ঢাকা ০৩:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে যা বললেন ফখরুল

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থার কথা তুলে ধরে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গতকাল বেগম খালেদা জিয়া খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ডাক্তাররা উপস্থিত ছিলেন। মনে হয়েছিল হয়তো আর সময় পাওয়া যাবে না। আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া। সেই বিপদজনক অবস্থা থেকে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধার আন্দোলনে নিহত, গুম, পঙ্গুত্বের শিকার নেতাকর্মীর পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

১/১১’র প্রথম ভিকটিম তারেক রহমান দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আটক করে বিভিন্ন মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়। এখনো তিনি নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন।

গুম, খুন ও নিপীড়ন নির্যাতনের স্বীকার হওয়া পরিবারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ অবস্থা সারাদেশের। শুধু বিএনপি নয়। পুরো বাংলাদশের মানুষের একই অবস্থা। পুরো দেশের মানুষ ভয়ে আতঙ্কে থাকে, কখন কাকে কীভাবে তুলে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই।

সরকারের নিপীড়ন নির্যাতনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এটা একটা ভয়াবহ ব্যাপার। একটা জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ। মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আপাতত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা গুলশানের ভাড়াবাসা ফিরোজায় চলছে।

বুধবার গভীর রাতে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজার গেটে এক ব্রিফিংয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, দুপুরের পর থেকে ম্যাডাম খালেদা জিয়া অসুস্থতাবোধ করছিলেন। এ কারণে ইফতারের পর অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ড, সঙ্গে ভার্চুয়ারি লন্ডন থেকে যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সিদ্ধান্ত নেন তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। এ জন্য আপাতত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাসাতে থাকবেন। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।

জাহিদ আরও জানান, সন্ধ্যার চেয়ে এখন অনেকটাই সুস্থতাবোধ করছেন খালেদা জিয়া। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

এর আগে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়ার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছিল বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। তার অসুস্থতার খবর পেয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা তাবিথ আউয়াল, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা ফিরোজায় ছুটে যান।

এর আগে গত ১৩ মার্চ খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ফুসফুসের পানি অপসারণের পর এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে পরদিন মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে বাসায় ফেরেন।

‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সেলের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুম্মনের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে যা বললেন ফখরুল

আপডেট সময় ০৩:৫১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থার কথা তুলে ধরে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গতকাল বেগম খালেদা জিয়া খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ডাক্তাররা উপস্থিত ছিলেন। মনে হয়েছিল হয়তো আর সময় পাওয়া যাবে না। আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া। সেই বিপদজনক অবস্থা থেকে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধার আন্দোলনে নিহত, গুম, পঙ্গুত্বের শিকার নেতাকর্মীর পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

১/১১’র প্রথম ভিকটিম তারেক রহমান দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আটক করে বিভিন্ন মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়। এখনো তিনি নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন।

গুম, খুন ও নিপীড়ন নির্যাতনের স্বীকার হওয়া পরিবারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ অবস্থা সারাদেশের। শুধু বিএনপি নয়। পুরো বাংলাদশের মানুষের একই অবস্থা। পুরো দেশের মানুষ ভয়ে আতঙ্কে থাকে, কখন কাকে কীভাবে তুলে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই।

সরকারের নিপীড়ন নির্যাতনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এটা একটা ভয়াবহ ব্যাপার। একটা জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ। মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আপাতত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা গুলশানের ভাড়াবাসা ফিরোজায় চলছে।

বুধবার গভীর রাতে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজার গেটে এক ব্রিফিংয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, দুপুরের পর থেকে ম্যাডাম খালেদা জিয়া অসুস্থতাবোধ করছিলেন। এ কারণে ইফতারের পর অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ড, সঙ্গে ভার্চুয়ারি লন্ডন থেকে যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সিদ্ধান্ত নেন তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। এ জন্য আপাতত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাসাতে থাকবেন। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।

জাহিদ আরও জানান, সন্ধ্যার চেয়ে এখন অনেকটাই সুস্থতাবোধ করছেন খালেদা জিয়া। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

এর আগে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়ার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছিল বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। তার অসুস্থতার খবর পেয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা তাবিথ আউয়াল, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা ফিরোজায় ছুটে যান।

এর আগে গত ১৩ মার্চ খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ফুসফুসের পানি অপসারণের পর এক্সরে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে পরদিন মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে বাসায় ফেরেন।

‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সেলের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুম্মনের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।