ঢাকা ০৬:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মাদারীপুরে এসএ টিভির ১৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন গাজীপুরে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ উদ্ধার। গোলাপগঞ্জে পতিত টিলায়,আনারস চাষে সাফল্য যতোদিনে গনতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকার না পাই, ততোদিন বিএনপি মাঠে থাকবে – আব্দুল আউয়াল মিন্টু গুলিসহ আওয়ামীলীগ নেতার ছেলে ও সাংবাদিক আটক মির্জাপুরে নির্মাণ শ্রমিকদের দাবি দিবস উপলক্ষে র‍্যালি মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। ভোলায় পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমি জবরদখলের চেষ্টা যারা অশান্তি সৃষ্টি করবে তাদের শক্ত হাতে মোকাবেলা করবে বোরহানউদ্দিন- দৌলতখান বিএনপি: হাফিজ ইব্রাহিম বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান। প্রতারণার মামলায় সাকিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ইমামের মেয়ের প্রেমের টানে চীনা যুবক নাটোরে

চীনের সাং সাই এর বাসিন্দা চিকিৎসক লি সি জাং। বাংলাদেশি তরুণীর প্রেমের টানে এসেছেন নাটোরে। নিজ ধর্ম ত্যাগ করে স্থানীয় মসজিদের ইমামের মেয়েকে করেছেন বিয়ে। মোবাইল অ্যাপ (উই চ্যাট) এর মাধ্যমে নাটোরের মেয়ে ফাতেমার সঙ্গে প্রায় ৬ মাস আগে পরিচয় হয় চীনের বাসিন্দা লি সি জাং এর। এরপর শুরু হয় বন্ধুত্ব। তারপর তা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। শেষ পর্যন্ত প্রেমের টানে নাটোরে এসে প্রেমিকা ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেছেন লি সি জাং।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৭ লাখ টাকা দেন মোহর ধার্য করে মুসলিম রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে হয়। রোববার আদালতে বিয়ে রেজিস্ট্রারি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ফাতেমা নাটোর সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের আবু তাহেরের পঞ্চম কন্যা ও নাটোর নবাব সিরাজ -উদ-দ্দৌলা সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃত বিভাগের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী। ফাতেমার বাবা আবু তাহের স্থানীয় কাঠালবাড়িয়া মসজিদের ইমাম।

ফাতেমার পারিবারিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশি তরুণীর ভালোবাসা পেতে নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছেন চীনা যুবক লি সি জাং। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে চীন থেকে নাটোর সদর উপজেলার লক্ষিপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের ফাতেমাদের বাড়িতে আসেন লি সি জাং। এসে সবার সামনে বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করেন। পরে মুসলিম রীতি অনুসারে বিয়ে করেন ফাতেমাকে। নিজের নতুন নাম রাখেন আলী।

ফাতেমা বলেন, আমাকে ভালোবেসে লি সি জাং বাংলাদেশে এসেছে। সে আমার জন্য তার নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছে। সুখে-দুঃখে আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই। এসময় তিনি তার স্বামীর সঙ্গে তাদের (চীন) দেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।

নিজেকে চিকিৎসক দাবি করে লি সি জাং ওরফে আলী বলেন, এ বিয়েতে আমি খুব খুশি। আমি আমার ভালোবাসার মানুষের জন্য নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছি। আমি আশাবাদী আমার ভালোবাসার মানুষ সারাজীবন আমার পাশে থাকবে।

ফতেমা খাতুনের বাবা আবু তাহের জানান, তার মেয়ে বিদেশি পুরুষকে বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করে। তাই স্থানীয় ভাবে বিয়ের প্রস্তাব আসলেও সে রাজি হয়নি। নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করতে চেয়েছে তাই বৃহস্পতিবার ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বিয়ে পড়ানো হয়েছে। শুক্র ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকায় রোববার আদালতের মাধ্যমে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। রোববার সকালে আদালতে চীনা যুবক লি সি জাং এর ধর্ম পরিবর্তনের এফিডেভিট ও বিয়ে রেজিস্ট্রি করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আদালত চত্বরের কাজি ও জেলা কাজি সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ রিয়াজুল হক মমিন।

নাটোর সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান কালু বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে সম্পর্কের পর তাদের বিয়ে হয়েছে বলে জেনেছি। মেয়েটি আগে থেকেই বিভিন্ন দেশের ভাষা শিখত। বিদেশ থেকে ছেলে বা মেয়েরা এসে বাংলাদেশে বিয়ে করছে বিভিন্ন এলাকার এমন খবর মিডিয়ায় দেখলেও আমাদের এলাকায় এটাই প্রথম। তাদের দেখতে ফাতেমাদের বাড়িতে আসছেন এলাকাবাসী। এমন বিয়ে এলাকার মানুষ কখনো দেখনি বলে তাদের আগ্রহটা অনেক বেশি। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মাদারীপুরে এসএ টিভির ১৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

ইমামের মেয়ের প্রেমের টানে চীনা যুবক নাটোরে

আপডেট সময় ১১:৩৮:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪

চীনের সাং সাই এর বাসিন্দা চিকিৎসক লি সি জাং। বাংলাদেশি তরুণীর প্রেমের টানে এসেছেন নাটোরে। নিজ ধর্ম ত্যাগ করে স্থানীয় মসজিদের ইমামের মেয়েকে করেছেন বিয়ে। মোবাইল অ্যাপ (উই চ্যাট) এর মাধ্যমে নাটোরের মেয়ে ফাতেমার সঙ্গে প্রায় ৬ মাস আগে পরিচয় হয় চীনের বাসিন্দা লি সি জাং এর। এরপর শুরু হয় বন্ধুত্ব। তারপর তা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। শেষ পর্যন্ত প্রেমের টানে নাটোরে এসে প্রেমিকা ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেছেন লি সি জাং।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৭ লাখ টাকা দেন মোহর ধার্য করে মুসলিম রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে হয়। রোববার আদালতে বিয়ে রেজিস্ট্রারি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ফাতেমা নাটোর সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের আবু তাহেরের পঞ্চম কন্যা ও নাটোর নবাব সিরাজ -উদ-দ্দৌলা সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃত বিভাগের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী। ফাতেমার বাবা আবু তাহের স্থানীয় কাঠালবাড়িয়া মসজিদের ইমাম।

ফাতেমার পারিবারিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশি তরুণীর ভালোবাসা পেতে নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছেন চীনা যুবক লি সি জাং। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে চীন থেকে নাটোর সদর উপজেলার লক্ষিপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের ফাতেমাদের বাড়িতে আসেন লি সি জাং। এসে সবার সামনে বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করেন। পরে মুসলিম রীতি অনুসারে বিয়ে করেন ফাতেমাকে। নিজের নতুন নাম রাখেন আলী।

ফাতেমা বলেন, আমাকে ভালোবেসে লি সি জাং বাংলাদেশে এসেছে। সে আমার জন্য তার নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছে। সুখে-দুঃখে আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই। এসময় তিনি তার স্বামীর সঙ্গে তাদের (চীন) দেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।

নিজেকে চিকিৎসক দাবি করে লি সি জাং ওরফে আলী বলেন, এ বিয়েতে আমি খুব খুশি। আমি আমার ভালোবাসার মানুষের জন্য নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছি। আমি আশাবাদী আমার ভালোবাসার মানুষ সারাজীবন আমার পাশে থাকবে।

ফতেমা খাতুনের বাবা আবু তাহের জানান, তার মেয়ে বিদেশি পুরুষকে বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করে। তাই স্থানীয় ভাবে বিয়ের প্রস্তাব আসলেও সে রাজি হয়নি। নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করতে চেয়েছে তাই বৃহস্পতিবার ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বিয়ে পড়ানো হয়েছে। শুক্র ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকায় রোববার আদালতের মাধ্যমে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। রোববার সকালে আদালতে চীনা যুবক লি সি জাং এর ধর্ম পরিবর্তনের এফিডেভিট ও বিয়ে রেজিস্ট্রি করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আদালত চত্বরের কাজি ও জেলা কাজি সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ রিয়াজুল হক মমিন।

নাটোর সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান কালু বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে সম্পর্কের পর তাদের বিয়ে হয়েছে বলে জেনেছি। মেয়েটি আগে থেকেই বিভিন্ন দেশের ভাষা শিখত। বিদেশ থেকে ছেলে বা মেয়েরা এসে বাংলাদেশে বিয়ে করছে বিভিন্ন এলাকার এমন খবর মিডিয়ায় দেখলেও আমাদের এলাকায় এটাই প্রথম। তাদের দেখতে ফাতেমাদের বাড়িতে আসছেন এলাকাবাসী। এমন বিয়ে এলাকার মানুষ কখনো দেখনি বলে তাদের আগ্রহটা অনেক বেশি। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন এলাকাবাসী।