম্মান নিয়ে চলতে পারি। ১৯৭১ সালে কোন দল কি করেছে সেটি নিয়ে এতোদিন দাঁড়ি-টুপি দেখলেই অসম্মানিত করা, সেকেন্ডারি নাগরিকের মতো চলা সেটি আর থাকবে না। আমরা এখন সবাই প্রথম শ্রেণির নাগরিক হিসেবে চলবো।

জমিয়াতুল মোদারের্ছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজীর পরিচালনায় এতে দোয়া পরিচালনা করেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান। এসময় বিভিন্ন মাদ্রাসার সাবেক ও বর্তমান অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন।