ঢাকা ১২:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন দেওয়ার অভিযোগে ইউপি সচিব গ্রেফতার

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে। তিনি দুই লাখ টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের জন্ম নিবন্ধন দিয়েছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে ইউপি সচিবকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জ-মুরাদনগর সড়কের নিমাইকান্দি এলাকা থেকে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। ইউপি সচিব ইসমাইল কুমিল্লার আদর্শ উপজেলার গুনানন্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা আঞ্চলিক অফিসে পাসপোর্ট অফিসে মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া পরিচয়ে জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে পাসপোর্ট করতে গিয়ে ইয়াছিন (১৯) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক কর্মকর্তাদের হাতে আটক হন। তারপর পাসপোট অফিসের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা যুবককে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন জানায়, সে মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে। মিয়ানমার থেকে গত ২০ দিন আগে বাংলাদেশে আসার পর কক্সবাজার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক-৯ এ থাকত। তার চাচাতো ভাই ওসমান কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন মদিনা ট্রাভেলসের হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ নামে ২ দালালের কাছে পাসপোর্ট করার কন্টাক্ট দেয়। পরে কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পশ্চিম ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া ঠিকানায় রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিনের সব কাগজপত্র তৈরি করে দেয়।

রংপুরে পুলিশ পরিচয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ, অতঃপর…
এই ঘটনায় সে সময় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করে গোয়েন্দা পুলিশ। রোহিঙ্গা যুবক কীভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেছে এ বিষয়টির তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে ইউপি সচিব ইসমাইল হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পায় গোয়েন্দারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা জন্ম নিবন্ধনের সঙ্গে ইউপি সচিব ইসমাইলের পাশাপাশি চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটনসহ আরও অনেকেই জড়িত রয়েছে। প্রতিটি নিবন্ধনে ২ লাখ টাকা করে নিত।

ইউপি চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটন তার জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি সচিবকে সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়েছি। তারপর তাকে কেন এসব করতে হবে। যারা টাকার বিনিময়ে এসব করেছে তারা শাস্তি পাবে।

কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রাজেশ বড়ুয়া জানান, রোহিঙ্গা যুবককে জন্মনিবন্ধন দেওয়ার মামলায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইউপি সচিব ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হবে।

মুরাদনগর ইউএনও সিফাত উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত সরকারি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সেবা চালু রাখার জন্য ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে,

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন দেওয়ার অভিযোগে ইউপি সচিব গ্রেফতার

আপডেট সময় ০৯:৪০:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে। তিনি দুই লাখ টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের জন্ম নিবন্ধন দিয়েছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে ইউপি সচিবকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জ-মুরাদনগর সড়কের নিমাইকান্দি এলাকা থেকে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। ইউপি সচিব ইসমাইল কুমিল্লার আদর্শ উপজেলার গুনানন্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা আঞ্চলিক অফিসে পাসপোর্ট অফিসে মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া পরিচয়ে জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে পাসপোর্ট করতে গিয়ে ইয়াছিন (১৯) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক কর্মকর্তাদের হাতে আটক হন। তারপর পাসপোট অফিসের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা যুবককে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন জানায়, সে মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে। মিয়ানমার থেকে গত ২০ দিন আগে বাংলাদেশে আসার পর কক্সবাজার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক-৯ এ থাকত। তার চাচাতো ভাই ওসমান কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন মদিনা ট্রাভেলসের হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ নামে ২ দালালের কাছে পাসপোর্ট করার কন্টাক্ট দেয়। পরে কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পশ্চিম ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া ঠিকানায় রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিনের সব কাগজপত্র তৈরি করে দেয়।

রংপুরে পুলিশ পরিচয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ, অতঃপর…
এই ঘটনায় সে সময় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করে গোয়েন্দা পুলিশ। রোহিঙ্গা যুবক কীভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেছে এ বিষয়টির তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে ইউপি সচিব ইসমাইল হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পায় গোয়েন্দারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা জন্ম নিবন্ধনের সঙ্গে ইউপি সচিব ইসমাইলের পাশাপাশি চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটনসহ আরও অনেকেই জড়িত রয়েছে। প্রতিটি নিবন্ধনে ২ লাখ টাকা করে নিত।

ইউপি চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটন তার জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি সচিবকে সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়েছি। তারপর তাকে কেন এসব করতে হবে। যারা টাকার বিনিময়ে এসব করেছে তারা শাস্তি পাবে।

কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রাজেশ বড়ুয়া জানান, রোহিঙ্গা যুবককে জন্মনিবন্ধন দেওয়ার মামলায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইউপি সচিব ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হবে।

মুরাদনগর ইউএনও সিফাত উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত সরকারি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সেবা চালু রাখার জন্য ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে,