ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল পটুয়াখালীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত শহীদ জিয়া স্মৃতি পদক পেলেন জাতীয়তাবাদী বিএনপির রাজশাহী জেলার সদস্য সচিব গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন জরুরি : যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না তাঁতীলীগের সভাপতি ইকবালের যত কান্ড, জনমনে প্রশ্ন কে এই ইকবাল? সিএমপির পাহাড়তলী থানার মাদক বিরোধী অভিযানে ভুয়া সাংবাদিক ফারুক মাদকসহ গ্রেফতার অন্তর্বতী সরকারের ১শ দিন পার হলেও সচিবালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরের এখনও আওয়ামী লীগের দোসরা বহাল পূর্বাচলে দুর্নীতির রাজত্ব গড়েছেন নায়েব আলী শরীফ ডঃ মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজ নবীনবরণ উৎসব ২০২৪ পালিত। মুগদায় ১০ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ছে, বিদেশ যেতে পারবেন না

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে। এ সংক্রান্ত আবেদনে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। মতামত দিয়ে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হচ্ছে।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক রাজধানীর সচিবালয়ে বুধবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, আগের দুটি শর্তেই দণ্ডের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানোর আবেদনে ইতিবাচক মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। তবে তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।

এর আগে সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী জানান, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।

তিনি বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না। তাকে বিদেশ থেকে ডাক্তার এনে চিকিৎসা করার অনুমতিও দিয়েছিলাম। ডাক্তার তাকে চিকিৎসাও করেছিলেন, ডাক্তার তাকে সুস্থও করেছেন।

কেন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না, সেই প্রশ্নে পুরোনো ব্যাখ্যা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, একটা জিনিস আমি বুঝতে পারছি না। বহুবার আমি আইনের ব্যাখ্যা দিয়েছি। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার বাইরে গিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। তারপর প্রতিবারই তারা প্রথম যে চিঠি লিখেছিল সেই আকারেই আবেদন করছে।

সরকারপ্রধান চাইলে খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, সরকারপ্রধান মানে হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি যেহেতু এটা নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন, এখন এটা পরিবর্তন করার আইনি কোনো বিধান নেই।

তিনি আরও বলেন, সরকার প্রধানকে আইনের ভেতরে থেকে মানবিক বিবেচনা করতে হবে। আইনের বাইরে গিয়ে তিনি মানবিক কারণ দেখাতে পারবেন না। প্রথম বার থেকেই মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে জামিন (নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি) দেওয়া হচ্ছে। এখন সেই মেয়াদ বারবার রিনিউ হচ্ছে, সেটা কিন্তু মানবিক কারণেই হচ্ছে।

গত ৬ মার্চ পরিবারের পক্ষে খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম সাত্তার আবেদনের চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, আবেদনপত্রে ম্যাডামের স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। ম্যাডামের ছোটভাই (শামীম ইস্কাদার) অসুস্থ থাকায় আমি চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিয়েছি। আবেদনপত্রে শামীম ইস্কাদার বলেন, বেগম জিয়ার জীবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষায় দরকার দেশের বাইরে চিকিৎসা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেন আদালত। সেই থেকে প্রায় দুই বছর জেলে ছিলেন তিনি। পরে মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে দুটি শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

প্রথমটি হলো, তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। দ্বিতীয় শর্তটি হলো, তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। তখন করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস অন্তর অন্তর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।

সর্বশেষ গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৪ মার্চ। এবার নবম বারের মতো মুক্তির মেয়াদ বাড়ছে খালেদা জিয়ার।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ছে, বিদেশ যেতে পারবেন না

আপডেট সময় ০১:৩৫:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে। এ সংক্রান্ত আবেদনে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। মতামত দিয়ে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হচ্ছে।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক রাজধানীর সচিবালয়ে বুধবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি বলেন, আগের দুটি শর্তেই দণ্ডের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানোর আবেদনে ইতিবাচক মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। তবে তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।

এর আগে সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী জানান, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।

তিনি বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না। তাকে বিদেশ থেকে ডাক্তার এনে চিকিৎসা করার অনুমতিও দিয়েছিলাম। ডাক্তার তাকে চিকিৎসাও করেছিলেন, ডাক্তার তাকে সুস্থও করেছেন।

কেন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না, সেই প্রশ্নে পুরোনো ব্যাখ্যা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, একটা জিনিস আমি বুঝতে পারছি না। বহুবার আমি আইনের ব্যাখ্যা দিয়েছি। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার বাইরে গিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। তারপর প্রতিবারই তারা প্রথম যে চিঠি লিখেছিল সেই আকারেই আবেদন করছে।

সরকারপ্রধান চাইলে খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, সরকারপ্রধান মানে হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি যেহেতু এটা নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন, এখন এটা পরিবর্তন করার আইনি কোনো বিধান নেই।

তিনি আরও বলেন, সরকার প্রধানকে আইনের ভেতরে থেকে মানবিক বিবেচনা করতে হবে। আইনের বাইরে গিয়ে তিনি মানবিক কারণ দেখাতে পারবেন না। প্রথম বার থেকেই মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে জামিন (নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি) দেওয়া হচ্ছে। এখন সেই মেয়াদ বারবার রিনিউ হচ্ছে, সেটা কিন্তু মানবিক কারণেই হচ্ছে।

গত ৬ মার্চ পরিবারের পক্ষে খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম সাত্তার আবেদনের চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, আবেদনপত্রে ম্যাডামের স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। ম্যাডামের ছোটভাই (শামীম ইস্কাদার) অসুস্থ থাকায় আমি চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিয়েছি। আবেদনপত্রে শামীম ইস্কাদার বলেন, বেগম জিয়ার জীবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষায় দরকার দেশের বাইরে চিকিৎসা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেন আদালত। সেই থেকে প্রায় দুই বছর জেলে ছিলেন তিনি। পরে মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে দুটি শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

প্রথমটি হলো, তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। দ্বিতীয় শর্তটি হলো, তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। তখন করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস অন্তর অন্তর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।

সর্বশেষ গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৪ মার্চ। এবার নবম বারের মতো মুক্তির মেয়াদ বাড়ছে খালেদা জিয়ার।