চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে নৌকার প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে । গতকাল সকাল ১১ টায় চুয়াডাঙ্গার প্রিন্ট , ইলেকট্রনিক্স ও সোস্যাল মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের নৌকার মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ারদার ছেলুন এ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রথমেই আমি আপনাদেরকে এই সংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

সেই সাথে ৭৯, চুয়াডাঙ্গা-০১ আসনে জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মহান বিজয়েরমাসের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনারা জানেন গত ২৩ ডিসেম্বর তারিখে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ভান্ডাদহ গ্রামে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে এবং বিষয়টি আমাদের চুয়াডাঙ্গার অঞ্চল থেকে প্রকাশিত কয়েকটি পত্রিকায় নিউজ আকারে এসেছে।

এর মধ্যে বিশেষ করে একটি দৈনিক স্থানীয় পত্রিকা একটি নিউজ হেড লাইন করেছে এবং কিছু বানোয়াট, উদ্দেশ্য মূলক ও পক্ষপাত মূলক সংবাদ উপস্থাপন করেছে যাতে করে আমাদের ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে এবং এটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী, কর্মী ও সমর্থক গণের সম্মানহানী হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতিয়মান হয়েছে।

যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকৃত ঘটনা আপনাদের মাধ্যমে জনগণ ও সম্মানীত ভোটার গণের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করছি। প্রকৃত ঘটনা এই যে, কয়েকদিন যাবৎ চুয়াডাঙ্গা সদর থানার শংকরচন্দ্র ও পদ্মবিলা ইউনিয়ন এলাকায় পাঁচ মাইল নামক স্থানের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী উক্ত এলাকায় নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরাসরি নির্বাচনী আচরন বিধি ভঙ্গ করে অপপ্রচার, কুৎসা রটনা ও নৌকার প্রার্থীর নামে ব্যক্তিগতভাবে গালাগালী করে উত্তেজনা ছড়াচ্ছিলেন এবং সদর থানার সরোজগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ হারুন-অর-রশিদ নামক একজন এসআই তার সাথে যোগ দিয়ে এবং স্থানীয় জামাত-বিএনপি’র কিছু লোকজনের সাথে যুক্ত হয়ে নির্বাচনকে প্রশ্ন বৃদ্ধ ভণ্ডুল করার একটি গোপন নকশা নিয়ে কাজ করছেন বলে আমাদের কাছে খবর আসছিলো।

ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পাঁচ মাইল বাজারে স্থানীয় যুবলীগের একটি মিছিল সুবদিয়া গ্রামের মৃত মুনছুর আলী বিশ্বাস এর পুত্র মো: আবু তাহের বিশ্বাস এর নেতৃত্বে হামলা চালানো হয় এবং নৌকার প্রার্থীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালী ও উত্তেজনা ছড়ানো হয়। ঐ দিন রাত ৮টার দিকে পাঁচ মাইল সংলগ্ন ভান্ডারদহ গ্রামে নৌকার পক্ষে একটি মিছিল বের হয় এবং মিছিলটি যখন ভান্ডারদহ মোড়ের দিকে যাচ্ছিল তখন মিছিলের পিছনের অংশে ঈগল মার্কা স্বতন্ত্র প্রার্থী তার ব্যক্তিগত বডিগার্ড ও কয়েকজন কর্মী সমর্থক সহ গাড়ী নিয়ে উপস্থিত হন। উক্ত সমর্থকের উপস্থিতিতে তার সমর্থক উল্লেখিত আবু তাহের বিশ্বাস একটি হ্যান্ড মাইক দিয়ে মিছিলের পিছন থেকে গালাগালী করতে থাকে এবং তাদের জন্য রাস্তা ছেড়ে দিতে বলে।

আমাদের মিছিলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে কর্মিদেরকে রাস্তার একপাশে সরিয়ে নেন। এবং উক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য রাস্তা পরিস্কার করে দেওয়ার ফলে উক্ত প্রার্থীর গাড়ীবহর নির্বিঘ্নে চলে যায়। গাড়ি বহরটি কিছুদুর গিয়ে ভান্ডারদহ ত্রি-মোহনী মোড়ে পৌঁছায় যেখানে আগে থেকেই তাদের একটি অফিস ছিলো।

কিন্তু উক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সমর্থকগণ তাদের অফিসে না বসে ত্রি-মোহনী মোড়ের রাস্তার উপর দাড়ায় এবং প্রার্থী মাইকে বক্তৃিতা দিতে শুরু করেন ফলে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এবং আমাদের মিছিলের সামনে এগুনোর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। তারপরও আমাদের মিছিলটি রাস্তার চিপা অংশ দিয়ে উক্ত স্থান অতিক্রম করতে শুরু করলে অতর্কিত ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর বডিগার্ডবৃন্দ তাদের হাতে থাকা বিশেষ লাঠি দ্বারা এবং তাদের কর্মিরা উল্লেখিত আবু তাহের এর নেতৃত্বে হামলা করে।

কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সেই সময় অতর্কিত সেখানে সরোজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে এসআই হারুন-অর-রশিদের নেতৃত্বে একদলপুলিশ সদস্য উপস্থিত হন। এবং তখন উক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী অত্যন্ত অকথ্য ভাষায় উক্ত পুলিশ সদস্যগণকে আমাদের কর্মিদেরকে আক্রমন করায় নির্দেশ দেয়। আশ্চর্য বিষয় হলো পুলিশ বিনা বিচার বিবেচনায় ঐ প্রার্থীর নির্দেশ মেনে আমাদের মিছিলে হামলা চালায় এতে অনেকে আহত হয় এবং মিছিল ছত্র ভংগ হয়ে যায়।

এমতাবস্থায় মিছিল থেকে কেউ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিক ও শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিলুয়ার হোসেনকে মোবাইলে ঘটনাটি অবহিত করিলে তারা পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে এবং বিষয়টি দায়িত্বশীলতার সাথে সমাধান করার অভিপ্রায়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ইতি মধ্যে থানা থেকে ওসি, সম্মানীত এসপি সাহেব ও মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

পরবর্তিতে দুঃখজনক ভাবে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিকসহ পাঁচ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে একজনকে বাদী সাজিয়ে মামলা করা হয়। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা শাখা ও ৭৯, চুয়াডাঙ্গা-০১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তার নির্বাচনী এজেন্টের পক্ষ থেকে এই ঘঠনার তিব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে উক্ত মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিক সহ সকল নেতা কর্মির নিঃশর্তে মুক্তি দাবী করছি। সরোজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই হারুন-অর-রশিদ কে অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মূল হোতা আবু তাহের বিশ্বাসকে অবিলম্।