ঢাকা ০১:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দাউদকান্দি উপজেলা নবাগত ইউএন ও এসিল্যান্ড ভূমি ও পৌর প্রশাসক মো: জিয়াউর রহমান কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় ভোলায় আজকের পত্রিকার পাঠক বন্ধুর উদ্যোগে মাদক বিরোধী র‌্যালি,সেমিনার ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নতুন ব্রিজ এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে পথচারী জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে আমরা আর কোনো অবিচার চাই না’ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে বদলি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ রিমান্ডে যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক ২ আইজিপি বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ফের উত্তাল আশুলিয়া, বন্ধ ৫২ কারখানা ট্রাইব্যুনালে প্রথমবার হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ

ড. ইউনূস প্রসঙ্গে ঢাবি শিক্ষক সমিতির রং বদল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলাকে কেন্দ্র করে মহল বিশেষের অশুভ তৎপরতার অভিযোগ তুলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সংগঠনটি সেসময় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে নানা নেতিবাচক কথা বলেছিল। তার বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত চেয়ে শেখ হাসিনার দেওয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৬০ জনের খোলা চিঠির প্রতিবাদে মানববন্ধনও করেছিল সংগঠনটি। তবে এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হওয়ার পর তাকে অভিনন্দন ও স্বাগত জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার (১২ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। এই সরকারে আমাদের একজন সম্মানিত সহকর্মী, অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম (আসিফ নজরুল) ও দুজন শিক্ষার্থী উপদেষ্টা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। বৈষম্যবিরোধী, সমতাভিত্তিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এ সরকারের পাশে থাকবে।

শিক্ষক সমিতিকে ড. ইউনূসের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে একটি মহল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চরিত্র হননের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এর একটি অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর একটি মানববন্ধনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া। এ ছবির মাধ্যমে শিক্ষক সমিতিকে ড. ইউনূসের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। মূলত সত্য এই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনটি ছিল বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ওপর বিদেশি হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে। ওই মানববন্ধনে একজন শিক্ষক যিনি শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য নন তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নোবেল পুরস্কার স্থগিতের দাবি করেছিলেন। এটি ছিল তার নিজস্ব বক্তব্য যা শিক্ষক সমিতির বক্তব্য নয়। যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত আছেন তারা সবাই জানেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা, প্রতিবাদ সভা কিংবা মানববন্ধনে দলমত নির্বিশেষে যে কোনো শিক্ষক স্বাধীনভাবে তার মতপ্রকাশ করতে পারেন। শুধু কার্যকরী পরিষদ ও সাধারণ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।

এতে আরও বলা হয়, একটি মহল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের পদত্যাগের পরে বিভিন্ন একাডেমিক পদে কর্তব্যরত বিভাগীয় চেয়ারপারসন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ ভোটে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সিনেট সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন ও শিক্ষক সমিতির সদস্যদের পদত্যাগের জন্য হুমকি প্রদান করছে। সুতরাং, গণপদত্যাগের মাধ্যমে এক ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির এই অপতৎপরতার ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সজাগ থাকার ও এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এ ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শিক্ষক শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর দাবি জানাচ্ছি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

দাউদকান্দি উপজেলা নবাগত ইউএন ও এসিল্যান্ড ভূমি ও পৌর প্রশাসক মো: জিয়াউর রহমান কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময়

ড. ইউনূস প্রসঙ্গে ঢাবি শিক্ষক সমিতির রং বদল

আপডেট সময় ০৪:৪৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলাকে কেন্দ্র করে মহল বিশেষের অশুভ তৎপরতার অভিযোগ তুলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সংগঠনটি সেসময় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে নানা নেতিবাচক কথা বলেছিল। তার বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত চেয়ে শেখ হাসিনার দেওয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৬০ জনের খোলা চিঠির প্রতিবাদে মানববন্ধনও করেছিল সংগঠনটি। তবে এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হওয়ার পর তাকে অভিনন্দন ও স্বাগত জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার (১২ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। এই সরকারে আমাদের একজন সম্মানিত সহকর্মী, অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম (আসিফ নজরুল) ও দুজন শিক্ষার্থী উপদেষ্টা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। বৈষম্যবিরোধী, সমতাভিত্তিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এ সরকারের পাশে থাকবে।

শিক্ষক সমিতিকে ড. ইউনূসের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে একটি মহল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চরিত্র হননের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এর একটি অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর একটি মানববন্ধনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া। এ ছবির মাধ্যমে শিক্ষক সমিতিকে ড. ইউনূসের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। মূলত সত্য এই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনটি ছিল বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ওপর বিদেশি হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে। ওই মানববন্ধনে একজন শিক্ষক যিনি শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য নন তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নোবেল পুরস্কার স্থগিতের দাবি করেছিলেন। এটি ছিল তার নিজস্ব বক্তব্য যা শিক্ষক সমিতির বক্তব্য নয়। যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত আছেন তারা সবাই জানেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা, প্রতিবাদ সভা কিংবা মানববন্ধনে দলমত নির্বিশেষে যে কোনো শিক্ষক স্বাধীনভাবে তার মতপ্রকাশ করতে পারেন। শুধু কার্যকরী পরিষদ ও সাধারণ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।

এতে আরও বলা হয়, একটি মহল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের পদত্যাগের পরে বিভিন্ন একাডেমিক পদে কর্তব্যরত বিভাগীয় চেয়ারপারসন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ ভোটে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সিনেট সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন ও শিক্ষক সমিতির সদস্যদের পদত্যাগের জন্য হুমকি প্রদান করছে। সুতরাং, গণপদত্যাগের মাধ্যমে এক ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির এই অপতৎপরতার ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সজাগ থাকার ও এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এ ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শিক্ষক শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর দাবি জানাচ্ছি।